
গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কে সামনে রেখে গাইবান্ধা-৩(পলাশবাড়ী-সাদুল্যাপুর) আসনটিতে ভোটের হাওয়া বইতে কমতি নেই।চায়ের দোকান থেকে পাড়া-মহল্লায় পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনীয় প্রচার-প্রচারণা ব্যস্ত সময় পার করছেন। এক সময় এই আসনটিতে জাতীয় পার্টির শক্ত অবস্থান ছিল।১৯৮৬ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ছয়বার এই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন জাপার ড. টিএম ফজলে রাব্বী চৌধুরী।২০১৪ ও ২০১৮ (১০-১১তম) টানা দুবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ডা. ইউনুস সরকার নির্বাচিত হন। ২০২৪ সালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতি নির্বাচিত হয়। তবে ৫ই আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর এই আসনে নতুন করে ভোটের চিত্র পাল্টাতে শুরু করে। এবারে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে পলাশবাড়ী উপজেলার ১ পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়ন এবং সাদুল্যাপুর ১১ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এই আসনে ভোট যুদ্ধ হবে বিএনপি ও জামায়াতের মাঝে।এই দুই দল ছাড়াও গণঅধিকার পরিষদ,এনসিপি, ইসলামি আন্দোলনের প্রার্থীরা কাজ করছেন মাঠে।তবে রাজনৈতিক সমীকরণে তাকিয়ে আছে জাপা,জাসদ,কমিউনিস্ট পার্টি সহ আরো কয়েকটি দল।
এই আসনটিতে জয় পেতে বিএনপির মনোনয়ন দৌড়ে কেন্দ্রে দিকে তাকিয়ে আছেন একাধিক প্রার্থী। ধানের শীষের মনোনয়ন দৌড়ে সম্ভাব্য কয়েকজন এর নাম ইতোমধ্যে শোনা যাচ্ছে। তাদের মধ্যে জেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মইনুল হাসান সাদিক, সাবেক ছাত্রনেতা ড. মিজানুর রহমান মিজান, জাসাস কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও অ্যাডভোকেট ফরহাদ হোসেন নিয়ন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য রওশনারা ফরিদ, জেলা বিএনপির নেতা রফিকুল ইসলাম রফিকসহ অনেকেই। তারা ইতোমধ্যে উঠান বৈঠক সহ বিএনপি ৩১ দফা বাস্তবায়নে সাধারণ ভোটারদের মাঝে প্রচার প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পাড় করছেন।
বিএনপির তৃণমূল নেতারা বলছেন, দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষে এ আসনে কাজ করার জন্য প্রস্তুত। পাশাপাশি বিএনপির ধানের শীষের জয়ের জন্য সৎ এবং যোগ্য প্রার্থী দিতে হাইকমান্ডের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।সেই সঙ্গে তারা আরো বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ। আর সেই প্রতিরোধ হবে ব্যালটের মাধ্যমে বিএনপির জয়।
অন্যদিকে আসনটিতে জয় পেতে বসে নেই জামায়াতে ইসলামী। তারাও কোমর বেঁধে নেমেছে মাঠে এরিমধ্যে একক প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণা করা হয়েছে মাওলানা নজরুল ইসলাম লেবু। যদিও তিনি এর আগে একাধিকবার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে জয়ী হতে পারেনি। তবে এবারের জয়ী হতে নির্বাচনী মাঠে ব্যাপকভাবে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।পাশাপাশি নির্বাচন সুষ্ঠু হলে জামায়াতে ইসলামী বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে বলে জানান।
তৃনমুল জামায়াতর এক কর্মী বলেন, মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য লড়াই-সংগ্রাম করে আসছে জামায়াত। যতদিন পর্যন্ত মানুষের অধিকার আদায় না হবে ততদিন পর্যন্ত আমরা মানুষের জন্য মাঠে থাকবো। ভোটের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ জামায়াতকে বিজয়ী করলে তাদের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হবে।
তরুণ ভোটার ও ছাত্রনেতা রানা আহমেদ বলেন, আগামী নির্বাচনে সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিকেই তরুণরা ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত করবেন। এলাকার উন্নয়নে যারা সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে থাকবে তাদের পক্ষে তরুণরা ভোটের মাঠে কাজ করবেন।আর এমন নেতা বিএনপির মাঝে দৃশ্যমান।
এই আসনে দুই উপজেলায় পুরাতন ভোটার সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ৮১ হাজার ৪৫৮। এর মধ্য পলাশবাড়ী উপজেলায় ২ লাখ ২২ হাজার ৪৮৯ এবং সাদুল্লাপুর উপজেলায় ২ লাখ ৫৮ হাজার ৯৬৯।
মন্তব্য (০)