• শিশু সংবাদ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সুদ কারবারীর মিথ্যা মামলায় কোলের শিশু আদালতে! 

  • শিশু সংবাদ
  • ২৬ অক্টোবর, ২০২০ ১৮:৫২:০৫

ছবিঃ সিএনআই

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: এবার একজন সুদ কারবারীর করা মারামারির মিথ্যা মামলায় সাত বছরের এক শিশু আসামীকে মায়ের কোলে চড়ে আদালতে আসতে হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জে। এদিকে মিথ্যা মামলায় আদালতে শিশুর উপস্থিতি দেখে তা খারিজ করে দিয়েছেন আদালতের বিজ্ঞ নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেট। আর এই ধরনের মিথ্যা মামলা দায়েরকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয় আদালতের পক্ষ থেকে।

মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার আজাইপুর এলাকার বটতলাহাট গ্রামের সুদ কারবারী মো. গোলাম রসুলের কাছ থেকে মিথ্যা মামলার ১ নং শিশু আসামী একই উপজেলা ও গ্রামের সাত বছরের শিশু সন্তান নাদিম আলীর মা আলিয়া বেগম তার স্বামী রমজান আলীকে বিদেশে পাঠানোর জন্য বছর কয়েক আগে চড়া সুদে এক লক্ষ টাকা লোন করেন। কিন্তু সে টাকা সুদসহ ফেরত দিতে বিলম্ব হলে লোনদাতা গোলাম রসুল চাঁপাইনবাবগঞ্জের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করে। যার নম্বর ৫৬৮ সি/১৯ (নবাব)। পরে এই মামলায় টাকা প্রদাণের মাধ্যমে আপোষের শর্তে আসামীরা জামিন লাভ করেন। কিন্তু পরবর্তীতে আলেয়া বেগম নির্দিষ্ট সময়ে টাকা দিতে ব্যর্থ হলে গোলাম রসুল আসামী শিশু নাদিমের নেতৃত্বে অপর শিশু আসামী সদর উপজেলার রামজীবনপুর গ্রামের আবু তালহার ছেলে সেরাজুল ইসলাম (১৩) সহ অন্যরা তার ওপর হামলা করেছে মর্মে একই আদালতে মারামারি সংক্রান্ত ১০৭ ধারার একটি মামলা দায়ের
করেন। যার নম্বর-১২পি/২০ (নবাব)। পরবর্তীতে রোববার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে ওই দুই শিশু মা বাবার কোলে চড়ে আদালতে হাজির হলে বিজ্ঞ নির্বাহী
ম্যাজিস্ট্রেট সে মামলা খারিজ করে দেন।

এ ব্যাপারে শিশু নাদিমের মা আলিয়া বেগম জানান, ১ লক্ষ টাকা ধার নিয়ে অল্প সময়ে মামলাকারী গোলাম রসুল দেড় লক্ষ টাকা দাবী করেন। কিন্তু তিনি আদালত থেকে জামিন পেয়ে নির্দিষ্ট সময়ে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা দেয়ার পরও তার কোলের শিশু নাদিম ও তাকে জড়িয়ে মারামারি এবং হামলার মিথ্যা মামলা দায়ের
করা হয়।

অন্যদিকে মামলার ৪নং আসামী শিশু সেরাজুলের পিতা আবু তালহা জানান, নিকট আত্মীয় আলিয়া বেগমের প্রথম মামলায় জামিন পেতে সহায়তা করায় পরবর্তীতে পরিকল্পিতভাবে তাকে ও তার শিশু সন্তানকে আসামী করা হয়েছে।

এ বিষয়ে আইনজীবি মো. জোবদুল হক জানান, জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেট অনুযায়ী শিশুদের বয়স ১৮ বছরের নিচে হলেও বয়স গোপন করে অসৎ উদ্দেশ্যে সুদ কারবারী গোলাম রসুল একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে শিশুদের প্রধান আসামী করেছে। যা আইন বহির্ভূত। বিষয়টি আদালত অবগত হয়ে তবেই তাৎক্ষনিক মিথ্যা মামলাটি খারিজ করে দেন এবং এই ধরনের মামলা দায়েরকারী ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।

তবে মামলার বাদী গোলাম রসুল তার ভূল স্বীকার করে বলেন, ভূলবশত শিশুদের আসামী করা হয়েছে। আর মামলাটি তিনি আসামী পক্ষের সাথে বসে মিমাংসা করে নিয়েছেন।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo