• সমগ্র বাংলা

ফসলী জমিতে ড্রেজার দিয়ে পুকুর খননের হিড়িক!

  • সমগ্র বাংলা
  • ৩০ জানুয়ারী, ২০২০ ১৯:১৭:৫৬

শরীয়তপুর প্রতিনিধিঃ  শরীয়তপুরে ফসলী জমিতে ড্রেজার দিয়ে পুকুর খনন করে মাছ চাষের হিড়িক পড়েছে। ফলে আগামী দিনে দেশে খাদ্য ঘাটতির সম্ভাবনা রয়েছে।কৃষকরা বলছে ধান চাষ করে ন্যায্য মূল্য পাওয়া যায়না তাই পুকুর খনন করে মাছ চাষ করেছি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এর কোন প্রতিকারের ব্যবস্থা লক্ষ্য করা যাচ্ছেনা।
সরেজমিন ঘুরে ও স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, শরীয়তপুর জেলা বিভিন্ন উপজেলায় ভ্যেকু মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে ফসলী জমিতে পুকুর খনন করে মাছ চাষ করছে। এতে করে ফসলী জমি কমে আসছে।বিশেষ করে নড়িয়া উপজেলার বিঝারী কান্দাপাড়া ভেদরগঞ্জ উপজেলার ভেনপা, লাকার্তা, ছয়গাও (রানিসার) দামগারিয়া, গোসাইরহাট উপজেলার নাগেরপাড়া সদর উপজেলার দাত্রা ,পাটনিগাও, ডামুড্যা উপজেলার শিধলকুড়া সহ বিভিন্ন এলাকায় ভ্যেকু মেশিন দিয়ে অবৈধ ভাবে ফসলী জমিতে পুকুর খনন করছে। চলমান কাজে কেউ বাধা দিচ্ছেনা।
এমনি ভাবে প্রতি বছর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় শত শত একর ফসলী জমিতে ভ্যেকু মেশিন দিয়ে মাটি কেটে পুকুর খনন করে মাছ চাষের জন্য প্রোজেক্ট তৈরী করা হচ্ছে।এতে করে দিন দিন ফসলী জমি কমেই আসছে।
অথচ দেশে দিন দিন জনসংখ্যা বেড়েই চলছে। এত বড় বিশাল জনগোষ্ঠীর খাদ্য যোগাড়ের জন্য জমি না বাড়িয়ে বরং কমেই চলেছে। প্রশাসনের লোকজন দেখে ও না দেখার ভ্যান করছে। এলাকাবাসির অভিযোগ অসাদু কিছু সংখ্যক মাছ চাষীরা প্রশাসনের কাছে জমিতে শুকনো মৌসুমে ধানচাষ ও বর্ষা মৌসুমে মাছচাষের জন্য জমিতে বেড়িবাধ দেয়ার আবেদন করে। তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে তাদেরকে বেড়ি বাধ দেয়ার অনুমতি দেয়া হয়। এ সুযোগ পেয়ে অসাদু মাছ চাষীরা জমিতে পুকুর খনন করে । এরপর শুকনো মৌসুমে আর ধান চাষ করছেনা।কৃষকরা বলছে ইরি-বোরো চাষ করলে নিরানি ও ধান কাটার শ্রমিক পাওয়া যায় না। এরপর ধানের ন্যায্য মূল্য পাওয়া যায়না। জমি নিয়ে কৃষক পড়ে বিপাকে এ কারনে মাছ চাষীদের কাছে জমি লিজ দেয়া হয়। মাছ চাষীরা প্রতি মৌসুমে ২ শতাংশ জমির জন্য ৫শত টাকা দেয়। তাতে কোন খরচ নেই। ঘরে বসেই টাকা পাওয়া যায় । এ কারনে কৃষক বাধ্য হয়ে ফসলী জমিতে পুকুর খনন করতে লিজ দেয়।এমনি ভাবে পুকুর খনন অব্যাহত থাকলে মাঠে কোন ফসলী জমিই থাকবেনা। তখন চরম খাদ্য ঘাটতি দেখা দিবে।
এ কারনে বড় ধরনের কোন দূর্যোগ দেখা দেয়ার পূর্বেই লাগাম টেনে ধরা উচিৎ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।নড়িয়া উপজেলার ডিগাম্বরপট্রি গ্রামের নাসির আহম্মেদ আলী বলেন,ফসলী জমিতে পুকুর খনন করার কিছু সংখ্যক জমি জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে অনাবাদি পড়ে থাকে। তাতে কোন ফসল করা সম্ভব হয়না। তাই জরুরী ভিত্তিতে ফসলী জমিতে পুকুর খনন করা বন্ধ করা হোক।কান্দাপাড়া গ্রামের চানমিয়া হাওলাদার বলেন, কিছু সংখ্যক অসাদু মাছ ব্যবসায়ী প্রশাসনের কাছে শুকনো মৌসুমে ধান চাষ এবং বর্ষা মৌসুমে মাছ চাষের অনুমতি নিয়ে ফসলী জমিতে বেড়িবাধ দিয়ে মাছ চাষ করছে। শুকনো মৌসুমে ধান চাষ করছে না। তাতে করে দিন দিন জমির পরিমান কমেই আসছে। এতে করে ভবিষ্যৎ খাদ্য ঘাটতি চরম আকার ধারন করবে।ডামুড্যা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মূর্তুজা আল মুঈদ বলেন, ফসলী জমিতে পুকুর খনন করলে এ জমি আর কখনো খুজে পাওয়া যাবেনা। যে কারনে এ এলাকায় পুকুর খনন কালে আমি একটি ভ্যেকু মেশিনের মালিক কে জরিমানা করেছি। অপর একটি মেশিনের ব্যাটারী জব্দ করে রেখেছি।
এ ব্যাপারে শরীয়তপুর কৃষি বিভাগের উপপরিচালক মোঃ আমির হামজা বলেন, কোন সুনিদিষ্ট নির্দেশনা না থাকায় অভিযোগ পাওয়া না গেলে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারছিনা। তবে যে হারে এ জেলায় ফসলী জমিতে পুকুর খনন করা হচ্ছে তাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য খাদ্য ঘাটতিতে বড় ধরনের হুমকিতে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo