• অপরাধ ও দুর্নীতি

চিরিরবন্দরে তরুনী ধর্ষন মামলায় ৫ আসামির মধ্যে গ্রেপ্তার- ২

  • অপরাধ ও দুর্নীতি
  • ১৯ নভেম্বর, ২০২৩ ১৫:৩৬:১২

ছবিঃ সিএনআই

দিনাজপুর প্রতিনিধিঃ দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে তরুনী অপহরন এবং গণধর্ষন মামলায় অভিযুক্ত ৫ আসামির মধ্যে ২ জনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে আইন প্রয়োগকারি সংস্হা। গত ১৪ নভেম্বর মঙ্গলবার রাতে গণধর্ষনের ওই ঘটনা ঘটেছে। এব্যাপারে আজ রবিবার দুপুরে গণমাধ্যমকর্মীদের ব্রিফিং করেছেন পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ। এসময় উপস্হিত ছিলেন বিচারের দাবিতে আন্দোলনরত মহিলা পরিষদের নেত্রীসহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা।

এদিকে ঘটনা তদন্তে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ মোহাম্মদ জিন্নাহ আল মামুনকে প্রধান করে একটি তদন্ত গঠন করা হয়েছে। অন্যদিকে জড়িত প্রকৃত অপরাধিদের বিচারের আওতায় আনতে আন্দোলনে নেমেছে মহিলা পরিষদের নেতাকর্মীরা। পুলিশ সুপারের কাছে আজ রবিবার স্মারকলিপি পেশ করেছেন তারা।

প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার জানান, ঘর বাঁধার স্বপ্নে গত ১৪ নভেম্বর মঙ্গলবার রাতে প্রেমিকের সাথে পাড়ি জমানোর সময় চিরিরবন্দরের ঘুঘরাতলীতে প্রেমিকসহ তরুনীকে আটক করে অপহরন করে স্হানীয় কয়েকজন যুবক। এসময় উভয়কে ভ্যানে তুলে ৫নং আব্দুলপুর ইউনিয়নের সরকারপাড়াস্থ মাঝাপাড়া পুরাতন জামে মসজিদ সংলগ্ন একটি নির্মানাধীন ভবনে নিয়ে যায় তারা। এসময় প্রেমিককে আটকে রেখে তরুনীকে ধর্ষনের চেষ্টা চালানোর সময় দ্বীতল ভবনের ছাদ থেকে নিচে ফেলে দিয়ে আহত অবস্হায় কাতর তরুনীকে ধানক্ষেতে রাত সাড়ে ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত পালাকরে গন ধর্ষন করে অপহরনকারিরা পালিয়ে যায়।

পরে জরুরী সেবা ৯৯৯ নম্বরের মাধ্যমে ফোন কোলে প্রেমিকসহ ধর্ষিতাকে উদ্ধার করে চিরিরবন্দর থানা পুলিশ।  ধর্ষিতাকে প্রথমে দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য  তাকে রংপুর মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে। তরুনীর ভাষ্য মতে তাকে ৫জন ধর্ষন করেছে। তবে বোনকে ধর্ষনের ঘটনায় থানায় ৪জনকে আসামি করে পরদিন ১৫ নভেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২০০০ এর ৭/৯(৩)/৩০ এর ধারায় মামলা করেছেন ধর্ষিতার বড় বোন। মামলা নম্বর ১৬। 

অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছে চিরিরবন্দরের রেলকোলনীর আনছার আলীর ছেলে (পেশায় একজন প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতার ব্যক্তিগত গাড়ী চালক)  মুবিন (২৩),  মাঝাপাড়ার আব্দুল গনি দুলুর ছেলে আল-আমিন (২৬), রেল কোলনীর আসাদুল হকের ছেলে সাব্বির হোসেন (২৭) এবং হাবিবুর রহমান হবির পালিত ছেলে রাব্বি (২৬)। 

জানা গেছে, ধর্ষন ঘটনাটির দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্হা নিতে সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ পিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মমিনুল করিম এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আব্দুল্লাহ আল মাসুমের সমন্বিত পরিকল্পনায় অভিযানে নামেন সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ মোহাম্মদ জিন্নাহ আল মামুন, চিরিরবন্দর থানার ইনচার্জ ইনচার্জ বজলুর রশিদ,  মামলার আইও পুলিশ পরিদর্শক জাকির শিকদার, উপ পরিদর্শক  জাহাঙ্গীর বাদশা রনিসহ অন্যান্যরা।

তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অপরাধীর অবস্থান সনাক্ত করে গতকাল ১৮ নভেম্বর ভোরে চিরিরন্দরের রেলকলোনীতে মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে ( এজাহারে নাম নেই)  রুবেল ইসলাম (৩০) এবং র‍্যাব-৬ এর সহায়তায় বাগেরহাট জেলার কচুয়া থানাধীন নরেন্দ্রপুর মোল্লাপাড়া গ্রাম হতে এজাহার নামীয় ২নং আসামী আল-আমিন (২৬) কে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে। এজাহার নামীয়সহ জড়িতরা আত্বগোপন করেছে।

 এদিকে ঘটনার বিষয়ে চিরিরবন্দরে নান্দেড়াই গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে ভ্যান চালক মতিউর রহমান (৩৫) এবং পঞ্চগড় সদরের মাগুড়া এলাকার বাসিন্দা ধর্ষিতা তরুনীর প্রেমিক মাসুদ রানার (২৪) আদালতে আগাম স্বাক্ষ্য রেকর্ড করানো হয়েছে। অন্যদিকে নিজস্ব তদন্তের উদ্ধৃতি উল্লেখ করে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের জেলা শাখার সভাপতি কানিজ রহমান এবং আন্দোলন সম্পাদক গৌরী চক্রবর্তী স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে দাবি করা হয়েছে।

ধর্ষনের সাথে চিরিরবন্দরের প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা আলিম সরকারের ছেলে নুর আলম ও তার ব্যক্তিগত গাড়ী চালক মুবিনের সহযোগিতায় ওই তরুনীকে অপহরন এবং ধর্ষনে জড়িত থাকলে নেতার ছেলের নাম মামলায় বাদ দেওয়া হয়েছে।  জড়িতদের প্রভাবশালীর ছেলেকে আইনের আওতায় আনতে দাবি জানিয়েছেন তারা।জবাবে পুলিশ সুপার জানান, তদন্তে সংশ্নিষ্টার প্রমান পাওয়া গেলে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার সুযোগ রয়েছে।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo