মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি : মানিকগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপির সমন্বয় সভায় এনসিপির উত্তর অঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলমের সাথে মানিকগঞ্জের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক ওমর ফারুক ওরফে দাড়ি ওমরের বাকবিতণ্ডার ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জ শহরের সিটি ড্রিম হোটেল মিলনায়তনে সমন্বয় সভায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ঐ সমন্বয় সভায় তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
জানা গেছে, পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে মানিকগঞ্জে এক সভার আয়োজন করে এনসিপি। এনসিপির নেতা কর্মীদের নিয়ে সমন্বয় সভা শেষে গণমাধ্যমে কথা বলার আগে মানিকগঞ্জের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক ওমর ফারুকের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে সারজিস আলম।
এ সময় ওমর ফারুক বলেন, আপনারদের সঙ্গে জামায়াত, ছাত্রলীগের লোকজনক কিভাবে এক মঞ্চে বসতে পারে। কেউ দালালী করে তো এখানে আসতে পারে। এসব কথা বলার পর পরই সারজিস ফারুককে উদ্দেশ্য করে বলেন, এখানে তো আপনিই সমস্যা, মিডিয়ার সামনে কেন আপনাকে এসব বলতে হবে। কেউ জামায়াত করলে কি এনসিপি করতে পারবে না। বাকবিতণ্ডার সময় জেলার এনসিপির এক নেতা সাংবাদিকদের ক্যামেরা বন্ধ করার কথাও বলেন। এ নিয়ে ঘটনার কিছুক্ষণ পরই একটি ভিডিও মানিকগঞ্জের স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ভাইরাল হয়।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, ওমর ফারুক সারজিস আলমকে উদ্দেশ্য করে ধমকের সুরে বলছে, এনসিপির প্রোগ্রামে ছাত্রলীগের ক্যাডাররা। আমরা এই জায়গার স্টেক হোল্ডার, উনি জামায়াতের লোক।
উত্তরে সারজিস আলম বলেন, জামায়াতের কেউ এনসিপিতে আসতে পারে না। আপনি এদিকে আসেন। আপনার কি সমস্যা, আপনি মিডিয়ার সামনে এসব কথা বলতে পারেন না।
ঘটনাটির পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ও স্থানীয় জনসাধারনের মাঝে নানা আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
এর আগে সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সারজিস আলম বলেন, নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। ফেব্রুয়ারিতেও নির্বাচন হতে পারে। কিন্তু তার আগে সরকারকে জুলাই সনদের আইনগত ভিত্তি দিতে হবে, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা দিতে হবে এবং দৃশ্যমান বিচার প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। পাশাপাশি নির্বাচন স্বাধীন ও নিরপেক্ষ হতে হবে। তাহলে ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে আমাদের কোনো সমস্যা থাকবে না।
সারজিস বলেন, শাপলা প্রতীক না দেয়ার ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন আইনগত ভিত্তি দেখাতে পারেনি। নির্বাচন কমিশন যদি তাদের মন মত স্বেচ্ছাচারি আচরণ করে বলে থাকে যে এনসিপি শাপলা প্রতীক পাবে না। তাহলে ওই স্বেচ্ছাচারি নির্বাচন কমিশন আগামীর বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে পারবে না। তাদের ওপর দেশের মানুষের আস্থা থাকবে না এবং এনসিপিরও নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা থাকবে না। আর গণভোট জুলাই সনদের পক্ষে আসলে এনসিপি যে কোনো দিন স্বাক্ষর করবে।
সারজিস আলম আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন নিশ্চয় কোন ব্যক্তি হোক, কোন প্রতিষ্ঠান হোক বা কোন রাজনৈতিক দল হোক, তাদের দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে। এজন্য নির্বাচন কমিশন তাদের সত্তা, স্বাধীনতা ও সক্রিয়তা বজায় রাখতে পারছেন না। এ সময় এনসিপির ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল্লাহ হায়দার, এনসিপির মানিকগঞ্জ জেলার প্রধান সমন্বয়কারী জাহিদ তালুকদার ও যুগ্ম সমন্বয়কারী এ.এইচ.এম মাহফুজসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য (০)