নীলফামারী প্রতিনিধিঃ নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে শ্যালিকাকে অপহরন করে হত্যা মামলার পলাতক প্রধান আসামী মোঃ শহিদ শাহ (৪০) সহ মামলার ৭নং আসামী হেলাল মিয়া (৫৮) এবং ১০নং আসামী আব্দুল করিম শাহকে (৪৭) গাজীপুরের কালীয়াকৈর এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৩ এর ক্রাইম প্রিভেনশন কোম্পানী-২।
রবিবার(৩০ জানুুয়ারি) দুপুরে র্যাব-১৩ এর সহকারি পরিচালক (মিডিয়া) ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মাহমুদ বশির আহমেদ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন।
র্যাবের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অপহরণের তিন মাস পর নীলফামারীর কিশোরঞ্জের নিতাই ইউনিয়নের পানিয়ালপুকুর গ্রাম থেকে গোপনে দাফনের সময় এক তরুণীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় পালিয়ে যায় ওই তরুণীর দুলাভাই শহীদ শাহ ও তার পরিবারের লোকজন।
নিহত ওই তরুণী একই উপজেলার কিশোরগঞ্জ ইউনিয়নের মুসা গ্রামের শিক্ষক সিরাজুল ইসলামের মেয়ে। মেয়েটির দুলাভাই সহীদ শাহ উপজেলার পানিয়ালপুকুর গ্রামের জাকারিয়া শাহর ছেলে জয়পুরহাট জেলায় কর্মরত একটি ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শিক্ষক সিরাজুল ইসলামের দুই মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে স্মৃতির সাথে সহীদ শাহর বিয়ে হয়। তারা জয়পুরহাট জেলা শহরে থাকতো। তাদের ৭ বছরের সৌধ্য নামের একটি ছেলেসন্তান রয়েছে। পারিবারিক কলহে তাদের মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটলে স্মৃতি সন্তানসহ বাবার বাড়ি ফিরে আসে।
এ অবস্থায় ২০১৯ সালের ২৯ জানুয়ারি সহীদ শাহ তার একমাত্র শ্যালিকাকে অপহরণ করে। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষে থানায় মামলা করা হয়। পুলিশ ওই সময় অভিযান চালিয়ে অপহৃতকে উদ্ধার ও অপহরণকারী আসামি দুলাভাই সহীদ শাহকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করেছিল। ৬ মাস পর সহীদ শাহ জামিন পায়। মামলাটি আদালতে বিচারাধীন থাকা অবস্থায় ২০২১ সালের ১৪ অক্টোবর সহীদ শাহ পুনরায় শ্যালিকাকে অপহরণ করে গা-ঢাকা দেয়।
এ ঘটনায় ওই তরুণীর বাবা কিশোরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করে। কিন্তু পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে অপহৃতকে উদ্ধার করতে পারেনি। আসামী দুলাভাই শহিদ শাহ ওই তরুনীকে নিয়ে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় বসবাস করে এবং একপর্যায়ে সে গর্ভবতী হয়ে পরে। তরুনীকে সে প্রায়ই নির্যাতন ও মারধর করত। গত ১৪ জানুয়ারি নির্যাতনের এক পর্যায়ে আসামী শহীদ শাহ অন্তঃস্বত্তা তরুনীর পেটে লাথি মারে এবং পরবর্তীতে সে রক্তক্ষরণে মারা যায়।
এ ঘটনায় তরুনীর পিতা বাদী হয়ে নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
র্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামী শহিদ শাহ ঐ দিনের ঘটনা সম্পূর্ণ বর্ণনা করে। গত ১৪ জানুয়ারি তরুনীকে নির্যাতনের এক পর্যায়ে সে মেয়েটির পেটে লাথি মারে। এতে রক্তক্ষরণ শুরু হলে সে তরুনীকে রংপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তি করার জন্য নিয়ে যায। কিন্তু তরুনী তখনে রক্তক্ষরণে মারা যায় এবং সে মেয়েটির লাশ নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে গোপনে দাফনের চেষ্টা করে। র্যাব আরো জানায়, এ হত্যাকান্ডে জড়িত অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের গোপন অনুসন্ধান চলছে এবং আসামীদেরকে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
মন্তব্য ( ০)