• শিক্ষা

রাণীনগরে শিক্ষার্থীদের সাইকেল গ্যারেজ ভেঙ্গে দোকান ঘর নির্মাণ, ক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থী-স্থানীয়রা

  • শিক্ষা

ছবিঃ সিএনআই

নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর রাণীনগরের পারইল উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের গ্যারেজ ভেঙ্গে দোকান ঘর নির্মাণের বিষয় নিয়ে চলছে নানা নাটকীয়তা। ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের মধ্যে দফায় দফায় চলছে অভিযোগ দাখিল ও সংবাদ সম্মেলন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় পারইল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রবেশের মুখে রয়েছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য টিনের ছাউনির বাহন রাখার স্থান। বহুবছর ধরে ওই স্থানটি গ্যারেজ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এলাকার অনেক দূরবর্তি শিক্ষার্থীরা তাদের চলাচলের বাহন হিসেবে বাইসাইকেল নিয়ে বিদ্যালয়ে এসে ওই গ্যারেজে রেখে পাঠগ্রহণ শেষে আবার বাড়ি ফিরে। সম্প্রতি শিক্ষার্থী ও  স্থানীয়দের বাঁধা উপেক্ষা করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের যোগসাজসে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যরা গ্যারেজের শিক্ষার্থীদের সাইকেল রাখার ছোট্ট স্থানটি ভেঙ্গে বহিরাগতদের ভাড়া প্রদানের লক্ষ্যে দোকান ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করে। শুরু হয় একাধিক পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন জানান পর নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়। পরবর্তিতে জানতে পেরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বিদ্যালয়ে গিয়ে অবৈধ ভাবে গ্যারেজ বন্ধ করে দোকান ঘর নির্মাণ করার বিষয়ে কথা বলতে গেলে বিক্ষুদ্ধ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা নির্মাণকৃত ঘরের কিছু অংশ ভেঙ্গে ফেলে। এরই জের ধরে প্রধান শিক্ষককে বিভিন্ন সময়ে হুমকি-ধামকী প্রদান এবং ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে দোকান ঘর ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে এমন অভিযোগ এনে গত ১২ সেপ্টেম্বর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক প্রশাসনিক কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দাখিল করেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে এই বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী আসওয়াদ মাহমুদ শুভ, আদনান সাকিলসহ অনেকেই জানায় স্কুলের শিক্ষার্থীদের সাইকেল রাখার গ্যারেজ ভেঙ্গে অবৈধ ভাবে দোকান ঘর নির্মাণ করায় তারা সাইকেল নিয়ে স্কুলে আসতে পারছে না। প্রতিদিন ভ্যান ভাড়া করে তাদের স্কুলে আসতে হচ্ছে। এমন হটকারী সিদ্ধান্তে চরম বিড়ম্বনায় পড়েছে স্কুলে আসা দূরবর্তি শিক্ষার্থীরা বিশেষ করে যারা বাইসাইকেল নিয়ে স্কুলে যাতায়াত করে। অথচ গ্যারেজে শিক্ষকদের মোটরসাইকেল রাখার স্থান অক্ষত রাখা হয়েছে। বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক স্কুল বান্ধব নয় বলে তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগের কথা জানায় শিক্ষার্থীরা।

স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিভাবক বিপ্লব হোসেনসহ অনেকেই জানান প্রায় বিশ বছর আগে রাস্তা সংলগ্ন স্থানের স্কুলের জায়গায় দোকান ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। হঠাৎ করে স্কুলে শিক্ষার্থীদের সাইকেল রাখার গ্যারেজের স্থানে ছোট্ট একটি দোকান ঘর নির্মাণে বাঁধা দিলেও কর্তৃপক্ষরা তা উপেক্ষা করে জোরপূর্বক নির্মাণ কাজ শুরু করে। এতে কওে দূরবর্তি শিক্ষার্থীরা সাইকেল এনে স্কুলের কোথায় রাখবে? অধিকাংশ শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা বাঁধা দিয়েও কোন লাভ হয়নি। ফোন রিসিভ না করা, স্কুলে সেবা নিতে আসা মানুষদের সঙ্গে ভালো আচরণ না করাসহ প্রধান শিক্ষকের নানা সমস্যা রয়েছে। বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক স্কুল পরিচালনা করার ক্ষেত্রে একজন অযোগ্য শিক্ষক বলে মন্তব্য করেন এই অভিভাবক।  

