• বিশেষ প্রতিবেদন

তীব্র শীতে বগুড়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা, বিলম্বে জানায় সুফল পায়নি অধিকাংশ শিক্ষার্থী

  • বিশেষ প্রতিবেদন
  • ২২ জানুয়ারী, ২০২৪ ১৮:২০:৫৩

ছবিঃ সিএনআই

বগুড়া প্রতিনিধিঃ বগুড়ায় সোমবার সকালে এবারের মৌসুমে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ১ ডিগ্রী সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়িয়েছে উত্তরের হিমেল হাওয়া। এদিকে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নামায় জেলার সকল মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে সকাল সাতটায় তাপমাত্রা কমে যাওয়ার খবর পাওয়া গেলেও সকাল আটটার পরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা আসে। যার কারণে সকালের শিফটে থাকা জেলার অধিকাংশ বিদ্যালয় শিক্ষার্থীরাই স্কুল বন্ধের এই সুফল থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। আবার অনেকে বিদ্যালয় আসার পরে জানতে পেরেছেন যে শীতের কারণে প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে এতে করে বেশ ভোগান্তিতেই পড়েছিল শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ। 

এদিকে জেলার মাধ্যমিক ও প্রাথমিক সকল বিদ্যালয় বন্ধু ঘোষণার পরে শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীরা অন্যান্য দিনের ন্যায় যথারীতি বিদ্যালয়ে  আসছে। এছাড়াও সকালের শিফটে যথারীতি পাঠদান হয়েছে। তবে বন্ধ ঘোষণার পর শিক্ষার্থীদের বাসায় চলে যেতে বলা হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে মুঠোফোনে ছুটির ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হয়েছে মর্মে শিক্ষকরা জানালেও অভিভাবকদের দাবি তাদের জানানো হয়নি তবে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান ফটক এ ঝুলানো হয়েছে নোটিশ। 

বগুড়া ইয়াকুবিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ২য় শ্রেণীতে পড়া নিজের সন্তানকে প্রতিদিনের ন্যায় বিদ্যালয় ছুটির পর নিতে এসে একজন অভিভাবক জানান, এই শীতে তারা বড়রা যখন কাহিল হয়ে গেছেন তখন এর মাঝেই তাদের সন্তানদের ঘন কুয়াশার মাঝেই স্কুলে পাঠাতে হয় যা অত্যন্ত কষ্টদায়ক। তিনি বলেন আজ বগুড়ায় তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রীর নিচে থাকলেও স্কুল বন্ধের বিষয়ে তারা কিছুই জানতে পারেন নি, এমনকি বিদ্যালয় থেকে কোন বার্তাও পান নি। 

বিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণা এলেও প্রতিষ্ঠান চালু রাখার বিষয়ে ইয়াকুবিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক 

শাহাদাৎ হোসেন জানান, তাদের সকালের শিফট চালুর পরে তারা মূলত স্কুল বন্ধের নোটিশ পেয়েছেন তাই মেয়ে শিক্ষার্থীদের তাৎক্ষণিক আর ফেরত পাঠাতে পারেন নি। তবে এই নির্দেশনা গুলি আগে জানতে পারলে এই ধরনের বিড়ম্বনা হবে না।

তীব্র এই শীতে সাধারণ মানুষ যখন বিপর্যস্ত তখন সকালে ঘুম থেকে উঠে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে আসা সত্যিই অনেক কষ্টকর। এছাড়াও রয়েছে কোচিং এর বাড়তি চাপ। শিক্ষার্থীদের অনেকে জানান, প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে তাদের প্রথমে কোচিংয়ে যেতে হয় তারপর আসতে হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। অন্যান্য দিনের মত আজকেও বিদ্যালয় আসলে তারা জানতে পারেন প্রতিষ্ঠান সোমবার বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

সার্বিক প্রসঙ্গে বগুড়া জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, সোমবার সকালে আবহাওয়া অফিসের সূত্রে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার বিষয়ে তারা অবগত হওয়ার সাথে সাথেই জেলা মাধ্যমিক ও প্রাথমিক অফিসের সংশ্লিষ্টদের তিনি বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেন। তারপরেও বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানে নির্দেশনাটি পৌঁছাতে কিছুটা বিলম্ব হয়ে যায় তবে এ বিষয়ে পরবর্তী থেকে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষসহ শিক্ষা অফিসের সংশ্লিষ্টদের আগে থেকেই দায়িত্বশীল থাকার বিষয়ে তিনি নির্দেশনা দিয়েছেন। সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন সকাল ৬ টায় আবহাওয়া অফিস থেকে তাপমাত্রা জানার পরে তা যদি ১০ ডিগ্রির নিচে থাকে তাহলে দ্রুততম সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হবে। কোন শিক্ষার্থীকে যেন বিদ্যালয় এসে জানতে না হয় যে তাদের প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে এ বিষয়ে শিক্ষা অফিসের সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে।

জানা গেছে, চলতি মাসের শুরু থেকেই বগুড়ায় তাপমাত্রা কমতে থাকে। ১৬ জানুয়ারি জেলায় ১০ দশমিক ৪ ডিগ্রী তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। আর আজ সকালে তাপমাত্রা ৯ দশমিক ১ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এর মাঝেই শীতের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন বগুড়া আবহাওয়া অফিস। 

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo