• অপরাধ ও দুর্নীতি

বগুড়ায় ৪ শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাত: গ্রেফতার ছিনতাইকারী চক্রের এক কিশোর

  • অপরাধ ও দুর্নীতি
  • ২৬ অক্টোবর, ২০২২ ২৩:১৫:১৯

ছবিঃ সিএনআই

সঞ্জু রায়, বগুড়া: বগুড়ায় প্রকাশ্য দিবালোকে একঘণ্টার ব্যবধানে সরকারি আজিজুল হক কলেজের শিক্ষার্থীসহ চার শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে তারা বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। আর এ ঘটনায় সদর থানা পুলিশ ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরকে গ্রেফতার করেছে। প্রাথমিকভাবে ছিনতাই এর উদ্দেশ্যেই ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করছে পুলিশ।

বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে শহরের তিনমাথা আদর্শ ডিগ্রী মহাবিদ্যালয় ও শহরের আমতলা মোড়ে দুপুর আড়াইটার দিকে ছুরিকাঘাতের এই ঘটনা ঘটে। ছুরিকাহত চারজন শিক্ষার্থী হলেন, সরকারি আজিজুল হক কলেজের বাংলা বিভাগের ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী মো: তুষার (২০), সরকারি শাহ সুলতান কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী সোহান আলী (১৯), পল্লীমঙ্গল উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মো: রাশেদ (১৮) ও ক্যাডেট মাদ্রাসা পালশার দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মো: সাকিব (১৬)। এদের মধ্যে সরকারি আজিজুল হক কলেজের শিক্ষার্থী তুষারকে দুপুর দেড়টার দিকে শহরের আমতলা মোড় ও বাকি তিনজনকে আড়াইটার দিকে আদর্শ ডিগ্রী মহাবিদ্যালয়ের সামনে ছুরিকাঘাত করা হয় বলে ঘটনাস্থল সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

বিষয়গুলো নিশ্চিত করেছেন বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ নূরে আলম সিদ্দিকী।  এছাড়াও বগুড়া সদর থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ছুরিকাহত চারজন শিক্ষার্থী কেউ কারও পূর্ব পরিচিত নয়। প্রাথমিকভাবে আহত চারজন শিক্ষার্থী জানিয়েছে, দুর্বৃত্তরা সবার হাতে দেশীয় অস্ত্র ও হকিস্টিক ছিল।

সরকারি আজিজুল হক কলেজের বাংলা বিভাগের ছুরিকাহত শিক্ষার্থী তুষার এর সাথে কথা বললে তিনি জানান, দুপুর দেড়টার দিকে ছাত্রবাস থেকে বের হয়ে সে আমতলা মোড়ে গিয়েছিল। এসময় কয়েকজন দুর্বৃত্ত মোটরসাইকেলে করে এসে তার মুঠোফোন ও ম্যানিবাগ কেড়ে নেয়। তাদের বাঁধা দিতে গেলে তাকে ছুরিকাহত করে ও হকিস্টিক দিয়ে বেদম পেটায়।

এছাড়াও পল্লীমঙ্গল উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী রাশেদ জানান, সে স্কুল শেষ করে বাড়ি ফিরছিলেন। এসময় ১০ থেকে ১৫ জন যুবক দেশীর অস্ত্র ও হকিস্টিক হাতে তাকে ডাক দেয়। তাদের কথা না শুনে পালানোর চেষ্টা করলে তাকে জোরপূর্বক ছুরিকাহত করে তারা। তাদের কাউকেই চেনেনা বলে জানান রাশেদ।

ছুরিকাঘাতের পর সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে বুধবার সন্ধ্যায় বগুড়া সদর থানার স্টেডিয়াম পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর হরিদাস মন্ডলের সাথে কথা বললে তিনি জানান, ঘটনার পর থেকেই সদর থানা পুলিশের একাধিক টিম মাঠে রয়েছেছু।

রিকাঘাতের শিকার শিক্ষার্থীদের পরিবারের কেউ এখনও থানায় অভিযোগ না দিলেও পুলিশি অভিযানে এই ঘটনায় জড়িত এক কিশোরকে ঘটনার পরপরই বিকেল আনুমানিক ৪টার দিকে শহরের হাছেন আলী মার্কেটের ভিতর থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত চাকুসহ গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্তে প্রাথমিকভাবে ছুরিকাঘাতের ঘটনাগুলো ছিনতাই এর উদ্দেশ্যেই সংঘটিত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গ্রেফতার কিশোর জানায় যে তারা ৩ জন ছিলেন তবে পুলিশের ধারণা এই ঘটনায় আরো অনেকে জড়িত তাদের গ্রেফতারেও পুলিশি অভিযান চলমান রয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে বুধবার প্রকাশ্য দিবালোকে এক ঘন্টার ব্যবধানে ৪ জন শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাতের ঘটনায় শহরের বিভিন্ন স্থানে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। পুলিশের অভিযানের পরও কিশোর গ্যাং এর এসব সদস্য কিংবা সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যদের দৌরাত্ম এতটা নেতিবাচকভাবে বৃদ্ধি পেলো কিভাবে এসব নানা প্রশ্নে শহরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বগুড়ার সুশীল সমাজের অনেকেই। 

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo