• বিশেষ প্রতিবেদন

সাতক্ষীরায় কুল উৎপাদনে সফল কৃষক

  • বিশেষ প্রতিবেদন
  • ০৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ ২১:০৪:১৯

ছবিঃ সিএনআই

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: গাছের ডালে থোকায় থোকায় ধরেছে কুল। কুলের ভারে ডাল ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম। গল্পটা সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার চন্দনপুর ইউনিয়নের রামভদ্রপুর গ্রামের। কৃষকরা সারাবছল অক্লান্ত পরিশ্রম করে গাছের পরিচর্যা করেন। গাছগুলো তাই কৃপণতা না করেই ব্যাপক ফলন দিয়েছে। কুল উৎপাদনে সাতক্ষীরা কৃষকরা এবার সফল। কিন্তু চাষীর ভাগ্য আটকে আছে ফড়িয়াদের হাতে। বাজার ব্যবস্থাপনা না থাকায় নায্য মূল্য পাচ্ছে না কুল চাষীরা।  

কুলচাষে ব্যপক ফলন হলেও বাজার ব্যবস্থাপনা না থাকায় কৃষকরা নায্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সারাদিন কুলের ক্ষেতে থেকে কুল ভেঙ্গে কার্টন করে তাই স্থানায় বাজার গুলোতে নামমাত্র দামে বিক্রয় করতে হচ্ছে এইসব সুমিষ্ট কুল।

কুল চাষী উল্কা বলেন অধিক লাভের আশায় কুল চাষে আগ্রহী আমরা। জমি লিজ, বন্ধক নিয়ে চাষ করে উৎপাদন করছি সুমিষ্ট এই কুল। আমার ক্ষেতে এবার ৫, ৬ রকমের কুল আছে, বলসুন্দরী কুল, থাই কুল, আপেল কুল, নারকেল কুল, স্থানীয় জাতের টক কুল, বল কুলসহ অন্যান্য জাতের কুল ও আছে। প্রচুর ফলন হলেও  বাজার ব্যবস্থাপনা না থাকায় দাম পাওয়া যাচ্ছে না। বাহিরের থেকে পার্টিরা এসে ফড়িয়াদের সাথে যোগসাজসে কৃষকরা নায্য মূল্য থেকে আমাদের বঞ্চিত করছে। সার, কিটনাশকের দাম বৃদ্ধিতে লোকসানে আমাদের প্রতিবছর লোকসানের মুখে পড়তে হয়।

সাতক্ষীরর কলারোয়ায় প্রায় দেড় যুগ ধরে এই কুলের আবাদ হচ্ছে। প্রচুর উৎপাদন ও সম্ভবনা থাকায় লেখাপড়ার পাশাপাশি অনেক বেকার যুবক যেমন এই কুল চাষ করছে। একই সাথে এই কুল চাষের সাথে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিন ইনকাম হচ্ছে তিনশত থেকে পাঁচশত টাকা।  

কমিশন ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক বলেন স্থানীয় বেলতলা বাজারে আড়তদার বলেন আমরা কমিশন ব্যবসার মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন পার্টির কাছে এই কুল হাকডাক করে বিক্রয় করে দেয় সেখান থেকে আমরা কমিশন পায়। সেই মাল দেশের বিভিন্ন বাজারে চলে যায়। আর এখানেই মধ্যস্বত্বভোগীর কপাল খোলে, লোকসানে পড়ে কৃষকরা।

সাতক্ষীরা জেলার কৃষি বিপণন কর্মকর্তা সালেহ্ মোহাম্মাদ আবদুল্লাহ কৃষকরা নায্যমূল্য পাচ্ছে না স্বীকার করে এই জানান ফড়িয়া, ও আড়তদার বেশি সুবিধা নিয়ে যায়। এ বিষয়ে আমরা কাজ করছি। অতিদ্রুত কৃষি বিপণন অফিসের মাধ্যমে কৃষকরা যেন নায্য মূল্যে কৃষি পণ্য বিক্রয় করতে পারে সে ব্যবস্থা গ্রহনের চেষ্টা চলছে।

কলারোয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু বলেন আমার এই সাতক্ষীরা জেলা নানান ধরনের ফল, ও শাক সবজি উৎপাদনের জন্য বিক্ষ্যাত কিন্তু কৃষকের পণ্য বিক্রয়ের জন্য ভালো বাজার ব্যবস্থাপনা না থাকায় কৃষকরা প্রান্তিক পর্যায়ে ক্ষীতগ্রস্থ হচ্ছে। সরকারের উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে কৃষকের নায্য মূল্য নিশ্চিত করার জোর দাবি জানান, এই জনপ্রতিনিধি।

জেলার শীর্ষ এই কৃষি কর্মকর্তা খামারবাড়ির উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো: সাইফুল ইসলাম বলেন, উপকূলীয় জেলার কৃষকরা যে পরিমান কুলের আবাদ করছে সেই ভাবে দাম পাচ্ছে না স্বীকার করে বলেন কৃষি বিপণন বিভাগসহ সকলকে একত্রে কাজ করার আহবান জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।  

কুল চাষাবাদ করে অল্প সময়ে অধিক লাভবান হওয়া যায় বলে বেকার যুবকরা এই পেশার সাথে জয়িয়ে পড়ছে। এবছর জেলায় এবার ৮ ‘শ, ৩০ হেক্টর জমিতে কুলের আবাদ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১০ হাজার মেট্রিক টনের বেশি। সম্ভবনাময় এই শিল্পকে এগিয়ে নিতে সরকারের পৃষ্টপোষকতার প্রয়োজন বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo