কুড়িয়ে পাওয়া মহারাজ কে নিয়ে গেলেন তালা'র শিক্ষক দম্পত্তি

ছবিঃ সিএনআই

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: অবশেষে সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে উপজেলার পল্লীতে ব্যাগ থেকে উদ্ধার হওয়া সদ্যজাত শিশু ‘মহারাজ’ এর দত্তক পেলেন এক শিক্ষক দম্পতি। বুধবার (১৩ অক্টোবর) সাতক্ষীরার শিশু আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান এক আদেশে এই নির্দেশ প্রদান করেন । আদালত শিশুটিকে ওই দম্পতির হাতে তুলে দেওয়ার জন্য কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মোজাম্মেল হক রাসেল ও সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুল্যা আল মামুনসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। এ সংক্রান্ত একটি চিঠিও পৌছেছে দত্তক গ্রহীতা তালা উপজেলার রাঢ়ীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিখা রাণী চৌধুরী ও তার স্বামী যশোরের সাগরদাঁড়ি কারিগরি ও বাণিজ্য মহাবিদ্যালয়ের কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার বরুণ কুমার পালের হাতে ।

বিজ্ঞ আদালত তার পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করেন যে, যেহেতু সদ্যজাত শিশুটিকে কালিগঞ্জ উপজেলার তারালী ইউনিয়নের গোলখালি শ্মশানের কাছে একটি গাছে ব্যাগে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়, সেহেতু শিশুটি হিন্দু সম্প্রদায়ের পরিবারের বলে অনুমিত হয়। এই বিবেচনায় মোট ২৯ জনের করা আবেদন পত্র থেকে যাচাই বাছাই করে কেবলমাত্র আর্থিক অবস্থা বিবেচনা না করে সামাজিক ধর্মীয় ও অন্যান্য দৃষ্টিকোন থেকে আদালত শিশুটির মঙ্গলার্থে উক্ত শিক্ষক দম্পতিকে দত্তক দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করেন। শিশুটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে কালিগঞ্জ হাসপাতাল থেকে শিক্ষক দম্পত্তিকে হস্তান্তর করা হয়। অদ্য ঐ শিশুটির বয়স হলো সবে দশ দিন।

উল্লেখ্য যে, গত ৪ অক্টোবর-২০২০ তারিখে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের গোলখালি শ্মশানের অদুরে কার্পেটিং সড়কের পাশে একটি বাজারের ব্যাগে দুই এক ঘন্টা আগে ভূমিষ্ঠ হওয়া শিশুটিকে কে বা কারা ফেলে রেখে যায়। স্থানীয়রা দেখতে পেয়ে হতভাগা শিশুটিকে প্রথমে সার্জিকাল ক্লিনিক ও পরে কালিগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করেন। স্থানীয়রা ফুটফুটে এই শিশুটির নাম রাখেন ‘মহারাজ’ শিশুটিকে দত্তক পেতে ২৯ টি আবেদনপত্র আসে। কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোজাম্মেল হক রাসেল এর নেতৃত্বে গঠিত শিশু কল্যাণ বোর্ড শিশুটি গ্রহণের জন্য আবেদনপত্র আহবান করেন। এসব আবেদন শিশু কল্যাণ বোর্ড সাতক্ষীরা শিশু আদালতে পাঠায়। আদালত সোমবার এক আদেশে শিশু ‘মহারাজ’কে ওই শিক্ষক দম্পতির হাতে দত্তক হিসাবে তুলে দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করেন। আজ মঙ্গলবার (১৩/১০/২০২০) থেকে ঐ শিক্ষক দম্পত্তি হবেন মহারাজ এর পালক পিতা-মাতা।