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মাস্টার মো: জাহিদুর ইসলাম জানান ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের সমস্যার শেষ নেই। এমনতেই স্কুলের ভিতরে শিক্ষার্থীদের সমাবেশ করার জায়গা নেই এর উপর আবার শিক্ষার্থীদের সাইকেল রাখার জায়গায় অবৈধ ভাবে দোকান ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে যদি এমন জঘন্য কাজের প্রতিবাদ করা অন্যায় হয় তাহলে একজন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়দের কাছে গোপনে বিভিন্ন মাদক জাতীয় পণ্য বিক্রি করে আসছে তাহলে সেই কাজটি কতটুকু বৈধ। তার নেতৃত্বে নয় তার উপস্থিতি টের পেয়ে স্কুলের বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দারা নির্মাণকৃত দোকান ঘরের কিছু অংশ ভেঙ্গে ফেলেছে। এই বিষয়কে কেন্দ্র করে সরেজমিনে পরিদর্শন না করে মিথ্যে অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে জড়িয়ে যে মিথ্যে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে তিনি তার তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেন।  

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক গোপল চন্দ্র সাহা জানান তিনি গত বছরের অক্টোবর মাসের ৩১তারিখে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি স্কুলের স্বার্থে গ্যারেজের কিছু অংশ ভেঙ্গে দোকান ঘর নির্মাণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে সে অনুপাতে কাজ চলছিলো। বিষয়টি ইউএনও স্যার জানার পর নিষেধ করায় নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখা হয়। কিন্তু চেয়ারম্যান জাহিদুর তার দলবল নিয়ে এসে স্কুলে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করে দোকান ঘরের কিছু অংশ ভেঙ্গে দেয়। এছাড়া চেয়ারম্যান একাধিকবার তাকে বিভিন্ন হুমকি-ধামকী প্রদান করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য জাতীয় পণ্য বিক্রি ও ক্যাসিনো খেলার অভিযোগসহ নানা অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন।

স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো: শহিদুল ইসলাম জানান স্কুলের স্বার্থে কমিটির সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে দোকান ঘর নির্মাণ শুরু করা হলে ইউএনও স্যার নিষেধ করার পর তা বন্ধ রাখা হয়েছে। পরবর্তিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন। দোকান ঘর ভাঙচুরের সময় তিনি উপস্থিত ছিলেন না।  

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: রাকিবুল হাসান জানান বিষয়টি জানার পর তিনি দোকান ঘর নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। দোকান ঘর নির্মাণ না করে সেখানে শিক্ষার্থীদের বাহন রাখার জায়গায় পুনরায় নির্মাণ করা এবং তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা জানান এই কর্মকর্তা।

মন্তব্য (০)





image

ঢাবির ক্যান্টিন-দোকানকে হল ভিপি-জিএসের জরিমানা, যা বললেন ...

নিউজ ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জহুরুল হক হলের টিনশেডের ক্যান্ট...

image

‎রাকসু নির্বাচন: নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রার্থীদের প্রচার...

নিউজ ডেস্কঃ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ...

image

‎বিনামূল্যে প্রাথমিকের পাঠ্যবই, ছাপার দায়িত্বে থাকছে না এ...

নিউজ ডেস্কঃ জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিট...

image

রাকসু হল সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত...

নিউজ ডেস্কঃ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হল সংসদ নির্বাচনে মোট ৪২ ...

image

নওগাঁয় নারী শিক্ষার্থীদের সাথে অধ্যক্ষের আপত্তিকর কথোপকথন...

নওগাঁ প্রতিনিধিঃ নওগাঁ সরকারি কলেজে অনিয়ম, দূর্নীতি, নারী শি...

  • company_logo