• সমগ্র বাংলা

ঠাকুরগাঁওয়ে শুক নদীর অভয়াশ্রমে মাছ ধরা উৎসব

  • সমগ্র বাংলা

ছবিঃ সংগৃহীত

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁও শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে বুড়ি বাঁধ অভয়াশ্রম এলাকায় মাছ ধরা উৎসবে মেতেছে হাজারো সৌখিন মাছ শিকারী। অনেকে শুধু দেখতে ও মাছ কিনতে গিয়েছেন সেখানে।

শুক নদীর তীরে সদর উপজেলার চিলারং ও আকচা ইউনিয়নের মাঝামাঝি জায়গায় অবস্থিত বুড়ি বাঁধটি। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকালে বাঁধের গেট খুলে দেয় কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকেই শুরু হয় মাছ ধরা উৎসব।

শনিবার (১৮ অক্টোবর) সারাদিন জাল, পলো আর মাছ রাখার পাত্র খলই নিয়ে আগের রাত থেকেই বাঁধ এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেন শত শত মানুষ। কেউ ভেলায়, কেউ ছোট নৌকায় করে মাছ ধরছেন। এ যেন এক প্রতিযোগিতা। আর বাঁধে দাঁড়িয়ে তাদের উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন বন্ধু-বান্ধব ও স্বজনরা।

মাছ ধরার জন্য আশপাশের কয়েক গ্রামের ও জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ যেন ভেঙে পড়েছে নদীর তীরে। কেবল পুরুষই নয়, নারী-শিশু, বৃদ্ধ-বৃদ্ধারাও নেমে পড়েছেন মাছ ধরতে। কারো হাতে খেওয়া জাল, কারো হাতে লাফি জাল, কারো হাতে পলো। অনেকেই কোনো সরঞ্জাম ছাড়া খালি হাতেই নেমে পড়েছেন মাছ ধরতে। 

মাছ ধরা উৎসবকে ঘিরে বাঁধের বিভিন্ন জায়গায় বসেছে খাবারের হোটেল, ফলের দোকান, খেলনা ও প্রসাধনীর দোকান। বাইরে থেকে আসা মানুষের মোটরসাইকেল ও সাইকেল রাখার জন্য তৈরি হয়েছে অস্থায়ী গ্যারেজও।

মাছ ধরতে আসা সকলেরই অভিযোগ, তারা মাছ পাচ্ছেন না। রাত থেকে জাল ফেলেও কাঙ্খিত মাছ মিলছে না। দেশীয় প্রজাতির মাছ এক প্রকার বিলুপ্তির পথে। গত কয়েক বছর আগেও এই বাঁধে প্রচুর দেশীয় মাছ ধরা পড়তো কিন্তু এখন মাছ নেই। কারেন্ট জাল, রিং জালসহ বিভিন্ন কারণে দেশীয় মাছ বিলুপ্তির পথে মনে করেন মাছ ধরতে আসা অনেকে।

অপরদিকে শহর থেকে দেশীয় মাছ কিনতে যাওয়া ক্রেতারা অভিযোগ করেন মাছের দাম অনেক বেশি। দেশীয় মাছ তেমন পাওয়া যায় না এখানে। যা পাওয়া যাচ্ছে, তার দাম অনেক। পুঁটি মাছ ৩০০-৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তাই অনেক ক্রেতাই মাছ কিনতে না পেরে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরছেন।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় ১৯৫১-৫২ সালের দিকে খড়া মৌসুমে এ অঞ্চলের কৃষি জমির সেচ সুবিধার জন্য এলাকায় একটি জলকপাট নির্মাণ করা হয়। জলকপাটে আটকে থাকা সেই পানিতে প্রতিবছর মৎস্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে বিভিন্ন জাতের মাছের পোনা ছাড়া হয়। আর এ পোনাগুলোর দেখভাল করে আকচা ও চিলারং ইউনিয়ন পরিষদ।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তারা  জানান, ১৯৫১-৫২ সালের দিকে বুড়ি বাঁধ সেচ প্রকল্পটি নির্মাণ করা হয়। বাঁধটির সামনে একটি অভয়াশ্রম আছে। প্রতি বছর বাঁধটি ছেড়ে দেওয়ার পরে মাছ ধরার জন্য এখানে অনেক মানুষের সমাগম ঘটে। আমরা মনে করছি এটার মাধ্যমে আমিষের চাহিদা কিছুটা হলেও পূরণ হবে।

মন্তব্য (০)





  • company_logo