• অর্থনীতি

বহু গুণের সাতকড়া চাষ হচ্ছে পঞ্চগড়েও

  • অর্থনীতি
  • ২০ আগস্ট, ২০২০ ১১:০৮:৪৩

ছবিঃ সিএনআই

পঞ্চগড় প্রতিনিধিঃ সিলেটের মতো পঞ্চগড়ে মিলছে স্বাদের গুণে লেবুজাতীয় ফল সাতকড়া। ফলটিতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস। বর্তমান মহামারী করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে ফলটি দিতে পারে উপকার। করোনা প্রতিরোধে খেতে বলা হয়েছে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল হিসেবে লেবুর মতো প্রচুর ভিটামিন রয়েছে এই সাতকড়া ফলটিতে। সাতকড়া হচ্ছে বিশেষ ঘ্রাণযুক্ত লেবুজাতীয় এক প্রকার ফল।  এটি সিলেট, মালেসিয়া এবং মেলানেশিয়ার একটি স্থানীয় ফল হিসেবে সর্বাধিক পরিচিত।

সাতকড়া গাছটি দেখতে ঠিক বাতাবি লেবু গাছের মতো। ফলগুলো দেখতে যেন লেবুর মতো। কমলা ফলের চেয়ে কিছুটা বড়। কোনো কোনোটা বেশ বড় হয়। লেবু গাছের মতো সাতকড়ার গাছে প্রচুর কাঁটা হয়। এ গাছ ২০ থেকে ২৫ ফুট লম্বা হয়। ফালগুন মাসে ফুল আসে। জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ়ে ফল হয়। সম্প্রতি পঞ্চগড়ের চাকলাহাটে সিদ্দিকী টি এস্টেটে গিয়ে দেখা যায় সাতকড়া চাষ। সিদ্দিকী টি এস্টেটের মালিক মিজানুর রহমান সিদ্দিকী রঞ্জু। তাঁর বাড়ি তেঁতুলিয়া উপজেলার সদরে। দীর্ঘ সময় ধরে রয়েছেন আমেরিকায়। তিনি টি ট্যুরিজমের আদলে চা বাগানের এক পাশে লাগিয়েছেন দেশি- বিদেশী বিভিন্ন জাতের ভেষজ ও ফলদ গাছ। এসব গাছের মধ্যে রয়েছে সাতকড়া, এভোকাডো, পার্সিমন, রামবুটান ও কদবেলের মতো বিদেশী জাতের গাছ। এসব ফলের মধ্যে সাতকড়া সম্পর্কে জানা যায়, ফলটি মানবদেহের জন্য দারুণ উপকারী আর রন্ধন শিল্পের রসনার অন্যতম অনুষঙ্গ। মানবদেহের উপকার হিসেবে দেখা যায়, সাতকরায় আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস। রয়েছে বেশ কিছু রাসায়নিক গুণাগুণ। এ ফল শরীরের কোলেস্টেরল কমায় এবং মুখের রুচি বৃদ্ধি করে। যা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। মারাত্মক রোগ যেমন ক্যান্সার, কলন ক্যান্সার এসব প্রতিরোধে সাতকরা সহায়ক। বাত, শিরা-উপশিরা ব্যথায় সাতকরা
উপকারি। সাতকরার খোঁসার মধ্যে এন্টি অক্সিডেন্ট প্রচুর পরিমাণে (শরীরের ক্ষতিকারক উপাদান ধ্বংস করে) আছে। এ ছাড়া সাতকরায় খাদ্যতন্ত্রু বা আঁশজাতীয় গুণাবলী বিদ্যমান। রন্ধন শিল্পে ফলটির কদর রসনাব্যঞ্জন। ফলটিতে রয়েছে আকর্ষণীয় সুঘ্রাণ। এ কারণে বিভিন্ন সবজিতে ফলটির মজ্জাটি ফেলে ঘন বাহিরের অংশ ছোট ছোট টুকরো টুকরো করে কেটে সবজি, গরুর মাংস, মাছের তরকারিতে দিয়ে রান্না করা হয়। এতে তরকারি সুস্বাদু হয় এবং তরকারিতে সুগন্ধি ছড়ায়। খাবারের সাথে সালাত আইটেম হিসেবে খাওয়া হয়। আচার হিসেবেও সাতকরার কদর অতুলনীয়। তাই ফলটির বাহির অংশটি রোদে শুকিয়ে আচার তৈরি করা হয়ে থাকে।

পঞ্চগড়ে চাকলাহাটে সিদ্দিকী টি এস্টেটের মালিক আমেরিকান প্রবাসী মিজানুর রহমান সিদ্দিকী রঞ্জু জানান, সাতকড়া গাছটি পরীক্ষামূলকভাবে লাগিয়েছি। অঞ্চলের মাটিতে এ গাছটি চাষযোগ্য। গাছটির ফল ঔষুধির সাথে রন্ধন শিল্পের মশলা হিসেবে বেশ কদর। লেবু জাতীয় ফল হিসেবে সাতকড়া করোনা প্রতিরোধে বেশ উপকার করতে পারে। তাছাড়া ফলটিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। আর সাতকড়ার পাশাপাশি আমি পার্সিমন, রামবুটান, এভোকাডো, কদবেল
লাগিয়েছে। যা মানব শরীরের জন্য অনেক উপকারী বলে জানান।

তিনি আরো বলেন, সাতকড়া সিলেটের ঐতিহ্যবাহী অর্থকরী ফল। সিলেটের অনেকে এই সাতকড়া চাষ করে ৮০০ টাকা হালি দরে বিক্রি করে ও প্রতি বছর বাণিজ্যিকভাবে লন্ডনে রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছেন। সে হিসেবে পঞ্চগড়েও বাণিজ্যিকভাবে সাতকড়া চাষ করা সম্ভব বলে তিনি জানান।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo