• বিশেষ প্রতিবেদন

এমপিওভুক্ত শিক্ষক সরকারি চাকরিও করেন!

  • বিশেষ প্রতিবেদন
  • ০৫ আগস্ট, ২০১৯ ১৩:২০:১৬

এমপিওভুক্ত শিক্ষক একই সঙ্গে করছেন সরকারি চাকরিও! এমনটাই অভিযোগ উঠেছে নাটোরের লালপুর উপজেলার ওয়ালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শরীরচর্চার শিক্ষক মোনায়েম সরকারের বিরুদ্ধে। শিক্ষকতার পাশাপাশি সরকারি চাকরি-বিধি লঙ্ঘন করে নৌবাহিনীতেও চাকরি করছেন তিনি। বিষয়টি জানাজানি হলে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন শিক্ষক মোনায়েম। কিন্তু এমপিও শিটে এখনও নাম রয়েছে তার। ওয়ালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক এবং স্থানীয়দের অভিযোগ, মোনায়েম সরকার নৌবাহিনীর সদর দপ্তরে চাকরি করেন। ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে উচ্চ বিদ্যালয় শরীরচর্চা শিক্ষক পদে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হলে তিনি আবেদন করেন। কমিটিকে সাত লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে তিনি শরীর চর্চা শিক্ষক পদে নিয়োগ পান। বেশ কিছুদিন এমপিও বাবদ বেতন-ভাতাও তোলেন তিনি। এরপর নৌবাহিনীতে তার চাকরির কথা জানাজানি হলে তিনি স্কুলে আসা বন্ধ রেখেছেন। কিন্তু এমপিও শিটে ১১৩৫৪৩৭ ইনডেক্স নম্বরে বেতন বহাল আছে মোনায়েম সরকারের। অভিযোগ উঠেছে, প্রভাবশালী হওয়ায় এবং ম্যানেজিং কমিটির সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় থাকায় এখন পর্যন্ত মোনায়েম সরকারের নাম এখনও এমপিও শিটে রয়েছে। তার হয়ে বিদ্যালয়ে প্রক্সি দিচ্ছেন সবুজ হোসেন নামে একজন। এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ওমর আলী বলেন, মোনায়েম সরকার নৌবাহিনীতে চাকরি করেন, প্রথমে তারা বিষয়টি জানতেন না। ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বরে তিনি নিয়োগ পেয়েছেন। তার এমপিওভুক্তি হওয়ার পর ছয় মাস তিনি বেতন তোলেন। দুই জায়গায় চাকরি বিষয়টি জানাজানি হলে ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের জুনে তাকে শোকজ করা হয়। জুলাই থেকে তিনি আর স্কুলে আসেননি। তার বেতন তোলা বন্ধ রয়েছে। পরবর্তী সময়ে বিদ্যালয়ের সমস্যার কথা চিন্তা করে সভাপতি রঞ্জু আহমেদের সম্পর্কে ভাতিজা সবুজ হোসেনকে স্কুলে কাজ করতে অনুরোধ করেন সভাপতি। তার সম্মাননা বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি দিচ্ছে। নিয়োগ দেয়ার জন্য মোনায়েম সরকারের কাছ থেকে কোনো টাকা পয়সা নেয়ার বিষয়টিকে অস্বীকার করেন প্রধান শিক্ষক। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রঞ্জু আহমেদ জানান, সম্প্রতি মোনায়েম তাকে জানিয়েছেন, অল্প দিনের মধ্যেই তিনি নৌবাহিনীর চাকরি ছেড়ে শিক্ষক পদে যোগদান করবেন। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মোনায়েম সরকার বলেন, ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ঢাকা লীগে খেলার সময় নৌবাহিনীতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান। তিন বছর পরপর চুক্তি নবায়ন হয়। নন-কনটিনিউয়াস হিসেবে আগামী ডিসেম্বরে তার চুক্তির মেয়াদ শেষে তিনি বিদ্যালয়ে যোগ দেবেন। এ বিষয়ে লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মুল বাণীন দ্যুতি জানান, ঘটনাটি তিনি শুনেছেন। তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রমজান আলী আকন্দ জানান, একইসঙ্গে দু’টি সরকারি চাকরি করা বিধি ভঙ্গের শামিল এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ বিষয়ে তিনি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo