• অপরাধ ও দুর্নীতি

ময়মনসিংহে মেয়েকে হত্যার অভিযোগে বাবা ও সৎ মা গ্রেপ্তার

  • অপরাধ ও দুর্নীতি
  • ১৪ অক্টোবর, ২০১৯ ১০:৩৫:১৮

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় ৭ম শ্রেনীর ছাএী উমামা তাসনিমকে গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে। একই স্কুলের এক শিক্ষার্থীর সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলার অপরাধে গলা টিপে হত্যার অভিযোগ ওঠেছে তার সৎ মা দিলরুবা বিউটির বিরুদ্ধে। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে থানা পুলিশের কাছে হত্যার কথা স্বীকার করেছে সে। এ ঘটনায় নিহত উমামা তাসনিমের বাবা স্কুল শিক্ষক রবিউল আলম রুবেল ও সৎ মা দিলরুবা বিউটি ও নানী রওশন আরা সহ ৭ জনের নামে মুক্তাগাছা থানায় মামলা করেছে উমামার মামা ড.রেজাউল হক। পুলিশ অভিযুক্ত বাবা-মা’কে আটক করেছে। রোববার উমামার লাশ ময়না তদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার দুপুরে মুক্তাগাছা শহরের যমুনাসিং মোড় এলাকায়। মুক্তাগাছা উপজেলার তারাটি ইউনিয়নের কলাদিয়া গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফের ছেলে রবিউল আলম রুবেল কারিগরি শাখায় শিক্ষকতা করতেন আর কে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে। তার প্রথম স্ত্রী তাসলিমা আক্তার সাথীও একই স্কুলে শিক্ষকতা করত। ২০০৮ সালে ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে তার চার বছরের একমাত্র কন্যা সন্তান উমামা তাসনিমকে রেখে তিনি মারা যান। ওই বছরই ময়মনসিংহের ফুলপুরের ধলী গ্রামের আব্দুল বাছেদের মেয়েকে বিয়ে করেন রবিউল আলম রুবেল। উমামা বড় হন তার সৎ মা দিলরুবা বিউটির কাছেই। সে তার বাবা মা’র স্কুলেই ৭ম শ্রেনীতে লেখাপড়া করত। সৎ মায়ের নির্মম নির্যাতনের খবর প্রতিবেশিরাও যানতো। উমামাকে খেতে দেয়া হতো ফেলে দেয়া জুটা খাবার। এসব কারণে বিভিন্ন সময় তার নানার বাড়ির লোকজন তাকে তাদের কাছে নেওয়ার চেষ্টা করত। কিন্তু তার পিতা রুবেল মেয়েকে তার নানার বাড়িতে যেতে দিত না। সৎ মায়ের ঘরে ছোট ছোট দু’টি সন্তানদের লালন পালনের দায়িত্ব পড়ত তার ওপরই। সৎ মায়ের সন্তানদের যতেœ সামান্য ত্রæটি হলে নির্মম নির্যাতন চলত উমামার ওপর। শহরের যমুনাসিং মোড়ের রুহুল আমীনের চার তলা ভবনের নিচতলায় তারা ভাড়া থাকত। ওই ভাড়া বাসার ছোট একটি রান্না ঘরে তাকে থাকতে দেওয়া হত। ওই ছোট কক্ষেই অধিকাংশ সময় কাটাতে হত তার । ওই কক্ষেই শনিবার দুপুরে তার সৎ মা দিলরুবা গলা টিপে হত্যা করে তাকে। তার অপরাধ কয়েকদির আগে সে একই স্কুলের দশম শ্রেণীর এক ছাত্রের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলেছিল। ভবিষ্যতে কথা না বলার অঙ্গীকারের পরও সৎ মা তাকে ছাড় দেয়নি। চলে লোমহর্ষক নির্যাতন। তাদের নির্যাতনে সে মারা যায়। তাকে হত্যা করা হয়নি, সে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহতা করেছে এ ধরণের অভিযোগ প্রমাণের জন্য তার বাবা-মা দিনভর আত্মহত্যার নাটক সাজায়। তার মৃতদেহ ঘরে রেখেই তারা বন্ধুর বাড়িতে দাওয়াত খেতে যায়। হাসপাতালে নেওয়াটাও ছিল নাটকের একটি অংশ। হত্যাকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার নানা কসরত চালিয়েও রক্ষা হয়নি তাদের। অবশেষে ধরা পড়ে পুলিশের কাছে। মামলার বাদি উমামা তাসনিমের মামা ড.রেজাউল হক বলেন, তার ভাগ্নিকে পরিকল্পিতভাবে গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে। তাকে তাদের বাসায় নেওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করলেও উমামাকে তাদের বাসায় যেতে দেওয়া হত না। তার সৎ মা বিভিন্ন সময় আমানুষিক নির্যাতন চালাত উমামার ওপর। থানার ওসি আলী মাহমুদ বলেন, নিহত স্কুল শিক্ষার্থীর বাবা-মা’কে আটকের পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার সৎ মা দিলরুবা বিউটি ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। একই স্কুলের এক শিক্ষার্থীর সাথে ফোনে কথা বলায় উমামার ওপর নির্যাতনের কথাও স্বীকার করে সে।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo