• লিড নিউজ
  • জাতীয়

বিচার বিভাগ সংস্কারে ঘোষিত রোডম্যাপ বাস্তবে রূপ নিয়েছে: প্রধান বিচারপতি

  • Lead News
  • জাতীয়

ছবিঃ সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, দেশের বিচার বিভাগের সংস্কারে যে রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছিল, তা এখন বাস্তবে রূপ নিয়েছে। এর ফলে বদলে গেছে আদালতের সংস্কৃতি, জনগণের প্রত্যাশা এবং প্রতিষ্ঠানের বিশ্বাসযোগ্যতা।

‎বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট এবং ইউএনডিপি’র যৌথ উদ্যোগে হোটেল গ্র্যান্ড পার্ক, বরিশালে ‘জুডিশিয়াল ইনডিপেনডেন্স অ্যান্ড এফিসিয়েন্সি ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক আঞ্চলিক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

‎প্রধান বিচারপতি বলেন, এক বছর আগে, ২০২৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর বিচার বিভাগ সংস্কারে যে রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছিল, তা এখন বাস্তবে রূপ নিয়েছে। এর ফলে আদালতের সংস্কৃতি, জনগণের প্রত্যাশা এবং প্রতিষ্ঠানের বিশ্বাসযোগ্যতায় পরিবর্তন এসেছে।

‎উচ্চ আদালতে বিচারপতি নিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আইনজ্ঞ, গবেষক ও নাগরিকেরা দাবি করে আসছিলেন—একটি স্বচ্ছ, বিশ্বাসযোগ্য এবং কোলেজিয়ামভিত্তিক নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া হবে। ‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল অর্ডিন্যান্সু২০২৫’ প্রণয়নের মাধ্যমে সেই প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। ইতোমধ্যে এই প্রক্রিয়ায় আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগে বিচারপতি নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। এর মাধ্যমে বহু প্রতীক্ষিত জাতীয় ঐকমত্য আজ আইনে রূপান্তরিত হয়েছে এবং জনআস্থার যোগ্য একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সুদৃঢ় হচ্ছে।

‎বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক পৃথকীকরণ প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি বলেন, একটি পৃথক সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠার ভিত্তি প্রায় সম্পূর্ণ। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সক্রিয় সহযোগিতা ও সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী আমরা অগ্রসর হচ্ছি একটি যুগপৎ প্রশাসনিক দ্বৈত কাঠামো (পোস্টিং, বদলি ও শৃঙ্খলা সংক্রান্ত) অবসানের পথে। এর মাধ্যমে বিচার বিভাগের প্রকৃত স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত হবে।

‎সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনরুজ্জীবন এবং এর কার্যক্রম সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রায় এক দশক ধরে স্থবির থাকা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনরুজ্জীবনের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের শৃঙ্খলা ও অপসারণের সাংবিধানিক প্রক্রিয়া পুনঃস্থাপন করা হয়েছে।

‎বিচার প্রক্রিয়ায় আধুনিকায়ন এবং বিচারপ্রার্থীদের জন্য হেল্পলাইন সার্ভিস চালুকরণ প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি বলেন, সুপ্রিম কোর্টসহ দেশের ৮টি বিভাগীয় শহর ও ৬৪টি জেলায় হেল্পলাইন সার্ভিস চালু করা হয়েছে। এসব উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিচার প্রক্রিয়ায় আমূল পরিবর্তন এসেছে।

‎প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, সংস্কার রোডম্যাপের আরেকটি মাইলফলক হলো দেওয়ানি ও ফৌজদারি বিচারব্যবস্থার পৃথকীকরণ। এছাড়া, জেলা পর্যায়ে ২৩২টি নতুন বিচারিক পদ সৃষ্টি করে ক্রমবর্ধমান মামলা জট এবং মামলা নিষ্পত্তির দীর্ঘসূত্রিতা নিরসন করা হবে।

‎বিশেষায়িত বাণিজ্য আদালত প্রতিষ্ঠা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের উদ্যোগে বাণিজ্যিক আদালত অধ্যাদেশ ২০২৫ এর খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে। প্রস্তাবিত অধ্যাদেশটি শুধু বিশেষায়িত আদালতই নয়, বরং দক্ষ বিচারক, প্রযুক্তিনির্ভর প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাণিজ্য সংক্রান্ত বিরোধগুলোর দ্রুত ও নিশ্চিত সমাধান নিশ্চিত করবে। এর ফলে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি পাবে এবং বাংলাদেশে ব্যবসা করার পরিবেশ আরও শক্তিশালী হবে।

‎প্রধান বিচারপতি ঘোষিত বিচার সংস্কারের রোডম্যাপ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে  ‘জুডিশিয়াল ইনডিপেনডেন্স অ্যান্ড এফিসিয়েন্সি ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনার সিরিজ আজ বরিশালে শেষ হয়।

‎বরিশালে অনুষ্ঠিত সিরিজের শেষ সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী। সেমিনারে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার।

‎সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার, সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস উইকস, নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হকোন অ্যারাল্ড গুলব্র্যান্ডসেন, এবং ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক।

‎স্বাগত বক্তব্যে স্টেফান লিলার বাংলাদেশের বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক স্বতন্ত্রীকরণে প্রধান বিচারপতি ঘোষিত বিচার সংস্কার রোডম্যাপকে একটি যুগোপযোগী পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করেন এবং উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে বাংলাদেশের বিচার বিভাগের আধুনিকায়নে পাশে থাকার আশ্বাস পুনর্ব্যক্ত করেন।

‎সেমিনারে বরিশালের জেলা ও দায়রা জজ আদালত, মহানগর দায়রা জজ আদালত, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, শ্রম আদালতে কর্মরত বিভিন্ন পর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাগণসহ বরিশাল জেলার বিভিন্ন ট্রাইব্যুনালের বিচারকবৃন্দ এবং ঝালকাঠি, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা ও ভোলা জেলার বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, সরকারি কৌসুলি, পাবলিক প্রসিকিউটরসহ অন্যান্য আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

মন্তব্য (০)





image

যুবশক্তিকে অন্তর্ভুক্ত না করে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়: প্রধ...

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বেকারত্ব টেকসই উন্নয়নের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্...

image

‎স্বাস্থ্যসেবা অর্থ উপার্জনকারীদের হাতে ছেড়ে দেওয়া উচিত ন...

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূ...

image

‎হাসিনা ও তার ঘনিষ্ঠদের বিচার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার: প্রধান...

নিউজ ডেস্কঃ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ঘনিষ্ঠ...

image

নারী প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে চাইলে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে যাওয়...

নিউজ ডেস্কঃ জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ও নির্বাচন ব্যবস...

image

‎কোনো অবস্থাতেই ফসলি জমি নষ্ট করা যাবে না: কৃষি উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জে...

  • company_logo