• সমগ্র বাংলা

কৃত্রিম জলাবদ্ধতায় নাকাল রাণীনগরবাসী

  • সমগ্র বাংলা
  • ০৫ আগস্ট, ২০২৪ ১৪:৩৪:০২

ছবিঃ সিএনআই

নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর রাণীনগরে কৃত্রিম জলাবদ্ধতায় নাকাল হয়ে পড়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা। বিশেষ করে উপজেলার প্রাণকেন্দ্র রাণীনগর বাজার এলাকা ও তার আশেপাশের অঞ্চলগুলোর ড্রেনেজ ব্যবস্থা নষ্ট হওয়ার কারণে বর্ষা মৌসুমে একটু বৃষ্টিতেই পাঁকা সড়কের উপর হাটু পানিতে চলাচল করতে হচ্ছে। উপজেলার সবচেয়ে জনগুরুত্বপূর্ণ স্থান উপজেলা গোলচত্বরেও একই অবস্থা। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করায় বর্ষা মৌসুমসহ শুষ্ক মৌসুমেও এই স্থানে পাঁকা সড়কের উপর পানি জমে থাকে।

ফলে প্রতিদিন চলাচলে শত শত পথচারীকে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে চলাচল করার সময় জমে থাকা নষ্ট পানিতে নোংরা হচ্ছে পোষাক। তবুও সুদৃষ্টি নেই সংশ্লিষ্টদের। অপরিকল্পিত ভাবে ড্রেনেজ ব্যবস্থা না করেই বহুতল ভবন নির্মাণ করা, পুরাতন পানি চলাচলের সরু এবং নষ্ট হওয়া পানি নিষ্কাশনের পথগুলো বছরের পর বছর মেরামত না করার কারণে এমন দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েেেছ বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

অপরদিকে পানি নিষ্কাশনের খালগুলো অবৈধ দখলের শিকার হয়ে সেগুলো পূরণ করে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করার কারণে বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানি সহজে নিষ্কাশন হতে না পারায় এমন কৃত্রিম জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ফলে সড়কের চেয়ে একটু নিচু বাসা-বাড়ির মধ্যে হাটু পানি জমে যায়। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় যে, একটু বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে উপজেলার থানা রোডটি। রাণীনগর বাজার এলাকার সকল পানি এসে জমা হয় সদর ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন পুকুরে এসে।

সেই পানি পুকুর থেকে পরিষদের পশ্চিম দিক দিয়ে বয়ে যাওয়া খাল ও অন্যান্য পানি নিষ্কাশনের পথ দিয়ে বের হয়ে যেতো। কিন্তু সেই পুকুরের চারদিক ভরাট করে পানি নিষ্কাশনের পথগুলো অনেকটাই বন্ধ হয়ে গেছে ফলে বিভিন্ন স্থাপনার পানিসহ বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানি পুকুরে জমে উপচে পড়ে বিভিন্ন মহল্লার বাড়িতে প্রবেশ করে। এছাড়া বাজারের অন্যান্য স্থানের পানি রেলস্টেশনের পশ্চিম দিক দিয়ে যাওয়া খালে এসে পড়তো কিন্তু সেই খালও ভরাট করে অপরিকল্পিত ভাবে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করায় পানি সহজেই নিষ্কাশন হতে পারে না ফলে একটু বৃষ্টির পানিতেই বাজারের বিভিন্ন জনগুরুত্বপূর্ণ স্থান ও সড়কে জমে হাটু পানি।

এছাড়া কাঁচা বাজার থেকে ডালপট্টি পাড়া হয়ে হাসপাতাল যাওয়ার সড়কে একটু বৃষ্টির পানিতে সৃষ্টি হয় পুকুর। এতে করে ওই জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক দিয়ে বর্ষা মৌসুমে চলাচল করা খুবই কষ্টসাধ্য। অপরদিকে পাঁকা এই সব সড়কগুলোয় পানি জমে থাকার কারণে অনেক আগেই নষ্টও হচ্ছে। রাণীনগর বাজারের বাসন্দিা বিপ্লব জানান, প্রতি বর্ষা মৌসুমে জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামের সামনে হাটু পানি জমে। অনেক আগে নির্মাণ করা সরু ড্রেন দীর্ঘদিন পরিস্কার, সংস্কার ও মেরামত না করার কারণে অনেকটাই ভরাট হয়ে গেছে।

ফলে বৃষ্টির সময় পানি সহজেই এই ড্রেন দিয়ে নিষ্কাশন হতে না পারায় পাঁকা সড়কের উপর জমে থাকে এবং আশেপাশের নিচু বাসা-বাড়িতে প্রবেশ করে। এতে করে বর্ষা মৌসুমে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সময়ে সঙ্গে যদি ব্রিটিশ আমলে নির্মাণ করা ড্রেনগুলো মেরামত ও বড় করা হতো তাহলে বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানিসহজেই নিষ্কাশন হতে পারতো।

ফলে আমাদের কৃত্রিম জলাবদ্ধতার শিকার হতেই হতো না। আমি মনে করি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের আগে অবকাঠামোগত এই উন্নয়নগুলো সবার আগে আধুনিকায়ন করা খুবই জরুরী। উপজেলা প্রকৌশলী মো: ইসমাইল হোসেন জানান পানি নিষ্কাশনের ড্রেনগুলো সংস্কার কিংবা নতুন করে নির্মাণের কাজগুলো উপজেলা প্রশাসন চাইলেই করতে পারেন। আর উপজেলার নষ্ট হওয়া ড্রেনগুলো এবং নতুন করে পানি নিষ্কাশনের ড্রেন নির্মাণের পরিকল্পনা উপরমহলে পাঠিয়েছি।

অনুমোদন ও অর্থ বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু করা হবে। আর বহুতল ভবন নির্মাণের সময় নিজ নিজ ভবনের পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করলে কিন্তু বর্ষা মৌসুমে এই রকম জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হতো না। এমন জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে প্রতিটি এলাকার বাসিন্দাদেরও সচেতন হওয়া খুবই দরকার।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo