• আন্তর্জাতিক

ইউক্রেন যুদ্ধ নিরসনে ট্রাম্পের ২৮ দফা প্রস্তাবে যা আছে

  • আন্তর্জাতিক

ছবিঃ সংগৃহীত

নিউজ ডেস্ক : ইউক্রেন যুদ্ধ নিরসনে যুক্তরাষ্ট্রের ২৮ দফা প্রস্তাব নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। প্রশ্ন উঠেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই প্রস্তাব ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে পারবে কিনা। চলুন জেনে নেই এই ২৮ দফায় কী কী আছে:  

১. ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করা হবে।

২. রাশিয়া, ইউক্রেন ও ইউরোপের মধ্যে একটি বিস্তৃত অনাক্রমণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। গত ৩০ বছরের সব অস্পষ্টতা নিষ্পত্তি বলে গণ্য হবে।

৩. রাশিয়া প্রতিবেশী দেশে হামলা চালাবে না এবং ন্যাটো আর বিস্তৃতি ঘটাবে না।

৪. যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় রাশিয়া–ন্যাটো সংলাপ হবে, যেখানে সব নিরাপত্তা ইস্যু সমাধান, উত্তেজনা হ্রাস এবং ভবিষ্যৎ সহযোগিতা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথ তৈরি করা হবে।

৫. ইউক্রেন নিরাপত্তা নিশ্চয়তা পাবে।

৬. ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যসংখ্যা ৬ লাখে সীমিত থাকবে।

৭. ইউক্রেন তার সংবিধানে ন্যাটোতে যোগ না দেওয়ার অঙ্গীকার সংযোজন করবে এবং ন্যাটো তার নীতিমালায় ন্যাটোতে ইউক্রেনের সদস্যপদ না দেওয়ার বিধান যোগ করবে।

৮. ন্যাটো ইউক্রেনে সেনা মোতায়েন করবে না।

৯. ইউরোপীয় যোদ্ধা বিমান (ফাইটার জেট) পোল্যান্ডে মোতায়েন করা হবে।

১০. যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা নিশ্চয়তায় থাকবে কয়েকটি শর্ত:

• যুক্তরাষ্ট্র এ নিশ্চয়তার জন্য প্রতিদান পাবে।

• ইউক্রেন যদি রাশিয়ায় হামলা করে—নিশ্চয়তা বাতিল হবে।

• রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা করলে সমন্বিত সামরিক প্রতিক্রিয়া ও সব নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল হবে; নতুন অঞ্চল স্বীকৃতি ও সব সুবিধা বাতিল হবে।

• ইউক্রেন যদি অকারণে মস্কো বা সেন্ট পিটার্সবার্গে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে— নিশ্চয়তা বাতিল হবে।

১১. ইউক্রেন পুনর্গঠনে শক্তিশালী বৈশ্বিক প্যাকেজ দেওয়া হবে। 

১২. ইউক্রেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদ পাওয়ার যোগ্য হবে এবং বিবেচনার সময়ে স্বল্পমেয়াদি বিশেষ সুবিধা পাবে। ইউক্রেনের গ্যাস পাইপলাইন, সংরক্ষণাগারসহ জ্বালানি অবকাঠামো পুনর্নির্মাণ ও আধুনিকীকরণে যুক্তরাষ্ট্র–ইউক্রেন যৌথ প্রচেষ্টা চালু হবে।  এর মাধ্যমে যুদ্ধক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পুনর্বাসন, শহর ও আবাসিক এলাকা আধুনিকীকরণ করা হবে। অবকাঠামো উন্নয়ন ও খনিজ সম্পদও আহরণ করা হবে। এসব উদ্যোগ ত্বরান্বিত করতে বিশ্বব্যাংকের বিশেষ অর্থায়ন প্যাকেজ।

১৩. রাশিয়াকে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে পুনঃএকীভূত করা হবে— নিষেধাজ্ঞা ধাপে ধাপে উঠবে; জ্বালানি, প্রাকৃতিক সম্পদ, অবকাঠামো, এআই, ডেটা সেন্টার, আর্কটিকের রেয়ার আর্থ মেটালসহ বিভিন্ন খাতে যুক্তরাষ্ট্র–রাশিয়া দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতা চুক্তি হবে; রাশিয়াকে পুনরায় জি–৮ এ আমন্ত্রণ করা হবে।

১৪. জব্দ রুশ তহবিল ব্যবহারের নিয়ম— ১০০ বিলিয়ন ডলার রুশ সম্পদ ইউক্রেন পুনর্গঠনে বিনিয়োগ হবে, যুক্তরাষ্ট্র এই বিনিয়োগের ৫০% মুনাফা পাবে, ইউরোপও অতিরিক্ত ১০০ বিলিয়ন ডলার দেবে। অবশিষ্ট রুশ তহবিল রাশিয়া–যুক্তরাষ্ট্র যৌথ বিনিয়োগ প্রকল্পে যাবে, যার লক্ষ্য হবে দুই পক্ষের সম্পর্ক মজবুত করা এবং সংঘাতে না ফেরার প্রণোদনা তৈরি।

১৫. নিরাপত্তা বিষয়ক সব শর্ত বাস্তবায়নে যুক্তরাষ্ট্র–রাশিয়া যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন হবে।

১৬. রাশিয়া ইউরোপ ও ইউক্রেনের বিরুদ্ধে অনাক্রমণ নীতি আইনত প্রণয়ন করবে।

১৭. যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ এবং নন-প্রলিফারেশন চুক্তি START I-এর মেয়াদ বৃদ্ধিতে সম্মত হবে।

১৮. ইউক্রেন এনপিটি অনুযায়ী অ-পরমাণু রাষ্ট্র হিসেবে থাকবে।

১৯. জাপোরিঝঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র আইএইএর তত্ত্বাবধানে পুনরায় চালু হবে, উৎপাদিত বিদ্যুৎ ৫০:৫০ অনুপাতে রাশিয়া ও ইউক্রেন পাবে।

২০. দুই দেশ স্কুল ও সমাজে সহনশীলতা ও বর্ণবৈষম্যবিরোধী শিক্ষা কর্মসূচি চালু করবে— ইউক্রেন ধর্মীয় সহনশীলতা ও ভাষাগত সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় ইইউ নিয়ম গ্রহণ করবে; দুই দেশ বৈষম্যমূলক নীতি প্রত্যাহার করবে; গণমাধ্যম ও শিক্ষা ক্ষেত্রে রুশ–ইউক্রেনীয় অধিকার নিশ্চিত হবে; সব নাৎসি মতাদর্শ ও কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ হবে।

২১. ভূখণ্ডসংক্রান্ত প্রস্তাব— ক্রিমিয়া, লুহানস্ক ও দোনেৎস্ককে যুক্তরাষ্ট্রসহ সবাই রাশিয়ার হিসেবে স্বীকৃতি দেবে।

২২. সম্মত সীমানা বলপ্রয়োগে পরিবর্তন করা যাবে না; এ শর্ত ভাঙলে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা প্রযোজ্য হবে না।

২৩. ডিনিপ্রো নদী ব্যবহার ও কৃষিপণ্য পরিবহনে রাশিয়া ইউক্রেনকে বাধা দেবে না; কৃষ্ণসাগরপথে শস্য পরিবহন অবাধ থাকবে।

২৪. মানবিক কমিটি গঠন— সব যুদ্ধবন্দী ও মৃতদেহ ‘সকলের বিনিময়ে সকল’ ভিত্তিতে বিনিময়।

• সব বেসামরিক বন্দি ও আটক শিশুদের ফেরত।

• পরিবার পুনর্মিলন কর্মসূচি।

• যুদ্ধক্ষতিগ্রস্তদের দুঃখ লাঘবের ব্যবস্থা।

২৫. ইউক্রেনে ১০০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

২৬. যুদ্ধে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের জন্য সাধারণ ক্ষমা; কেউ কারও বিরুদ্ধে আর কোনো দাবি উত্থাপন করবে না।

২৭. এই চুক্তি আইনি বাধ্যবাধকতা সম্পন্ন হবে এবং ‘শান্তি পরিষদ’—যার প্রধান হবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প—এর মাধ্যমে বাস্তবায়ন তদারকি করা হবে। লঙ্ঘনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ হবে।

২৮. সব পক্ষ সম্মত হওয়ার পর, উভয় পক্ষ নির্ধারিত অবস্থানে সরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। 

 

মন্তব্য (০)





image

ট্রাম্প-মামদানি বৈঠক আজ, আলোচনা যা নিয়ে

নিউজ ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে হোয়াইট হ...

image

‎পাকিস্তানে কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণ, নিহত ১৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানের ফয়সালাবাদের একটি গ্লু নির্মাণ...

image

কেন সৌদি আরবকে ‘নন-ন্যাটো মেজর অ্যালাই’ ঘোষণা করল যুক্তরা...

নিউজ ডেস্ক : সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের যুক্তরাষ্ট্র সফরের ...

image

নিউইয়র্কে এলেই গ্রেফতার হবেন নেতানিয়াহু

নিউজ ডেস্ক : ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নিউইয়র্ক সফরে এ...

image

ঢাকায় আসছেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক : রাষ্ট্রীয় সফরে তিন দিনের জন্য বাংলাদেশে আসছেন ভুটানের প্রধা...

  • company_logo