• বিশেষ প্রতিবেদন

শ্রীপুরে আকস্মিক অর্ধশতাধিক পাখির মৃত্যু!

  • বিশেষ প্রতিবেদন
  • ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ ২০:৩৭:০২

ছবিঃ সিএনআই

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধিঃ গাজীপুরের শ্রীপুরে আকস্মিক অর্ধশতাধিক পাখির মৃত্যু হয়েছে। মারা যাওয়া পাখির মধ্যে বেশির ভাগই ঘুঘু পাখি। এছাড়া শালিক ও খেচখেঁচিয়াসহ (স্থানীয় নাম) বিভিন্ন জাতের পাখি রয়েছে। এভাবে পাখিগুলো মরে যাওয়া দেখে স্থানীয়দের মনে আঘাত লাগছে। মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের সিটপাড়া গ্রামে পাখি মারা যাওয়ার এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় ইউপি সদস্য হারুন-অর রশিদ খন্দকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয়রা জানান, এতগুলো পাখি একসাথে মারা যাওয়ার ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেসবুকে) ভাইরাল হওয়ার পর সকাল থেকে সিটপাড়াসহ আশপাশের এলাকা থেকে নারী-পুরুষ ও শিশুরাসহ বিভিন্ন বয়সের লোকজন পাখি দেখতে ওই গ্রামে ভীড় জমিয়েছে। গত কয়েকদিন এলাকায় কোনো প্রকার কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়নি। তাহলে পাখিগুলো কেন এবং কি কারণে মারা গেছে এ প্রশ্ন তাদের। এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকজনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারা কেউ কোনো কিছু বলতে পারেনি।

বরমী ইউনিয়নের সিটপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আসাদ মিয়া জানান, আমি সকালে কর্মস্থলে (কারখানায়) চলে যাই। দুই ঘন্টা পর চা বিরতির সময় কারখানা থেকে বাহিরে বের হলে দেখতে পাই কয়েকজন নারী ও শিশু মারা যাওয়া পাখিগুলো এনে এক জায়গায় স্তুপ করে রাখছে। পরে আমি মারা যাওয়া পাখিগুলোর ছবি ভিডিও করে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে (ফেসবুকে) পোস্ট করেছি।

সিটপাড়া গ্রামের শিশু তাওহীদ (০৮) জানান, আমি সকাল ৯ টার দিকে এইখান দিয়ে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ দেখি ওপর থেকে একটা পাখি আমার সামনে এসে পড়ছে। সাথে সাথেই গজারি গাছ থেকে আরো পাখি নিচে পরে যাচ্ছে। গজারি গাছের পাশের আরেকটা গাছ থেকেও পাখি পড়েছে। আম গাছ থেকে পড়ছে আরো ২টা। পাখিগুলো কুড়িয়ে এনে একটা জায়গায় রাখছি। কয়েকটা পাখির মুখ দিয়ে পানি ঝড়তে দেখেছি।

পথচারী সামাদ মিয়া জানান, পাখিগুলো কিটনাশক খেয়ে খেয়ে মরেছে কিনা তা জানতে হবে। হঠাৎ করে পাখিগুলো মইরা যাওয়ার কথা নয়। পাখিগুলো মরে যাওয়া দেখে কষ্ট লাগছে।

গাজীপুর পরিবেশ আন্দোলন সভাপতি ফেডরিক মুকুল বিশ্বাস বলেন, পাখি মারা যাওয়া বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখবো। এটা বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগকে জানাতে হবে।

নদী পরিব্রাজক দল শ্রীপুর উপজেলা শাখার সভাপতি সাঈদ চৌধুরী জানান, এরকম সিমটম সাধারণত বিষক্রিয়ায় হয়ে থাকে। যেমন কোনো জমিতে ঘাস মাড়ার জন্য অতিরিক্ত পরিমাণে কীটনাশক ব্যবহার করলে অথবা আশপাশের কোনো জমানো পানিতে কীটনাশক ব্যবহার করে থাকলে সেসব খেয়ে পাখিগুলো মারা যেতে পারে। তাছাড়া আশপাশে কেনো স্থানে যদি কোনো কারখানা থেকে থাকে ওই কারখানা তাদের নির্গত পানির সাথে অতিরিক্ত পরিমানে ক্যামিকেল ব্যবহার করে থাকলে ওই পানি খেয়েও পাখিগুলো মারা যেতে পারে।

বরমী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য স্থানীয় বাসিন্দা হারুন-অর রশিদ খন্দকার জানান, সিটপাড়া গ্রামে গার্ডেনিয়া ওয়্যারস লিমিটেড (পোশাক তৈরি কারখানা) রয়েছে। ওই কারখানার পাশেই পাখিগুলো মারা গেছে। কেন এতগুলো পাখি মারা গেছে বিষয়টি জানার চেষ্টা করছি।

ঢাকা বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক ইমরান আহমেদ বলেন, কারখানার কোনো প্রাভাবে পাখি মরছে কিনা তা দেখতে হবে। আমি খোঁজ নিচ্ছি।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo