হকি ফেডারেশন শুধু নারী হকির দিকেই নয়, নারী হকি আম্পায়ার গড়ে তোলারও কাজ করছে। এবার আম্পায়ার কোর্স করেছেন ২৮ জন। এদের মধ্যে একমাত্র নারী আম্পায়ার আয়শা পারভীন মহুয়া। বিএএফ শাহীন কলেজের শারীরিক শিক্ষক মহুয়া। আন্তর্জাতিক আম্পায়ার সেলিম লাকী জানিয়েছন, মহুয়া বাংলাদেশের প্রথম মহিলা আম্পায়ার। এটা আরো ভালো বলতে পারবেন পুতুল আপা।’ সাবেক মহিলা হকি খেলোয়াড় পারভিন নাছিমা নাহার পুতুল বললেন, ‘আমরা যখন খেলেছি, সেই ৭৬, ৭৭-এর দিকে তখন মহিলা আম্পায়ার ছিল না।’ তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের দেশের ক্রীড়াঙ্গনের জন্য ভালো যদি কোনো নারী আম্পায়ার হয়ে মাঠে নামতে পারেন।’ তবে লাকী এবং পুতুল দুজনের বক্তব্য হচ্ছে যেসব নারী হকি খেলোয়াড় এসএসসি কিংবা এইচএসসি পাশ করেছেন তাদের নিয়ে যদি ফেডারেশন আম্পায়ারিং কোর্সের আয়োজন করে তাহলে দ্রুত সেটা ফল পাবে।
মহুয়া বিকেএসপি হতে অ্যাথলেটিকসে গ্রাজুয়েশন করেছেন। জাতীয় অ্যাথলেটিকসে ডিসকাস থ্রো ইভেন্টে স্বর্ণপদক জয় করেছিলেন তিনি। ব্যক্তি জীবনে সব কিছুতেই বাড়তি কৌতূহল। কোনো কিছু দেখলে সেটি নিয়ে জানার আগ্রহ ভীষণ। বিকেএসপিতে থাকাকালীন একদিন দেখলেন তীর ধনুকের খেলা হচ্ছে। কৌতূহল নিয়ে ছুড়লেন। ব্যাস সবার নজর কাড়লেন মহুয়া। শুরু হয়ে গেল তীর ধনুক নিয়ে লড়াই। সেখানেও সাফল্য। খেলে এসেছেন আরচারি বিশ্বকাপে। ইন্দোবাংলা গেমসে দলীয় ইভেন্টে পদক জয় করেছেন। বিএএফ শাহীন কলেজে শিক্ষকতা করতে গিয়ে আবার নতুন কৌতূহল উঁকি দিল। আন্তঃশাহীন হকি টুর্নামেন্ট হয় প্রতিবছর। তাঁর ওপর দায়িত্ব পড়ল। না জেনে ভুল শেখানোর চেয়ে জেনে শেখানো অনেক ভালো। খুঁজতে লাগলেন কোথায় গেলে কীভাবে এগোলে হকির নিয়ম শেখা যাবে। অদম্য এ নারী আম্পায়ারিংয়ে নাম লেখালেন। যেখানে পুরুষরা ভালো করার লড়াইয়ে ব্যস্ত, সেখানে একই কাতারে দাঁড়িয়ে চ্যালেঞ্জ নিয়ে মহুয়া। হকির আইনকানুন নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন তিনি। আগামীতে পুরুষের পাশেই মাঠে দেখা যেতে পারে মহুয়াকে। ভালো কিছু করতে পারলে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টেও বাঁশি হাতে নামতে পারেন। কাজটা চ্যালেঞ্জ হলেও তাঁর ভেতরে সাহস আর কণ্ঠে আত্মবিশ্বাসের সুর। খেলাধুলাকে ভালোবাসেন। তাই হয়ত জীবন সঙ্গী হিসেবে মহুয়া বেছে নিয়েছেন বিকেএসপির সাবেক অ্যাথলেট সঙ্গী সুলেমানকে। প্রথম নারী আম্পায়ার হোক না হোক উত্তরসূরিদের কাছে পথপ্রদর্শক হয়ে থাকবেন আয়শা পারভীন মহুয়া।
মন্তব্য ( ০)