• লিড নিউজ
  • শিক্ষা

দেশের উন্নতির জন্য শিক্ষা-স্বাস্থ্য কখনো প্রাইভেট বিষয় হতে পারে না: প্রাথমিক শিক্ষা উপদেষ্টা

  • Lead News
  • শিক্ষা

ফাইল ছবি

নিউজ ডেস্কঃ একটা দেশের জনগণের উন্নতির জন্য শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য খাত কখনো প্রাইভেট বিষয় হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার।

‎শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে 'সাক্ষরতায় বাংলাদেশের অর্জন এবং আগামীর পরিকল্পনা' শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। সেমিনারের আয়োজক নিমো লার্নিং।

‎মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনিস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. সিদ্দিকুর রহমান। মূল প্রবন্ধে তিনি অভিযোগ করে বলেন, নিম্নমানের প্রাথমিক শিক্ষা পদ্ধতি, কিছু এনজিওর প্রশ্নবিদ্ধ কার্যক্রম, গণসচেতনতার অভাব এবং দুর্বল সাক্ষরতা কার্যক্রমের কারণে নব্য সাক্ষরকারী অনেকেই আবার নিরক্ষতায় ফিরে যাচ্ছেন। তাই সাক্ষরতাকে সফল করতে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রমকে ঢেলে সাজাতে হবে এবং শিক্ষক ও শিক্ষা কার্যক্রমের সংস্কার প্রয়োজন। ‘গ্রাম শিক্ষা ও বিনোদন কেন্দ্র’ নামক পাইলট প্রকল্প নেওয়ার পাশাপাশি বর্তমানে চলমান সরকারের কারিগরি শিক্ষাভিত্তিক ‘স্কিলফো’ প্রকল্প সারা দেশে ব্যাপক প্রসার ঘটাতে হবে।

‎প্রাথমিক শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, একটা জাতি উন্নতি করতে হলে প্রথমত, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য এইগুলো কখনো প্রাইভেট বিষয় হতে পারবে না। এগুলো রাষ্ট্রীয় বিষয় হওয়া দরকার। দুই নম্বর হচ্ছে, এই যে গভর্মেন্টের পাশাপাশি হওয়া দরকার ভলান্টিয়ার সার্ভিস। যদি আমরা এগুলো কার্যকর করতে পারি, তাহলে আশা করতে পারেন যে আমাদের জাতীয় ক্ষেত্রে আমরা এগিয়ে যেতে পারব।

‎তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষাক্ষেত্রে কাগজে কলমে অনেক পরিবর্তন ঘটে গেছে। কিন্তু প্রকৃত অর্থে ব্রিটিশরা আমাদের যা শিখিয়েছে তার থেকে এক চুলও আগায়নি। আমাদের শিক্ষার উদ্দেশ্য কি? কেরানি তৈরি করা। এবং এখনো তাই এর বেশি কিছুই না। প্রসঙ্গ হতে পারে আমরা অন্যভাবে বিষয়টা দেখবো কেন? এখন প্রাক্টিক্যালি বিষয়টাকে ভাবেন। ধরুন আমাদের ইনকামের একটা বড় সোর্স হচ্ছে আমাদের প্রবাসীদের ইনকাম এবং আমাদের পূর্ববর্তী বক্তারা খুব সুন্দর বলে গেছেন যে, আমাদের প্রবাসীরা সবচেয়ে কম আয় করেন অন্যদের তুলনায়। কারণ, তাদের শিক্ষাগত বৈশিষ্ট্য দুর্বল। তাহলে আমি যদি এইভাবে আয় করতে চাই, আমি যদি জাতীয়ভাবে বিষয়টা চিন্তা করি তাহলে কিন্তু শিক্ষার প্রয়োজন।

‎প্রাথমিক শিক্ষা আরও উপদেষ্টা বলেন, আমরা ক্রমেই স্বাস্থ্য এবং শিক্ষাকে একটা প্রাইভেট বিষয় করে তুলেছি। জাতীয় বিষয় থেকে ক্রমেই প্রাইভেট বিষয় করে তুলেছি।  এতে কার লাভ হয়? এতে মুষ্টিমেয় কিছু ব্যক্তির এবং গোষ্ঠীর লাভ হয়। যদি জাতীয় স্বার্থের চিন্তা করি, তা কখনোই রক্ষিত হয় না।

‎গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব সোহরাব হাসান বলেন, বাংলাদেশে প্রাথমিক শিক্ষাকে কম গুরুত্ব দেওয়া হয়। আমাদের শিক্ষকরা বিসিএসে না যেতে পেরে শিক্ষক হন। স্বাধীনতার পর ১০ থেকে ১২টি শিক্ষা কমিশন হলেও একটিও বাস্তবায়ন করা হয়নি। তাছাড়া স্বাক্ষরতার হার অনেক কম। বর্তমান সরকার প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে একটি কমিশন করেছে। হয়তো তারা দৃশ্যমান কিছু করবেন। প্রাথমিক শিক্ষায় বরাদ্দ বাড়ানো উচিত। তাছাড়া বর্তমানে বারোমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু আছে, তা অবৈজ্ঞানিক। এখানে একমুখী শিক্ষাব্যবস্থা চালু করা যায় কিনা, তা খতিয়ে দেখার আহ্বান জানান তিনি।

‎বিএনসিসির সাবেক মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাহিদুল ইসলাম খান বলেন, পথ শিশুরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাদেরকে প্রণোদনা প্রদানের মাধ্যমে শিক্ষায় আগ্রহী করে তুলতে হবে।

‎উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক দেবব্রত চক্রবর্তী বলেন, উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা প্রকল্প থেকে শিক্ষা নিয়ে প্রায় ৬ হাজার মানুষ শোভন কাজে যুক্ত হয়েছে। শিক্ষা এক ব্যাপার, একই সঙ্গে শিক্ষায় নৈতিকতা দরকার। আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের শিক্ষাব্যবস্থা প্রচলিত রয়েছে। এর মধ্যে সমন্বয় করা দরকার। এছাড়া প্রান্তিক বা দুর্গম এলাকায় শিক্ষাকে নিয়ে যেতে হবে।

‎সাবেক অতিরিক্ত সচিব এবং নিমো লার্নিংয়ের চেয়ারম্যান জাফর রাজা চৌধুরীর সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তৃতা করেন, সাবেক শিক্ষিকা ও খ্যাতিমান অভিনেত্রী দিলারা জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে অধ্যাপক এবং একাডেমিয়া লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অধ্যাপক ড. মো: কুতুবউদ্দিন, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রফেসর রবিউল কবির চৌধুরী প্রমুখ।

মন্তব্য (০)





  • company_logo