• সমগ্র বাংলা

স্বাধীনতার ৪দশকেও মুক্তিযোদ্ধার খেতাব পাননি গাজী আব্দুস সত্তার!

  • সমগ্র বাংলা
  • ২৬ জানুয়ারী, ২০২০ ২১:১২:১৫

মহেশখালী প্রতিনিধিঃ ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধে বাঙালির মুক্তিসংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন মুক্তিপাগল বাঙালিরা। মুক্তির নেশায় বিভোর ছিলেন তরুণ-তরুণী, যুবক-যুবতী, বৃদ্ধসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম’ এই ডাকে সাড়া দিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছিলেন গাজী আব্দুস সত্তার। মুক্তিযুদ্ধের ৪৮ বছর পেরিয়ে গেলেও কালের পরিক্রমায় এখনো তার নাম নেই বীরত্বগাথা সেই মুক্তিযোদ্ধার তালিকায়।
এ কারণে মুক্তিযোদ্ধার পরিবারটি হতাশ। তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য তার পরিবার ঘুরেছে কর্তৃপক্ষের দ্বারে দ্বারে। সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রমজান আলী বাহাদুরসহ অনেক মুক্তিযোদ্ধাই তার পক্ষে সুপারিশ করলেও তালিকায় নাম ওঠাতে ব্যর্থ হন। স্ত্রী-সন্তান রেখে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর অদম্য সাহস বুকে বেঁধে যুদ্ধ করেছিলেন গাজী আব্দুস সত্তার। মুক্তিযোদ্ধে কক্সবাজার জেলা ১ নং সেক্টরের অধীনে ছিল। সেক্টর কমান্ডার ছিলেন ।
তিনি প্লাটুন কমান্ডার পুলিন বিহারী শর্মার নেতৃত্বে যুদ্ধ করেন। ২০১৪ সালের ১৪ই মার্চ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কক্সবাজার জেলা কমান্ডের কমান্ডার রমজান আলী বাহাদুরের স্বাক্ষরিত একটি স্মারকে তিনি বলেন, ‘আমার জানামতে গাজী আব্দু সত্তার বাংলাদেশ মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তিনি ১৯৭১ সালে পাকসেনাদের বিরুদ্ধে প্লাটুন কমান্ডার পুলিন বিহারী শর্মার অধীনে চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। মুক্তিযোদ্ধা গাজী আব্দু সত্তারের ভাইপো জিএম হান্নান আমার সংবাদকে বলেন, ‘আমার চাচা মুক্তিযুদ্ধে সমর সম্মুখে পাকিস্তানি বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করেন। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধের সময় জীবন বাজী রেখে যুদ্ধ করার পরও আজ পর্যন্ত তিনি মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাননি। একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হয়েও আমার চাচা মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নেই।
বিষয়টির জন্য আমি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কক্সবাজার জেলা ইউনিটের এক সাবেক কমান্ডার বলেন, ‘উপজেলা কমান্ডার ওনাকে ব্যক্তিগতভাবে চিনতেন। আমি ওই স্মারকলিপিতে প্রতিস্বাক্ষর দিয়েছি।’ তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধের সময় অনেকে দালালি করেছে, এখন তারা মুক্তিযোদ্ধা। শুধু গাজী আব্দুস সত্তার নয়, অনেক প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার নাম তালিকায় নেই। মুক্তিযোদ্ধা গাজী আব্দু সত্তার'কে নিয়ে দৈনিক আমার সংবাদের প্রতিনিধি ও জয়যাত্রা টেলিভিশনের চট্টগ্রাম বিভাগীয় ব্যুরোচীফ ফুয়াদ মোহাম্মদ সবুজ জয়যাত্রা টেলিভিশনের প্রতিদিনের নিয়মিত অনুষ্ঠান দেশ সংযোগে লাইভ সম্প্রচার করলে মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চ কক্সবাজার জেলা কমিটি গাজী আব্দু সত্তারের বিষয়টি তদারকি করতে আসে, এবং তার সকল খরচ বহন করার আশ্বাস দেন।
মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চ কক্সবাজার জেলা কমিটির সভাপতি শরিফুল ইসলাম রনি বলেন গাজী আব্দু সত্তারের বিষয়ে আমরা খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পেরেছি যে তিনি আসলেই একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা, কিন্তু সময়ের পরিক্রমা ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস আদৌ তিনি মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাননি। আমরা আপাতত তার সকল খরচ বহনের দায়িত্বটা নিয়েছি, এবং তার মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাইয়ে দেওয়ার জন্য যতটুকু সার্বিক সহযোগিতা দরকার আমরা করবো। গাজী আব্দু সত্তারের বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রত্যায়নপত্র, দুই ইউপি চেয়ারম্যানের প্রত্যায়নপত্র, বাংলাদেশ স্বাধীনতা সংগ্রামের সনদপত্র ছাড়াও বিভিন্ন সময় মুক্তিযোদ্ধা তালিকা করণের আবেদন কপি আছে।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo