নীলফামারী প্রতিনিধ: চিরচেনা নীলফামারী হাসপাতালের দৃশ্য একেবারে বদলে গেছে গেল কয়েক দিনে। নেই সোরগোল কিংবা রোগীদের তেমন চাপ। রোগীদের স্বজনদেরও তেমন দেখা মিলছে না হাসপাতালের আশপাশে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতায় ভরা হাসপাতালের নার্সদের যেন একটু স্বস্তি এসেছে এই পরিবেশে। কিছুদিন আগে হাসপাতালের নির্ধারিত শয্যার বাহিরেও রোগীদের মেঝে এমনকি বারান্দায় থেকেও চিকিৎসা নিতে হতো। এখন আর তেমনটি চোখে পড়ছে না। দেড়’শ শয্যার হাসপাতালের অনেক বেডই ফাঁকা পড়ে রয়েছে রোগী না থাকার কারণে। দেশটিভির স্থানীয় প্রতিনিধি আব্দুল বারী বলেন, এ রকম চিত্র আমাদের চোখে পড়ে না। করোনা প্রভাবে কারণে এমনটি হয়েছে। এই হাসপাতালে অন্তঃ বিভাগ আর বহিঃবিভাগের রোগীদের উপচে পড়া ভীড় থাকে। সচরাচর শয্যা ফাঁকা থাকার বিষয়টিও দেখি না আমরা। নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স আফরোজা খাতুন বলেন, রোগীদের চাপ আগে সামলানো যেত না। একজনকে যদি ইনজেকশন দিতে যাই আরেকদিকে তিন চারজন ডাকছেন। সে রকম পরিবেশ নেই। তিনি বলেন, হাসপাতালের ওষুধ নিয়ে বাড়িতে থেকে সুস্থ্য হওয়ার মত রোগীরা এখন এখানে থাকছেন না। যাদের থাকতেই হবে তারাই শুধু থাকছেন। তিনি মন্তব্য করেন, আবার রোগী না থাকলে ভালোও লাগে না, কারণ তাদের সেবার ব্রত নিয়েই আমরা কাজ করি। ২৫০ শয্যার এই জেনারেল হাসপাতালে সোমবার ৮৫জন, রবিবার ৬৯জন, শনিবার ১০৭জন ভর্তি ছিলেন। হাসপাতালের নার্সিং সুপারভাইজার বলেন, গেল কয়েক দিনের চেয়ে সপ্তাহ খানিক আগে রোগীর সংখ্যা বেশি ছিলো। এখন কমেছে। হয়তো কয়েক দিন পর আবারো স্বাভাবিক হবে এই চিত্র। হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে সরকারী ভাবে পাওয়া না যাওয়ায় নিজেদের টাকায় অনেক নার্সই কিনেছেন পিপিই। সেটি ব্যবহার করে চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। এদিকে হাসপাতালে করোনা সন্দেহে আগত রোগীদের চিকিৎসার জন্য আলাদা একটি ইউনিটে কাজ করছেন একজন চিকিৎসক, একজন নার্স এবং একজন ওয়ার্ডবয়। এই ইউনিটের দায়িত্বরতরাই আপাতত ব্যবহার করছেন পিপিই। হাসপাতালের সহকারী পরিচালক মেজবাহুল হাসান চৌধুরী জানান, করোনা প্রভাবের কারণে অনেকটা প্রভাব পড়েছে হাসপাতালের রোগীদের সংখ্যার তালিকায়। নিতান্তই যাদের এখানে থেকে চিকিৎসা নেয়া প্রয়োজন তারা থাকছেন এছাড়া আউটডোরে পরামর্শ এবং ওষুধ নিয়ে বাড়িতেই যাদের সম্ভব তারা থাকছেন না। টেলিমেডিসিন এর সেবার কারণে অনেকে বাসায় থেকেই চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। তিনি জানান, এই হাসপাতালের জন্য ১হাজার পিপিইর চাহিদা দেয়া হয়েছিলো পেয়েছি এক’শ এর মধ্যে ৭০টি ব্যবহার হয়েছে। আপাতত যারা করোনা সন্দেহের চিকিৎসা করবেন তারাই এই পিপিই ব্যবহার করার সুযোগ পাচ্ছেন। সিভিল সার্জন জানান, জেলায় ১০০৭টি পিপিই মজুদ রয়েছে। এরমধ্যে ২৭১টি বিতরণ করা হয়েছে। গেল ২৪ঘন্টায় নতুন করে কেউ হোম কোয়ারেন্টিনে যায় নি তবে ৩৪জনের সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন ১৬২জন।
মন্তব্য ( ০)