• সমগ্র বাংলা

চট্টগ্রামে নিহত পাইলট আসীম জাওয়াদের মা‌নিকগ‌ঞ্জের বা‌ড়ি‌তে শো‌কের মাতম

  • সমগ্র বাংলা
  • ০৯ মে, ২০২৪ ২০:০০:১২

ছবিঃ সিএনআই

মা‌নিকগঞ্জ প্রতিনিধিঃ  চট্টগ্রামে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত পাইলট আসীম জাওয়াদ এর মা‌নিকগ‌ঞ্জের বাসায় চল‌ছে শো‌কের মাতম।

আজ বৃহস্পতিবার (৯ মে) বিকেলে মা‌নিকগঞ্জ জেলা শহরের বাসায় গিয়ে এই চিত্র দেখা গেছে।

নিহত আসীম জাওয়াদের গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার গোপালপুর গ্রামে। তবে তার বাবা মা জেলা শহরের গোল্ডেন টাওয়ারে নিজস্ব ফ্ল্যাটে থাকতো। আর চাকরিজনিত কারণে আসীম জাওয়াদ স্ত্রী ও দুই সন্তানসহ চট্টগ্রামে থাকতেন।

তার বাবা আমান উল্লাহ একজন চিকিৎসক আর মা নিলুফার খানম সাভার ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক ছিলেন। রিফাত নারায়ণগঞ্জে বিয়ে করেছেন। তার স্ত্রীর নাম অন্তরা আক্তার।

মানিকগঞ্জের বাসায় গিয়ে দেখা যায়, একমাত্র সন্তান আসীম জাওয়াদ রিফাতকে হারিয়ে কান্না করতে করতে মূর্ছা যাচ্ছেন মা নিলুফার খানম। আত্মীয়স্বজনরা তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।

নিহতের মামা সুরুষ খান বলেন, আসীম জাওয়াদ একজন চৌকস অফিসার ছিল। ছোটবেলা থেকেই সে বিমানবাহিনীতে যোগ দেবে এমন স্বপ্ন ছিল। রিফাতের স্ত্রী, ছয় বছরের মেয়ে আয়জা ও এক বছরের ছেলে রয়েছে। পরিবার নিয়ে সে চট্টগ্রামে থাকত।

নিহতের খালাতো ভাই মো. মশিউর রহমান শিমুল বলেন, আজ সকালের দিকে জানতে পারি চট্টগ্রামে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এরপর থেকেই আমরা খোঁজ নিতে থাকি। পরে দুপুর ১২টার দিকে খবর পাই আসীম জাওয়াদ মারা গেছে। তার বাবা ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, ছাত্রজীবনে রিফাত কখনো দ্বিতীয় হয়নি। আজ বিমান দুর্ঘটনার কারণে দেশ একজন চৌকস অফিসারকে হারাল।

উ‌ল্লেখ‌্য, চট্টগ্রামে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় পাইলট অসীম জাওয়াদ নামে  নিহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) দুপুরে পতেঙ্গার বানৌজা ঈসা খাঁ হাসপাতালে (নেভি হাসপাতাল) চিকিৎসাধীন অবস্থায় পাইলট জাওয়াদ মারা যান।

অসীম জাওয়াদ ২০০৭ সালে এসএসসি ও ২০০৯ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-ফাইভ পান। ২০১০ সালে বাংলাদেশ এয়ারফোর্স একাডেমিতে (বাফা) যোগদান করেন। ২০১১ সালের ডিসেম্বরে কমিশন লাভ করেন পাইলট অফিসার হিসেবে। তিনি পিটি-৬, এল-৩৯জেডএ, এফ-৭এমবি, এফ-বিজি১ ইত্যাদি বিমান চালিয়েছেন। তিনি ছিলেন এফ-৭এমজি১ এর অপারেশনাল পাইলট ও এলিমেন্ট লিডার। ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে জাতিসংঘের মিশনে নিয়োজিত ছিলেন। বিভিন্ন কোর্সের তাগিদে পাড়ি জমিয়েছেন চীন, ভারত, তুরস্ক ও পাকিস্তানে। এখন নিয়োজিত আছেন ফ্লাইং ইনস্ট্রাক্টর'স স্কুল অফ বিএএফএ স্টাফ ইনস্ট্রাক্টর হিসেবে।

নিজের ট্রেনিং জীবনে সকল বিষয়ের শ্রেষ্ঠত্বের জন্য পেয়েছেন সোর্ড অফ অনার। এসসিপিএসসি থেকে এখন পর্যন্ত তিনিই একমাত্র সোর্ড অফ অনার বিজয়ী। ফ্লাইং ইনস্ট্রাক্টরস কোর্সে শ্রেষ্ঠত্বের জন্য পেয়েছেন মফিজ ট্রফি। এছাড়া দায়িত্বশীলতা ও কর্মক্ষেত্রে দক্ষতার জন্য প্রশংসা পেয়েছেন চিফ অফ এয়ার স্টাফ থেকে।

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। আকাশে আগুন ধরার পর সেটি পতেঙ্গায় কর্ণফুলী নদীর মোহনায় বিধ্বস্ত হয়। এর আগে বিমানের পাইলট ও কো পাইলট প্যারাসুটে নামেন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পাইলট অসীম জাওয়াদ মারা যান।

এ‌দি‌কে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।

দুই পাইলটকে আহত অবস্থায় পতেঙ্গার বানৌজা ঈসা খাঁ হাসপাতালে (নেভি হাসপাতাল) ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পাইলট অসীম জাওয়াদ মারা যান। আহত কো-পাইলট চিকিৎসাধীন আছেন।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo