• বিশেষ প্রতিবেদন

টেকনাফে ৪৮০ রোহিঙ্গার তথ্য যাচাই শেষে ফিরে গেছে মিয়ানমার প্রতিনিধি দল

  • বিশেষ প্রতিবেদন
  • ২২ মার্চ, ২০২৩ ২১:১৭:২৬

ছবিঃ সিএনআই

জাবেদ ইকবাল চৌধুরী, কক্সবাজার: টেকনাফ স্থলবন্দর রেস্ট হাউস মাঠে  ৭ দিনে ১৭৭টি পরিবারের ৪৮০ জন রোহিঙ্গার তথ্য যাচাই ও সাক্ষাৎকার গ্রহণ কাজ সম্পন্ন করেছে ১৭ সদস্যের মিয়ানমার প্রতিনিধি দল। ২২ মার্চ বুধবার সকাল ১০ টার সময় টেকনাফের বাংলাদেশ-মিয়াননার ট্রানজিট জেটি  দিয়ে একটি কাঠের বোট যোগে বাংলাদেশ ত্যাগ করেন তারা। গত মঙ্গলবার (২১ মার্চ)   পর্যন্ত ১৭৭ পরিবারের ৪৮০ জন রোহিঙ্গার তথ্য যাচাই কাজ সমাপ্ত করেন।  গত ১৫ মার্চ টেকনাফ ও উখিয়ার বিভিন্ন ক্যাম্পে থাকা স্বদেশে ফেরত যেতে ইচ্ছুক  রোহিঙ্গার তথ্য যাচাই ও সাক্ষাৎকার গ্রহণে বাংলাদেশ আসে ২২ সদস্যের মিয়ানমার প্রতিনিধিদল। পরে নিরাপত্তা টিমের ৫ সদস্য ফিরে যান।

দলের নেতৃত্বে ছিলেন  রাখাইন রাজ্যের সমাজ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী অং মিয়ো। টেকনাফ স্থলবন্দরের রেস্ট হাউস চত্বরে  প্রতিনিধিদলের সদস্যরা রোহিঙ্গাদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ ও তথ্য যাচাই করেন।  ৭ দিনে তথ্য যাচাই হয়েছে ১৭৭টি পরিবারের ৪৮০ জন রোহিঙ্গার। তথ্য যাচাইয়ের দিনগুলোতে উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন আশ্রয় ক্যাম্প  থেকে গাড়িতে করে রোহিঙ্গাদের স্থলবন্দরের ভেতরে তৈরি প্যান্ডেলে আনা হয়। সেখান থেকে রোহিঙ্গারা প্রতিনিধিদলের সামনে বসে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়ে ফিরে যান তারা। প্রতিনিধিদলের সদস্যরা রোহিঙ্গাদের তথ্য যাচাইয়ের পাশাপাশি কাগজে স্বাক্ষরও নিয়েছেন। ছবিও তুলে রাখছেন। কিন্তু রোহিঙ্গাদের কোনো প্রশ্নের জবাব দেননি প্রতিনিধিদলের সদস্যরা।

সাক্ষাৎকার প্রদান শেষে টেকনাফের শালবন আশ্রয় ক্যাম্প থেকে আসা একজন রোহিঙ্গা বলেন, ‘কমিটির সদস্যরা প্রায় সব রোহিঙ্গার কাছে একই রকম প্রশ্নের উত্তর নিতে চেয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে সাক্ষাৎপ্রার্থীর বাড়ি রাখাইন রাজ্যে কোন গ্রামে ছিল, সেখানকার ইউপি চেয়ারম্যান (ওক্কাট্টা) কে ছিলেন, সমাজের সরদার কে ছিলেন, সেখানে থাকতে কতজন সন্তান ছিল, বাংলাদেশে আসার পর কতজন ছেলেমেয়ে জন্ম নিয়েছে, মিয়ানমারে ফিরতে রাজি কি না’ ?তবে বহু রোহিঙ্গা মিয়ানমার প্রতিনিধিদলকে জানিয়ে এসেছেন, নাগরিকত্ব না পেলে কোনো রোহিঙ্গা বাংলাদেশ থেকে রাখাইন রাজ্যে ফিরে যাবেন না।

প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার সঙ্গে জাতিসংঘের উদ্বাস্তবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরকে সম্পৃক্ত রাখতে হবে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মানবাধিকার সংস্থার প্রতিনিধিদের রাখাইন রাজ্য পরিদর্শনের সুযোগ দিতে হবে।রোহিঙ্গা সলিম উল্লাহ বলেন, ‘শিগগিরই যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হবে, তেমন আলামত দেখা যাচ্ছে না। কারণ নাফ নদীর ওপারে রাখাইন রাজ্যের যেসব গ্রাম থেকে সর্বশেষ ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর আট লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল, সেসব গ্রামের কোনো চিহ্নই এখন নেই। গ্রামগুলোতে স্থাপন করা হয়েছে সেনাছাউনি এবং সামরিক ব্যারাক। কিছু গ্রামে মগ সম্প্রদায়ের বসতি গড়া হয়েছে। প্রত্যাবাসন শুরু হলে রোহিঙ্গাদের ফেলে আসা ঘরবাড়িতে পুনর্বাসনের সুযোগ নেই। বাংলাদেশের মতো সেখানকার (রাখাইনের) আশ্রয় কেন্দ্রে  বন্দিজীবন কাটানোর ইচ্ছা কোনো রোহিঙ্গার নেই’।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo