
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : ঝিনাইদহ-যশোর ৬ লেন প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণের কাজে নিয়োজিত জমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা আহম্মেদ সাদাতের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন জমির মালিকরা। অধিগ্রহণের টাকা চেয়ে আবেদনকারী কয়েকজন জমির মালিককে তিনি অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে তার অফিসে ঢুকতে নিষেধ করেছেন।
এ ঘটনায় খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কাছে প্রতিকার চেয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী জমির মালিকরা।লিখিত অভিযোগে দাবী করা হয়, ঝিনাইদহ-যশোর ৬ লেন প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হয়েছে।
জারি করা হয়েছে ৮ ধারার প্রজ্ঞাপন। ৮ ধারা নোটিশ জারির পর অধিগ্রহণের তালিকাভুক্ত জমির মালিকরা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অধিগ্রহণ শাখায় টাকা প্রাপ্তির লক্ষ্যে আবেদন শুরু করেন।
অধিগ্রহণকৃত জমির মালিকরা গত সপ্তাহে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা আহম্মেদ সাদাতের কাছে টাকা প্রাপ্তির আবেদন করেন। আবেদন জমা দিয়ে ভুক্তভোগীরা ওই কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি জমির মালিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।ভুক্তভোগীরা লিখিত অভিযোগে দাবী করেছেন, ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা আহম্মেদ সাদাত জমির মালিকদের উদ্দেশ্যে বলেন-’টাকা কি চাইলেই পাওয়া যায়, দেশটা কি মগের মুল্লুক?’ এ কথা বলে ওই কর্মকর্তা জমির মালিকদের তার অফিস থেকে বের করে দেন।পরে ভুক্তভোগীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আওয়ালের সঙ্গে দেখা করে ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মৌখিকভাবে অভিযোগ জানান। ওই সময় জেলা প্রশাসক জমির মালিকদের আবারও ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা আহম্মেদ সাদাতের অফিসে যেতে বলেন। জেলা প্রশাসকের কথা মতো ভুক্তভোগীরা ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তার অফিসে গেলে কর্মকর্তা আহম্মেদ সাদাত জমির মালিকদের সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় খারাপ ব্যাবহার করেন করেন।
প্রতিকার না পেয়ে জমির মালিকরা খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কাছে আহম্মেদ সাদাতের বিরুদ্ধে হয়রানি ও অসদাচরণের লিখিত অভিযোগ করেন। লিখিত অভিযোগপত্রে কালীগঞ্জ উপজেলার মৃত রফিউদ্দিনের ছেলে ফরিদউদ্দীন, সাজিদুল ইসলাম, সদর উপজেলার খয়েরতলা গ্রামের আক্কাস আলী ও মৃত জামাল উদ্দিনের ছেলে লুৎফর রহমান সাক্ষর করেন।এদিকে ঝিনাইদহ-যশোর ৬ লেন প্রকল্পে দীর্ঘদিন ধরে ধীরগতিতে চলছে ভূমি অধিগ্রহণের কাজ। গত মাসে ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা কিছুটা নিরসন হলেও অধিগ্রহণকৃত জমির মালিকদের টাকা প্রাপ্তির আবেদনকে ঘিরে ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা আহম্মেদ সাদাতের আপত্তিকর আচরণ ও হুমকি ধামকির ঘটনায় নতুন জটিলতা দেখা দিয়েছে।অভিযোগকারী মোঃ ফরিদ উদ্দীন জানান, তারা খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কাছে ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা আহম্মেদ সাদাতকে অপসারণের জন্য লিখিত অভিযোগ করেছেন। তিনি তার ড্রাইভারের মাধ্যমে উৎকোচ গ্রহণের জন্য নানা ভাবে জমির মালিকদের চাপে রাখার চেষ্টা করছেন।
বিষয়টি নিয়ে ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা আহম্মেদ সাদাত জানান, অভিযোগের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। কোন জমির মালিকের সঙ্গে তিনি কোন খারাপ আচরণ করেননি।জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আওয়াল বলেন, এমন অভিযোগ আমার কাছে দেওয়া হয়নি। যখন শুনলাম তখন তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন। তিনি বলেন বিভাগীয় কমিশনারের কাছে যেহেতু লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে সেখান থেকে কি নির্দেশনা আসে সেটা দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য (০)