
ছবিঃ সিএনআই
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ বাবা একজন সাধারণ মুদি দোকানি। মা গৃহিণীর কাজ করেন। সংসারে অভাব থাকলেও মেয়ের পড়াশোনার প্রতি সর্বদা সাহস ও প্রেরণা দিয়েছেন তারা। পরিবারের আর্থিক অবস্থায় কখনোই স্বাচ্ছন্দ্য ছিল না। তবুও থেমে থাকেনি ইয়াসমিন আক্তার পাখি। লেখাপড়ার খরচ চালাতে নিজের দায়িত্ব নিজেই কাঁধে তুলে নেয় পাখি। টিউশনি করে লেখাপড়ার খরচ চালাত সে। তবে নিজের প্রয়োজনের চেয়ে পরিবারের প্রয়োজনকেই বেশি প্রাধান্য দিত। এভাবেই সব প্রতিকূলতা পেছনে ফেলে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে এই অদম্য শিক্ষার্থী।
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রায়গঞ্জ ইউনিয়নের পশ্চিম রায়গঞ্জ গ্রামের আবুল কালামের মেয়ে ইয়াসমিন আক্তার পাখি। ভুরুঙ্গামারী উপজেলার আন্ধারীঝাড় আলহাজ মাহমুদ আলী বি এল বিদ্যালয় থেকে এসএসসি বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পরীক্ষা দিয়ে এই সাফল্য অর্জন করেছে সে। ভবিষ্যতে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে চিকিৎসক হতে চায় পাখি। তার এই সাফল্যে এলাকাবাসীও খুশি। হাবিব মিয়া (৫০) নামে এক প্রতিবেশী বলেন, পাখি খুবই পরিশ্রমী মেয়ে। নিজে পড়াশোনার পাশাপাশি আবার ছোট ছেলে-মেয়েদেরকে টিউশনির পড়ায়। আমি দেখেছি, অনেক কষ্টের মাঝেও সে কখনো পড়াশোনা ছাড়েনি। জিপিএ-৫ পাওয়ায় আমরা গ্রামবাসী খুশি।
আরেক প্রতিবেশি মোছা. আনোয়ারা বেগম (৫৫) বলেন, পাখি আমাদের গ্রামের গর্ব। তার বাবার দোকানে সামান্য আয়, তবুও মেয়েটি হাল ছাড়েনি। ও যদি লেখাপড়া করতে পারে তাহলে সে একদিন ডাক্তার হয়ে এই গ্রামের মানুষের জন্য অনেক কিছু করবে। আমরা সবাই ওর জন্য দোয়া করি। পাখির বান্ধবী সাথী আক্তার জানায়, পাখির স্বপ্ন অনেক বড়, কিন্তু সে কখনো অহংকার করে না। বরং আমাদেরও উৎসাহ দেয়। আর্থিক সংকটেও সে কখনো হতাশ হয়নি। টিউশনি পড়িয়ে নিজের খরচ চালিয়ে এভাবে লড়াই করা সত্যিই অসাধারণ।
ইয়াসমিন আক্তার পাখি জানায়, আমি টিউশনি পড়িয়ে নিজের লেখাপড়া করেছি। টিউশনি পড়িয়ে যে টাকা পাই তাই দিয়ে নিজের লেখাপড়া ও সংসারে কিছু খরচ দিতাম। বাবার মুদির দোকান থেকে কিছুটা আয় হতো, তাই দিয়ে চলতো। আমি একজন চিকিৎসক হয়ে গ্রামের সাধারণ মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে চাই। ইয়াসমিনের বাবা মো. আবুল কালাম বলেন, আমি মুদির দোকানি। আমার মেয়ে ৭ম শ্রেণি থেকে ছোট ছেলে-মেয়েদেরকে পাড়াত। সেখান থেকে যে টাকা পেত, সেই টাকা দিয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি সংসারে খরচ চালাত। মেয়ের ইচ্ছা ডাক্তার হবে। আমি তার লেখাপড়া করাতে চাই। সবাই আমার মেয়ের জন্য দোয়া করবেন।
আন্ধারীঝাড় আলহাজ্ব মাহমুদ আলী বি এল বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান বলেন, পাখি একজন মেধাবী ছাত্রী। সে জিপিএ ৫ পেয়েছে। যদি লেখাপড়া চালিয়ে যায়, তাহলে আরও ভালো করবে। আমি চাই তার আশা পূরণ হোক। আমাদের এবারের এসএসসিতে ১৪৭ জন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। এর মধ্যে ২৪ জন জিপিএ ৫ পেয়েছে। ২৭ জন ফেল করেছে। আমরা চেষ্টা করবো আগামীতে আরও ভালো ফলাফল করতে।
নিউজ ডেস্কঃ ২০২৫ সালের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছে। এবার গড় পাসের...
নিউজ ডেস্কঃ দেশে চলমান বন্যা পরিস্থিতির কারণে কুমিল্লা, মাদ্রাসা ও...
নিউজ ডেস্কঃ দুই মাসেরও কম সময়ের ব্যবধানে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ কর...
জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুরে ৪৮ জন কৃতী শিক্ষার্থীদের এককালীন শিক্ষাবৃত্তির...
নিউজ ডেস্কঃ সব ঠিক থাকলে আগামী ১০ জুলাই চলতি বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট...
মন্তব্য (০)