• বিশেষ প্রতিবেদন

মহাসড়ক দখল করে ময়লার স্তুপ, দুর্গন্ধে নাকাল পথচারী ও স্থানীয়রা, নজরদারি নেই সওজের

  • বিশেষ প্রতিবেদন

ছবিঃ সিএনআই

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধিঃ গাজীপুরের শ্রীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের এক লেন দখল করে ফেলা হচ্ছে ময়লা আবর্জনা।ময়লা আবর্জনার স্তূপ দিনকে দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।  দিনের পর দিন ময়লা বর্জ্য ফেলার ফলে সৃষ্টি হয়েছে ময়লার ভাগাড়ে। পাহাড় সমান উঁচু ময়লার স্তূপের সৃষ্টি হলেও নেই  কোন ধরনের নজরদারি  সড়ক ও জনপদ বিভাগ সওজের। দূ্র্গন্ধ এবং  ভোগান্তি নিয়ে চলাচল করতে হয় পথচারী ও গণপরিবহন গুলোকে। নাক চেপে চলাচল করেও স্বস্থি মিলছে না পথচারীদের। ময়লা বর্জ্যের দুর্গন্ধে আশপাশের পরিবেশ হুমকিতে। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের মাওনা ইউনিয়নের মাওনা গ্রামের এমসি বাজার এলাকায় এবং রঙ্গিলা বাজারের উত্তর পাশে  পাশাপাশি কয়েকটি পয়েন্টে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পশ্চিম দিকের ময়মনসিংহ লেন দখল করে ফেলা হচ্ছে ময়লা আবর্জনা। আশপাশের কয়েকটি গ্রামের ময়লা বর্জ্য এনে এখানে ফেলা হচ্ছে। বিশেষ করে এমসি বাজার সংলগ্ন ও সামিট পাওয়ার বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাশে পাহাড় সমান ময়লার স্তূপের সৃষ্টি হয়েছে। ভাগাড়ের আশপাশের কয়েক কিলোমিটার জায়গায় ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। ময়লা ফেলে ইতিমধ্যে সড়কের এক লেন পুরোপুরি বন্ধ করা হয়েছে। পথচারীরা ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করছে। এতে করে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে পথচারী, চালকরা। ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধে অনেক সময় বমি করে দেন পথচারীরা। ময়লার স্তূপের আশপাশে বসবাসকারী মানুষেরা আছেন  চরম ভোগান্তিতে। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বয়স্ক ও শিশুরা।

স্থানীয় কয়েকজন বলেন, আমরা তো দুর্গন্ধ সহ্য করে এখনও বেঁচে আছি। আপনারা একদিনও আশপাশের এলাকায় থাকলে বাঁচতে পারবেন না।এখানে  আমাদের বেঁচে থাকাই কঠিন। হেঁটে চলাচল করলে বমি আসে। আমাদের শিশু বৃদ্ধরা শ্বাসকষ্টে খুবই কষ্টে আছে। ময়লা বর্জ্যের দুর্গন্ধে পেটে খাবার ডুকে না। এমন একটা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে যে এলাকা ছাড়তে হবে এছাড়া বিকল্প নেই। 

সোহেল  রানা  বলেন, ময়লার জন্য আজ আমরা অনেক অসহায়। বাড়িতে মেহমান আসলে বেশিক্ষণ থাকতে পারে না। দেখেন  কত উঁচু ময়লার ভাগাড় । এটা তো আর এক দিনের হয়নি । বহুদিন যাবৎ এখানে ময়লা বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। কি পরিমাণ দুর্গন্ধ আশপাশের এলাকায় থাকলে বুঝা যাবে। বাতাসে আশপাশের কয়েক কিলোমিটার ছড়িয়ে যায়। কার কাছে বিচার দিবো। কোন বিচার পায় না। প্রতিকার মিলছে না। কে  ময়লা ফেলে এবং কার নির্দেশনায় এগুলো বলতে পারবো না। 

রিকশা চালক আব্দুল কাদির বলেন, সড়কের অর্ধেক দখল করে ময়লা বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। ফুটপাত তো অনেক আগেই বন্ধ। এখন এক লেন বন্ধ হলো। অথচ এদিকে ইউনিয়ন পরিষদ বা কর্তৃপক্ষের কোন কার্যক্রম দেখিনা। আমরা কোথায় দিয়ে চলাচল করবো। ময়লার ভাগাড়ের কাছে এসে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় কখন গাড়ি থাকবে না। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে তো এক মিনিটের জন্য গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকে না।

গার্মেন্টস কর্মী সাহেরা খাতুন বলেন, এখান দিয়ে চলাচল করতে খুবই সমস্যা। গতকাল বুধবার আমি রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি একটি মোটরসাইকেল আমাকে ফেলে দেয়। আমার হাতে অনেক সমস্যা হয়ছে। দুর্গন্ধ কেমন এটা আর কি বলবো। এই পথ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার পর পেটে আর ভাত যায় না।

সৌখিন পরিবহনের একজন বাসচালক বলেন, ময়লা বর্জ্য ফেলে এখানে লেন বন্ধ করা হয়েছে। যার ফলে প্রতিনিয়ত যানজটের সৃষ্টি হয়। অযথাই আমাদেরকে এখানে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। দাঁড়িয়ে থাকলে দুর্গন্ধে যাত্রীদের অনেক সমস্যা হয়। এটা বহুদিনের সমস্যা। কয়েকটি পয়েন্টে এমন বড় বড় ময়লার ভাগাড়। 

গাজীপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার শরিফুল আলমকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। 

শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সজীব আহমেদ বলেন, জনভোগান্তি বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয়  নির্দেশনা দেয়া হবে। আশাকরি দ্রুত সময়ের মধ্যে সমস্যার সমাধান হবে।

 

মন্তব্য (০)





  • company_logo