
নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর রাণীনগর সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের গাছ নিলামে ৫টি কর্তন করার কথা থাকলেও কর্তন করা হয়েছে ৯টি। এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। বিদ্যালয়ের দায়িত্বরত ভারপ্রাপ্ত প্রাধান শিক্ষকের গোপনে গাছ কাটার এই ঘটনাসহ নানা অনিয়ম ইতিমধ্যেই স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায় যে, ওই স্কুলের পশ্চিম দিকের ভবনের পেছনে একটি মেহেগনি গাছের বাগান রয়েছে। সেই বাগানে ঝড়ে পড়া ৫টি মেহেগনি গাছ গত আগস্ট মাসের ৩১তারিখে নিলাম কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উপস্থিতিতে তার কার্যালয়ে নিলাম ডাকের মাধ্যমে সরকারি ১৪৩৮৪টাকায় বিক্রি করা হয়। নিলাম ডাকের সাত কর্মদিবসের মধ্যে নিলামের সকল অর্থ জমা দিয়ে নিজ খরচে গাছগুলো কর্তন করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়। স্কুলের ভেতরে বসবাসরতদের মারফত জানা যায় ওই স্থানে ৯টি মেহেগনি গাছ ছিলো। নিলাম প্রাপ্ত ব্যক্তি ৫টি গাছের স্থানে ৯টি গাছ নিয়ে গেছেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী মতিউর রহমান উজ্জ্বল জানান বহুবছর ধরে শিক্ষকদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে স্কুলের পাঠদান পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। তার উপর আবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের নানা অনিয়ম আর দুর্নীতি সেই দুর্নামের পাল্লাকে আরো ভারী করে চলেছে। গাছ বিক্রির কথা স্থানীয় কেউ তেমন একটা অবগত নয়। দায়িত্বরত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো: আব্দুস সোবহান মৃধা কৌশল করে নিজেই একজন ছেলেকে ব্যবহার করে নিলামে গাছগুলো ডেকে নেন। এরপর শুক্রবার ছুটির দিন তিনি দায়িত্বশীল কোন ব্যক্তির উপস্থিতি ছাড়াই গোপনে ৫টি গাছের পরিবর্তে ৯টি গাছ কর্তন করেছেন। যে শিক্ষক সামান্য ক’টি গাছের লোভ সামলাতে পারেন না সেই শিক্ষক দ্বারা ওই বিদ্যালয়ের কতটুকু মঙ্গল হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়। আমরা স্থানীয়রা এমন অন্যায় কাজের কঠোর দৃষ্টান্তরমূলক শাস্তি দাবি করছি।
বিদ্যালয়ের আরেক প্রধান শিক্ষক মো: নজরুল ইসলাম বলেন অনেক আগেই স্কুলের বর্তমান দায়িত্বরত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার কারণে স্কুলের পাঠদানের সুন্দর পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কোন দায়িত্বশীল ব্যক্তির উপস্থিতি ছাড়াই সরকারি স্কুলের একজন দায়িত্বরত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক গোপনে সরকারি প্রতিষ্ঠানের নিলামের গাছ কর্তন করবেন এটা অত্যন্ত দু:খ্যজনক। প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে তদন্ত সাপেক্ষে এমন দুর্নীতিবাজ শিক্ষকের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের কোন বিকল্প নেই।
বিদ্যালয়ের দায়িত্বরত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো: আব্দুস সোবহান মৃধা মুঠোফোনে জানান নিলাম অনুসারেই গাছগুলো কর্তন করা হয়েছে। অনেকে শত্রুতা করে তার নামে মিথ্যে তথ্য প্রচার করছে বলে তিনি দাবী জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নিলাম কমিটির সভাপতি মো: রাকিবুল হাসান মুঠোফোনে জানান বিষয়টি তিনি লোকমুখে জেনেছেন। নিলামে উল্লেখ করা ৫টি গাছের স্থানে ১টি গাছও বেশি কর্তন করার কোন সুযোগ নেই। এই বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানান এই কর্মকর্তা।
মন্তব্য (০)