
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় শুরু হতে যাচ্ছে তিন দিনব্যাপী ১২তম এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ার। বিশ্ব পর্যটন দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত এ মেলা চলবে ১৮ থেকে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে এ আয়োজন।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) গুলশানের ক্রাউন প্লাজা হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ারের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন হেলাল।
তিনি জানান, এবারের মেলায় দুটি হলে থাকবে ১৮০টি বুথ। দেশি-বিদেশি হোটেল ও রিসোর্ট, এয়ারলাইন্স ও ক্রুজ কোম্পানি, ট্যুর অপারেটর, ট্রাভেল এজেন্সি, থিম পার্ক, সরকারি পর্যটন সংস্থা এবং ঢাকাস্থ বিভিন্ন বিদেশি দূতাবাস এতে অংশ নেবে। দর্শনার্থীরা মেলায় পাবেন নানা ভ্রমণ প্যাকেজ অফার, আকর্ষণীয় ডিসকাউন্ট এবং র্যাফেল ড্র-এ অংশ নেওয়ার সুযোগ।
এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ারের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন হেলাল বলেন, পর্যটন শুধু অর্থনীতির চালিকাশক্তি নয়, এটি আমাদের সংস্কৃতি ও জাতীয় পরিচয়ের বাহক। এই মেলার মাধ্যমে শুধু নতুন ভ্রমণ সুযোগই তৈরি হচ্ছে না, বরং আগামী প্রজন্মের জন্য একটি টেকসই পর্যটন শিল্প গড়ে তোলার প্রচেষ্টাও করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, মেলায় থাকছে শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, বিজনেস-টু-বিজনেস (বি২বি) সেশন, ডেস্টিনেশন ও প্রোডাক্ট প্রেজেন্টেশন, প্যানেল ডিসকাশন ও সেমিনার। এছাড়া বাংলাদেশ ও ফিলিপাইন দূতাবাসের উদ্যোগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং বাংলাদেশ ট্যুরিজম ইনভেস্টমেন্ট শোকেজ আয়োজন করা হবে। সেখানে পর্যটন খাতের আসন্ন প্রকল্প ও বিনিয়োগের সুযোগ তুলে ধরা হবে।
বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান সায়েমা শাহীন সুলতানা বলেন, ২০১৩ সাল থেকে এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ার দেশের পর্যটন শিল্পকে তুলে ধরার একটি বড় প্ল্যাটফর্ম হিসেবে আয়োজন করা হচ্ছে। তবে মাঝে কয়েক বছর এটি অনুষ্ঠিত না হলেও এবার বসছে ১২তম আসর। বাংলাদেশ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর হলেও পর্যটন খাত এখনো কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পৌঁছাতে পারেনি। যোগাযোগ অবকাঠামো ও প্রচার-প্রচারণার ঘাটতি থাকায় পর্যটন শিল্পের সম্ভাবনাকে যথাযথভাবে কাজে লাগানো যায়নি। তাই এ মেলা বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্র্যান্ডিং করার পাশাপাশি দেশি পর্যটন বাজারকেও ধরার জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে।
তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে ইনবাউন্ড পর্যটকের সংখ্যা প্রায় ছয় লাখ ৬০ হাজার, যা এক মিলিয়নে উন্নীত করা গেলে দেশের অর্থনীতি ও ভাবমূর্তির জন্য তা হবে সম্মানজনক অর্জন। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ পর্যটনে সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে; ভারত, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা অনেক এগিয়ে গেছে। এই অবস্থান পরিবর্তনে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন ও বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড বিভিন্ন কৌশল গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যে বিপণন নীতিমালা ও ট্যুরিজম স্যাটেলাইট অ্যাকাউন্টের কাজ চলছে। বক্তাদের প্রত্যাশা, এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ার বাংলাদেশের পর্যটন খাতকে এগিয়ে নিতে সফল ভূমিকা রাখবে।
মেলায় প্রবেশমূল্য ধরা হয়েছে ৩০ টাকা, তবে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করলে প্রবেশ একেবারেই বিনামূল্যে। মেলাটির আয়োজন করছে পর্যটন বিচিত্রা। সহযোগিতায় করছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড এবং ট্যুরিস্ট পুলিশ বাংলাদেশ।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ফিলিপাইন দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশন লিন আর গুতেররেজ, হাই কমিশন অব মালদ্বীপ টু ঢাকার ডেপুটি হাই কমিশনার আলী শাহ, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জেনারেল ম্যানেজার (সেলস) মোহাম্মদ সামসুল করিম, ক্রাউন প্লাজা ঢাকা গুলশানের জেনারেল ম্যানেজার কার্তিক ভীকি, এটিএফ উপদেষ্টা ও ট্রিয়াবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি খবির উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের উপ-পরিচালক নাজিম উদ্দিন, এটিজেএফবির সভাপতি তানজিম আনোয়ার প্রমুখ।
মন্তব্য (০)