• অর্থনীতি

সাত বছর পর শেয়ার বাজারের দরপতন সর্বনিম্ন

  • অর্থনীতি
  • ১৮ মার্চ, ২০২০ ১৩:৩৩:১৯

সিএনআই ডেস্ক:  শেয়ার বাজারে দরপতন ঠেকাতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বুধবার থেকে বিনিয়োগ শুরু করবে- অর্থমন্ত্রী, বেসরকারি ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বিএবি এবং ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন এবিবির এমন ঘোষণার পরও দরপতন হচ্ছে। সকাল সাড়ে ১০টায় দিনের লেনদেন শুরুর প্রথম ঘণ্টা শেষে বেলা সাড়ে ১১টায় প্রধান শেয়ার বাজার ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৪৬ শেয়ারের মধ্যে ২৮৩ বা ৮২ শতাংশকে দর হারিয়ে কেনাবেচা হতে দেখা যায়। বিপরীতে দর বেড়ে কেনাবেচা হতে দেখা যায় ৩৬টি শেয়ার। এতে এ বাজারের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১০৩ পয়েন্ট বা পৌনে ৩ শতাংশ হারিয়ে ৩৬৬০ পয়েন্টে নামতে দেখা গেছে। সূচকের এ অবস্থায় ২০১৩ সালের ১২ মের পর সর্বনিম্ন। সূচকের পতন এর পরও অব্যাহত রয়েছে, বাড়ছে। যদিও দিনের লেনদেনের শুরুটা এমন খারাপ ছিল না, বরং খুবই আশাব্যঞ্জক অবস্থায় লেনদেন শুরু হয়েছিল। গত সোমবার বিকেলে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামালের সঙ্গে বৈঠকে ব্যাংকগুলো আজই বিনিয়োগ শুরু করবে- এমন আশ্বাস দিয়েছিল। স্বংয় অর্থমন্ত্রী ব্যাংকগুলোর পক্ষে এমন ঘোষণা দিলে তাতে ভরসা রেখেছিলেন কিছু বিনিয়োগকারী। আজ সকালে লেনদেনের শুরুতেই তারা শেয়ার কিনেছিলেন। তাদের এ শেয়ার ক্রয়ে আজ সকাল সাড়ে ১০টায় দিনের লেনদেন শুরুতে প্রায় সব কোম্পানির শেয়ারের দর বেড়ে যায়। এতে মাত্র ৪ মিনিটেই ডিএসইএক্স সূচক ১০৭ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৮৫ শতাংশ বেড়ে ৩৮৮০ পয়েন্টে ওঠেছিল। কিন্তু বৃহৎ মূলধনী কোম্পানিগুলোর শেয়ারগুলোর দর কমায় এর পরই আবার সূচক কমতে শুরু করে। বাজার সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো থেকে জানা গেছে, ব্র্যাংক ব্যাংক, স্কয়ার ফার্মাসহ সেসব কোম্পানিতে বিদেশিদের শেয়ার বেশি আছে, সেগুলোই বাজারদর হারাচ্ছে। আবার এগুলোর দরপতনে সূচকের পতনও হচ্ছে বেশি। আবার সূচকের পতন পুরো বাজারে, অর্থাৎ অন্য কোম্পানিগুলোর শেয়ারগুলোর দরেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। মূল্য সূচকে বৃহৎ মূলধনী কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দর ওঠানামা সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে। গত সোমবার ডিএসইএক্স সূচকের পতন হয়েছিল ১৯৬ পয়েন্ট। এর মধ্যে স্কয়ার ফার্মা ১৩ টাকা ২০ পয়সা দর হারানোয় সূচকটি হারিয়েছিল প্রায় ২৮ পয়েন্ট। আজকের প্রথম ঘণ্টার লেনদেন পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, লেনদেন শুরুর চার মিনিটে ডিএসইএক্স সূচকে যে ১০৭ পয়েন্ট যোগ হয়েছিল বড় শেয়ারগুলোর দরপতন শুরু হলে ৩০ মিনিট পর ১১টা ৩ মিনিটে তার পুরোটাই হারিয়েছে। সূচক ১০৭ পয়েন্ট বৃদ্ধির পুরোটা হারিয়ে ঋণাত্মক অবস্থায় যাওয়ার এই সময় ডিএসইতে ১৫৮ শেয়ারের দরবৃদ্ধির বিপরীতে ১১১টি দর হারিয়ে কেনাবেচা হতে দেখা যায়। বেশ ঊর্ধ্বমুখী ধারার পর সূচকের এমন পতনের বিষয়ে বাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতিবেশি ভারতের বোম্বের শেয়ারবাজারের দরপতনসহ বিশ্বের বড় শেয়ারবাজারের দরপতন বিনিয়োগকারীদের মনোস্তাত্ত্বিক ভীতির বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের সেনসেক্স সূচকও লেনদেনের প্রথম আধা ঘণ্টায় পৌনে ২ শতাংশ হারিয়েছে। বিশ্বজুড়ে শেয়ারবাজারের পতনের কারণ হলো- করোনাভাইরাস মহামারিতে রূপ নেওয়া। দেশের মধ্যে করোনো পাদুর্ভাব এখনও মারাত্মক আকারে দেখা না দিলেও মানুষের সচেতনতার অভাব ও প্রস্তুতিতে নানা ঘাটতির কারণে বাংলাদেশ উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। এসব নেতিবাচক খবরও বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ বাড়িয়েছে। তবে দেশীয় বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগের থেকেও বিদেশিদের শেয়ার বিক্রির চাপই এ মুহূর্তে শেয়ারবাজারকে ভোগাচ্ছে বেশি। বিদেশিদের শেয়ার কেনাবেচা করেন যেসব ব্রোকারেজ হাউসগুলো থেকে, সেসব হাউসের কর্মকর্তারা জানান, দেশের বিনিয়োগকারীদের অনুরোধ করে শেয়ার বিক্রি ঠেকানো যায়, কিন্তু বিদেশিদের ক্ষেত্রে এটা বলার সুযোগ থাকে না।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo