• অপরাধ ও দুর্নীতি

ময়মনসিংহে বোরকা পরে গার্মেন্টসে চুরির রহস্য উদঘাটন, গ্রেফতার ৩

  • অপরাধ ও দুর্নীতি
  • ২৫ মে, ২০২১ ১৪:২৯:২৬

ছবিঃ সিএনআই

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ  ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলার টেক্সটাইল সিটি (কনজ্যুমার গার্মেন্টস লিঃ) নামক একটি গার্মেন্টসে ১০ লাখ টাকা চুরির রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হলেন, মোফাজ্জল হোসেন ওরফে জুয়েল মিয়া (৩৭), মো. হানিফ (২৯) ও সেলিম হোসেন (৩৩)। 

ময়মনসিংহ জেলা পিবিআই'য়ের পুলিশ সুপার (এসপি) গৌতম কুমার বিশ্বাস সোমবার (২৪ মে) সন্ধ্যায় জানান,  ত্রিশালের টেক্সটাইল সিটি (কনজ্যুমার গার্মেন্টস লিঃ) নামক একটি গার্মেন্টসে চুরির অভিযোগের ময়মনসিংহের পাগলার তলালী এবং ত্রিশালের বাগান এলাকা থেকে রোববার (২৩ মে) ভোর ৫টায় থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে তাদেরকে আজ (রোববার) আদালতে পাঠানো হলে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। 

এর আগে ত্রিশালের টেক্সটাইল সিটি (কনজ্যুমার গার্মেন্টস লিঃ) নামক গার্মেন্টের ৫ নং বিল্ডিংয়ের ২য় তলায় কান্ট্রি ডিরেক্টরের অফিস কক্ষ হতে ২০১৯ সালের ১ ডিসেম্বর রাতে ৯ লাখ ৬০ হাজার ৪০০ টাকা চুরির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই গার্মেন্টসের সিকিউরিটি ইনচার্জ বাদী হয়ে ত্রিশাল থানায় মামলা করেন। মামলাটি সাত মাস তদন্তের পর ময়মনসিংহ জেলা পিবিআই'কে তদন্তভার দেয়া হয়।

এসপি গৌতম কুমার বিশ্বাস গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে বলেন, আসামী জুয়েল ওই গার্মেন্টেসের সহকরী সিকিউরিটি ইনচার্জ হিসেবে কর্মরত ছিল। পরে তাকে সেখান থেকে ভালুকার কনজ্যুমার নিটিং গার্মেন্টেসে বদলী করা হয়। এতে তার মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। কারণ সে ও তার স্ত্রী একই সাথে ত্রিশালের টেক্সটাইল সিটি গার্মেন্টেসে চাকরি করত। অপরদিকে টেক্সটাইলের কাছেই বাগান এলাকায় ভাড়া থাকত। 

তিনি বলেন, ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে সে স্থানীয় সেলিম, হানিফ, আজিজের সাথে মিলিত হয়ে টেক্সটাইল সিটি গার্মেন্টেসে চুরির পরিকল্পনা করে। অপরদিকে আসামী হানিফ ও আজিজ উক্ত টেক্সটাইলের কাছে বাগান এলাকায় বসবাস করত। হানিফ বালুর ট্রাকের হেলপার ও আজিজ ডিশের লাইনম্যান হিসেবে কাজ করত।

এসপি গৌতম বলেন, চুরির ঘটনার রাত আনুমানিক সাড়ে ৩টার দিকে হানিফ ও জুয়েল মিয়া কালো বোরকা পড়ে টেক্সটাইল সিটি গার্মেন্টেসের দক্ষিণ পাশের প্রাচীর টপকে ভিতরে ঢুকে। হানিফের কাছে ২৫ ইঞ্চি লম্বা শাবল ছিল। এদিকে সিকিউরিটি সেলিম ঐ দিন ঘটনার পূর্বেই ২য় তলায় কান্ট্রি ডিরেক্টরের অফিস কক্ষে ঢোকার ফায়ার এক্সিট দরজার চাবি এনে জুয়েলকে দেয়। অপরদিকে গার্মেন্টেসের দক্ষিণ পাশে প্রাচীরের বাহিরে সেলিম ও আজিজ পাহারায় থাকে। 

হানিফ ও জুয়েল কৌশলে ওই গার্মেন্টসের ৫নং বিল্ডিংয়ের ২য় তলার কান্ট্রি ডিরেক্টরের অফিস কক্ষের কাছে পৌছে পূর্বেই সংগৃহিত চাবি দিয়ে 
ফায়ার এক্সিট দরজার তালা খুলে ভিতরে ঢুকে তারা। তারপর হানিফের কাছে থাকা শাবল দিয়ে লকার ভেঙ্গে ভিতরে থাকা বেতন ভাতাদির টাকার বাক্সটি নিয়ে চলে আসে। পরবর্তীতে তারা চারজন বাক্সে থাকা প্রায় দশ লক্ষ টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয়।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় ওই গার্মেন্টসের জব্দকৃত সিসিটিভি ফুটেজ বারংবার পরীক্ষা করা হয়। সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে বোরকা পড়া এক জন পুরুষের মেয়েলী ভঙ্গিতে হাটার দৃশ্য পরিলক্ষিত হয়। এ বিষয়ে টেক্সটাইল সিটি গার্মেন্টস এ কর্মরত কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
 
জিজ্ঞাসাবাদ ও অনুসন্ধানের এক পর্যায়ে সন্ধিগ্ধ আসামী জুয়েলকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে টেক্সটাইল সিটি গার্মেন্টেসে চুরির কথা স্বীকার করে এবং পরবর্তীতে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে চুরির ঘটনার সাথে জড়িত সন্ধিগ্ধ আসামী হানিফ ও সেলিমকে গ্রেফতার করা হয়।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo