• অর্থনীতি

চলনবিলাঞ্চলে এবার ২৫ কোটি টাকার মধু উৎপাদনের সম্ভাবনা

  • অর্থনীতি
  • ২৯ ডিসেম্বর, ২০২০ ১৫:১৩:৩৬

ছবিঃ সিএনআই

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি : পাবনার চাটমোহর,ভাঙ্গুড়াসহ চলনবিল অঞ্চলে এখন প্রায় ১ হাজার মৌচাষী বাণিজ্যিকভাবে মধু উৎপাদন ও সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসে তারা চলনবিলের বিভিন্ন স্থানে মৌমাছির বাক্সসহ অবস্থান নিয়েছেন। চলতি মৌসুমে এ অঞ্চল থেকে ২৫ কোটি টাকার মধু সংগ্রহ হবে বলে আশা করছেন তারা।

জানা গেছে, চলনবিল অধ্যুষিত চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর, বড়াইগ্রাম, গুরুদাসপুর, সিংড়া, তাড়াশ, উল্লাপাড়া ও শাহজাদপুর উপজেলায় গত এক দশক ধরে রবি মৌসুমে সরিষা ফুল থেকে কোটি কোটি টাকার মধু সংগ্রহ করা হচ্ছে। এবারও বগুড়া, যশোর, কুষ্টিয়া, সাতক্ষীরা, পাবনা, নাটোর ও সিরাজগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলার প্রায় ১ হাজার মৌচাষী মধু সংগ্রহের জন্য চলনবিলের সরিষার ক্ষেতের পাশে কয়েক হাজার হাজার মৌ-বাক্স বসিয়েছেন।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসূমে চলনবিলের ৯ উপজেলায় প্রায় ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের সরিষার চাষ হয়েছে। এরই মধ্যে চলনবিল সরিষার ফুলে ভরে উঠেছে। আর সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহের জন্য মাসখানেক আগে থেকেই মৌচাষীরা বিলের সুবিধাজনক স্থানে অস্থায়ী আবাস গড়েছেন।

বর্তমানে এ বিল লাখ লাখ মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত হয়ে উঠেছে। এতে একদিকে মৌচাষীরা মধু সংগ্রহ করে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হচ্ছেন, অন্যদিকে সরিষার ফলনও বাড়ছে। উত্তরবঙ্গ মৌচাষী সমিতির সভাপতি চাটমোহরের জাহাঙ্গীর আলম জানান, তার মোট ৩০টি মৌ-বাক্স রয়েছে। যা থেকে তিনি প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৪ মণ মধু সংগ্রহ করতে পারেন। তাদের সংগৃহীত এসব মধু ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বলে জানান এই চাষি। তিনি জানান, এবার মধুর দাম বেশী। ফলে ২৫ কোটি টাকারও বেশী মধু উৎপাদন হবে। উল্লাপাড়া উপজেলার গয়হাট্টায় তার খামার রয়েছে। উত্তরবঙ্গ মৌচাষী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আঃ আহাদ জানালেন,
তার ১শ’টি মৌ-বাক্স রয়েছে। যা থেকে প্রতি সপ্তাহে মধু উৎপাদন হচ্ছে ১২ থেকে ১৫ মণ।

একই কথা বললেন পাবনা জেলা মৌচাষী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ঈশ্বরদীর শাজাহান আলী। সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম জানালেন এবার কমপক্ষে ১ হাজার ৫শ’ মে,টন মধু সংগ্রহ হবে। পরিকল্পিতভাবে মৌচাষ হলে এ অঞ্চলে ৩ হাজার মে.টন মধু সংগ্রহ করা সম্ভব। বিভিন্ন কোম্পানীর কাছে পাইকারী ৫ হাজার টাকা মণ
দরে মধু বিক্রি করা হচ্ছে।

এদিকে,চলনবিলের খাঁটি মধু সংগ্রহের জন্য প্রাণ,স্কয়ার, এপিসহ বিভিন্ন বড় বড় কোম্পানির প্রতিনিধিরা ইতিমধ্যেই এখানে আসতে শুরু করেছেন। কোম্পানির প্রতিনিধিরা জানান, চলনবিলের মধুর গুণগত মান খুবই ভালো। এসব মধু সংগ্রহ করে প্রতি কেজি ২৫০ টাকা দরে বাজারজাত করা যায়। চাটমোহর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এ এ মাসুমবিল্লাহ জানান,যেসব সরিষার জমি থেকে মৌমাছিরা মধু সংগ্রহ করেন, সেসব জমির সরিষার ফুলে সঠিকভাবে পরাগায়ন ঘটে। ফলে সেসব জমির সরিষার ফলন ২৫-৩০ ভাগ বেড়ে যায়।

তিনি জানান,আবহাওয়া অনুকূল থাকলে চলতি মৌসূমে চলনবিলের সরিষা ফুল থেকে বাণিজ্যিকভাবে এবং বিভিন্ন গাছ-পালায় প্রাকৃতিকভাবে তৈরি মৌচাক থেকে প্রায় দেড় হাজার মেট্রিক টন মধু সংগৃহীত হবে,যার বাজারমূল্য প্রায় ২৫ কোটি টাকা।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo