• অর্থনীতি

টানা আট কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী শেয়ারবাজার

  • অর্থনীতি
  • ২৬ এপ্রিল, ২০২৩ ১৫:৫১:৪৩

ছবিঃ সংগৃহীত

নিউজ ডেস্কঃ ঈদের পর দেশের শেয়ারবাজারে টানা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা গেছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের গতি। পাশাপাশি ফ্লোর প্রাইস (সর্বনিম্ন দাম)-এর ওপরে উঠে এসেছে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম। এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরে এসেছে।

অবশ্য বিনিয়োগকারীদের স্বস্তি পুরোপুরি ফেরেনি। কারণ এখনো তালিকাভুক্ত অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ফ্লোর প্রাইসে আটকে রয়েছে। যেসব বিনিয়োগকারীর কাছে এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট রয়েছে ক্রেতা সংকটে তারা তা বিক্রি করতে পারছেন না।

ঈদের পর তৃতীয় কার্যদিবস বুধবার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচক বেড়েছে। এর মাধ্যমে ঈদের আগে ও পরে মিলে টানা আট কার্যদিবস মূল্যসূচক বাড়লো।

মূল্যসূচক এমন টানা বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেনের গতি। ডিএসইতে লেনদেন বেড়ে সাড়ে সাতশ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এর মাধ্যমে ৬৪ কার্যদিবসের মধ্যে বাজারটিতে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে।

শেয়ারবাজারে এমন টানা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা ও লেনদেনের গতি বাড়া স্বাভাবিকভাবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন ঈদের আগে শেয়ারবাজারে বিক্রির চাপ কমায় এ ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার দেখা মিলেছে। এখন হুট করে বিনিয়োগকারীরা বিক্রির চাপ না বাড়ালে এ ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকতে পারে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, বুধবার লেনদেনের শুরুতেই মূল্যসূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা এবং ভালো লেনদেনের আভাস পাওয়া যায়। লেনদেনের শুরুর দিকে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে আধা ঘণ্টার মধ্যে ডিএসইতে ১৫০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়।

লেনদেনের শুরুতে দেখা দেওয়া লেনদেনের এ গতি শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। তবে দাম বাড়ার প্রবণতা ধরে রাখতে পারেনি বেশকিছু প্রতিষ্ঠান। এতে দিনের লেনদেন শেষে দাম বাড়ার থেকে দাম কমার তালিকা বড় হয়।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ৬৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পেরেছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭২টির এবং ২১২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এরপরও ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ২ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ২৬৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৫৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় দশমিক ২৮ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ২১৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

এদিকে দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৬৫ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৭১৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৫২ কোটি ১৮ লাখ টাকা। লেনদেন শুধু আগের কার্যদিবসের তুলনায় বাড়েনি, চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারির পর সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে।

এ লেনদেন বাড়াতে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে ইউনিক হোটেল। কোম্পানিটির ৬১ কোটি ১৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইস্টার্ন হাউজিং ৫৪ কোটি ৬২ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৩৬ কোটি ৯৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে অলেম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে-আমরা নেটওয়ার্ক, অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার, সি পার্ল বিচ রিসোর্টের, জেনেক্স ইনফোসিস, নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস, শাহিনপুকুর সিরামিক এবং জেমিনি সি ফুড।

অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন অংশ নেওয়া ১৬০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৪টির এবং ৭২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকা।

শেয়ারবাজারের এ ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার বিষয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক মো. শাকিল রিজভী বলেন, অনেক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বেশ কমে গেছে। আবার ব্যাংকসহ ডিসেম্বর ক্লোজিং প্রতিষ্ঠানগুলোর লভ্যাংশের ঘোষণা আসছে। সামনে জুন ক্লোজিং প্রতিষ্ঠানগুলোর লভ্যাংশের ঘোষণা আসবে। সবকিছু মিলে শেয়ারবাজারে ইতিবাচক প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। হুট করে বিনিয়োগকারীরা বিক্রির চাপ না বাড়ালে আশা করা যায় এ ধারা অব্যাহত থাকবে।

শুভ নামের এক বিনিয়োগকারী বলেন, আমার পোর্টফোলিওতে ৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট আছে। অনেকদিন ধরে সবগুলো ফ্লোর প্রাইসে আটকে ছিল। এখন একটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম ফ্লোর প্রাইসের ওপরে উঠে এসেছে। কিন্তু বাকি পাঁচটি এখনো ফ্লোর প্রাইসে আটকে আছে। তারপরও বাজারে গতি ফেরায় মনের মধ্যে কিছুটা আশার সঞ্চার হচ্ছে।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo