• বিশেষ প্রতিবেদন
  • লিড নিউজ

 দেশজুড়ে খ্যাতি লাভ করেছে বিজয়নগরের লালি গুড়

  • বিশেষ প্রতিবেদন
  • লিড নিউজ
  • ২০ জানুয়ারী, ২০২৪ ১৩:০২:৩০

ছবিঃ সিএনআই

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি : বিজয়নগরের উৎপাদিত আখের রসের লালি দেশজুড়ে খ্যাতি লাভ করেছে। কৃষি নির্ভর বিজয়নগর উপজেলায় গত কয়েকযুগ ধরে উৎপাদিত হচ্ছে আখের রসের লালি। মূলত শীতকালেই এই লালি উৎপাদিত হয়। এই লালি পিঠা—পুলিরসাথে খেতে পছন্দ করেন ভোজন রসিকরা। আবার অনেকে মুড়ির সাথেও খান এই লালি । চলতি বছর প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ টাকার লালি বিক্রি হবে বলে আশাবাদ  ব্যক্ত করেছেন কৃষি সংশ্লিষ্টতা। কৃষি বিভাগের দেয়া তথ্য মতে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সদর উপজেলা, বিজয়নগর উপজেলা, কসবা উপজেলা ও আখাউড়া উপজেলার কিছু এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে আখ চাষ করা হয়। এসব আখের রস থেকে লালি উৎপাদন করেন চাষীরা।চলতি বছর বিজয়নগর উপজেলার ২৫ হেক্টর জমিতে আখের চাষ হয়। এই আখ থেকে অন্তত ১শ টনেরও বেশি লালি উৎপাদন হবে আশা করছেন কৃষি বিভাগ। যার বাজার মূল্য কমপক্ষে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা।

বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণুপুর, দুলালপুর ও বক্তারমুড়া গ্রামের অর্ধশতাধিক পরিবার বংশ পরস্পরায় বাণিজিক্যভাবে লালি উৎপাদন করে আসছে। প্রতিবছর শীতের শুরুতে শুরু হয় লালি তৈরির কাজ। মূলত নভেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত চলে লালি তৈরি ও কেনা— বেচা। প্রতি কেজি লালি বা তরল গুড় খুচরা বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায় । প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন এলাকা ও আশপাশ এলাকা থেকে মানুষ লালি তৈরী দেখতে যায় বিজয়নগরে । অনেকে ফিরে যাওয়ার সময় লালি নিয়ে যাওয়া সহ আখের রস খেয়ে যান ।প্রতিদিন ভোর থেকে সন্ধ্যা পযন্ত চলে লালি তৈরির কাজ । প্রথমেই চলে আখ মাড়াই । পরে মহিষের ঘানি দিয়ে আখ মাড়াই করে আখের রস সংগ্রহ করা হয়। পরে রস ছাকনি দিয়ে ছেকে রাখা হয় বড় কড়াইয়ে । পরবর্তীতে এই রস দুই থেকে তিন ঘণ্টা জ্বাল দিয়ে ঘন করা হয়। জ্বাল দিয়ে রস লাল রং ধারণ করলে নামানো হয় কড়াই থেকে এভাবেই তৈরি হয় মুখরোচক লালি বা তরল গুড় ।

লালি নিতে আসা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরউপজেলার মোঃ আরমান জানান, প্রতি বছরই শীত মৌসুমে তিনি বিষ্ণুপুর থেকে লালি কিনে নিয়ে যান । তার বাড়ির সবাই এই লালি খুবই পছন্দ করেন । তিনি জানান, পিঠার সাথে লালি খেতে খুবই ভালো লাগে ।

বিষ্ণুপুর গ্রামের বাসিন্দা ও লালি উৎপাদনকারী মোঃ জাহিদ হাসান(৩০), মোঃ শাহিন মিয়া(৩৮) ও জানান, কয়েক বছর আগেও তাদের গ্রামের অধিকাংশ মানুষ আখ চাষ করতো । বর্তমানে কমে যাচ্ছে আখ চাষীর সংখ্যা।আবার আখ কাটা ও মাড়াইয়ের কাজে শ্রমিকের মজুরি বেড়েছে । ঘানি টানানোর জন্য লাখ টাকা বা তার চেয়ে বেশি দিয়ে মহিষ কিনতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে লালি তৈরিতে যে খরচ পড়ছে ৭লাখ—৮লাখ টাকা, সে অনুযায়ি দাম পাওয়া যায় না। একই গ্রামের আরেকজন লালি চাষী শাহনেওয়াজ(৪০) জানান, বংশ পরস্পরায় তিনি লালি তৈরি করে আসছেন । তবে ভালো লাভ না হওয়ায় বিগত সময়ের চেয়ে এবার কম জমিতে আখ চাষ করেছেন ।

এ ব্যাপারে বিজয়নগর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার জুনায়েদ আল সাদী জানান, লালিগুড় ধ তৈরিতে কোন ধরনের ক্ষতিকর কেমিক্যাল মেশানো হয় না। ক্ষতিকর কোন উপাদান র ব্যবহার না করায় সারাদেশেই লালির জনপ্রিয়তা রয়েছে। লালি গুড় উৎপাদনের সংশ্লিষ্টদের উপজেলা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে পরামর্শ ও সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে।

 

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo