• আন্তর্জাতিক
  • লিড নিউজ

রাজনৈতিক লড়াইয়ের মাঝেও জো বাইডেনের প্রশাসনের মন জয়ে তৎপর ইমরান খান

  • আন্তর্জাতিক
  • লিড নিউজ
  • ১৩ এপ্রিল, ২০২৩ ২২:০৯:১৩

ছবিঃ সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ বড় ধরনের অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে রয়েছে পাকিস্তান। একইসঙ্গে দেশটিতে চলছে রাজনৈতিক সংকটও। যার জেরে দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটিতে প্রতিদিনই বাড়ছে বিবদমান রাজনৈতিক পক্ষগুলোর মধ্যকার বিদ্যমান দূরত্ব এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের মন জয়ে বেশ জোরেশোরে নেমেছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর প্রধান ইমরান খান। বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের চার আইন প্রণেতার সাথে কথা বলেছেন। এসময় তাদেরকে পাকিস্তানে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিকে সমর্থন করার আহ্বান জানিয়েছেন ইমরান।

দ্য ডন বলছে, এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে ইমরান যে চার মার্কিন আইন প্রণেতার সাথে কথা বলেছেন, তারা হলেন- টেড লিউ, এরিক সোয়ালওয়েল, ব্র্যাড শেরম্যান এবং মাইক লেভিন। এই চারজনই ডেমোক্র্যাট আইন প্রণেতা। আর এর মানে হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাট প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্কের শীতলতা কাটাতে পিটিআই তার আগ্রহের জানান দিচ্ছে। পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা আতিফ খান ডনকে বলেছেন, ‘শুধুমাত্র অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে’ চার মার্কিন আইন প্রণেতার সাথে আলোচনা হয়েছে।  কারণ শুধুমাত্র নির্বাচনই পাকিস্তানকে স্থিতিশীল করতে পারে।’ আতিফ খান বলেছেন, নিজেদের বার্তা বাইডেন প্রশাসনকে জানাতে মিডিয়া, কংগ্রেস এবং প্রশাসন, এই তিনটি চ্যানেলের সবগুলোকে ব্যবহার করছে পিটিআই।

আর সেই বার্তা হচ্ছে: ‘পাকিস্তানে মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ করুন, আইনের শাসন এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে সমর্থন করুন এবং নির্বাচনের দাবিকে সমর্থন করুন’। এছাড়া হোয়াইট হাউসের বাইরে সম্প্রতি একটি সমাবেশ আয়োজন করে পিটিআই। সেই সমাবেশ থেকে পাকিস্তানে ক্ষমতাসীন অজনপ্রিয় সরকারের সাথে কাজ না করার অনুরোধ করেন পিটিআই নেতারা। তাদের দাবি, পাকিস্তানে তাদের শাসন চালিয়ে যাওয়ার কোনও নৈতিক যুক্তি নেই। অবশ্য ইমরানের দলের এই প্রচার-প্রচারণা বাইডেন প্রশাসনকে সাম্প্রতিক অতীতের তিক্ততা ভুলে যেতে পিটিআইয়ের আগ্রহও সামনে এনেছে। কারণ ২০২২ সালের এপ্রিলে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ইমরান খান এবং তার দল পাকিস্তানে কার্যত আমেরিকা-বিরোধী প্ল্যাটফর্মে প্রচারণা চালিয়েছিল। একইসঙ্গে ইমরান সেসময় তার সরকারকে পতনের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ওয়াশিংটনকে অভিযুক্ত করে।

দ্য ডন বলছে, বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে নিজেদের তিক্ত সম্পর্ক মিটমাট করতে পিটিআই নেতারা যুক্তরাষ্ট্রে অর্থের বিনিময়ে কমপক্ষে দুইজন লবিস্ট নিয়োগ করেছেন। তারা ওয়াশিংটনকে এটাই বোঝানোর চেষ্টা করছেন যে, তাদের দল বা তাদের নেতা কেউই আমেরিকা বিরোধী নয় এবং ইমরান খান ক্ষমতায় ফিরে আসলে তিনি যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তান সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করবেন। ইমরানের দলের হয়ে আমেরিকানদের মন জয়ের ক্যাম্পেইনে মুখ্য ভূমিকা পালন করছেন পাকিস্তানি আমেরিকান চিকিৎসক ড. আসিফ মাহমুদ। তিনি বলছেন, ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত এবং জনগণের মাধ্যমে নির্বাচিতদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব।

 ইমরান খান এবং মার্কিন আইন প্রণেতাদের মধ্যে টেলিফোনে কথোপকথনের ব্যবস্থা করার ক্ষেত্রে তিনিই প্রধান ভূমিকা পালন করেছেন। এর পাশাপাশি ড. আসিফ মাহমুদ গত মাসে ক্যালিফোর্নিয়া থেকে আইন প্রণেতাদের একটি প্রতিনিধি দলকে পাকিস্তানে নিয়ে গিয়েছিলেন। ওই সফরে তারা ইমরান খানের সাথেও দেখা করেছিলেন। এছাড়া কংগ্রেসম্যান শেরম্যানের সাথেও ড. আসিফ মাহমুদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। আর শেরম্যান গত মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। ওই চিঠিতে পাকিস্তানে ‘গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং আইনের শাসন’ লঙ্ঘনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি।

একইসঙ্গে ‘যুক্তরাষ্ট্রের পাকিস্তান নীতিকে মানবাধিকারের প্রতি বৃহত্তর প্রতিশ্রুতির দিকে পরিচালিত করতে এবং পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষকে ক্ষমতার অপব্যবহারের তদন্ত করার জন্য এবং দায়ী হতে পারে এমন কাউকে জবাবদিহি করতে অনুরোধ করার জন্য সমস্ত মার্কিন কূটনৈতিক চ্যানেল ব্যবহার করতে’ ব্লিংকনের প্রতি আহ্বান জানান শেরম্যান। চিঠিতে তিনি বলেছেন, ‘রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বা নাগরিক যারা কেবল আন্দোলন বা প্রতিবাদ-বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে চান তারা যেন গণতন্ত্র-বিরোধী কোনও পরিণতির শিকার না হন; এটি নিশ্চিত করার জন্য আমি কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করছি।’ চিঠিতে শেরম্যান পাকিস্তানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের একাধিক অভিযোগ তুলে ধরেন। যার মধ্যে পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খানের বিরুদ্ধে মামলা, গণমাধ্যমে তার বক্তৃতা প্রচারের ওপর নিষেধাজ্ঞা, বিক্ষোভকারীদের আটক, পিটিআই নেতা শাহবাজ গিল এবং সাংবাদিক জামিল ফারুকির ওপর কথিত নির্যাতন এবং পিটিআই নেতাদের গ্রেপ্তারের মতো বিষয়গুলোও রয়েছে।

 

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo