• শিক্ষা

শিক্ষার্থীদের স্কুল ব্যাংকিং ভবিষ্যতের ভালো বিনিয়োগ

  • শিক্ষা
  • ১৮ মার্চ, ২০২৩ ১৬:০৯:৩৫

ছবিঃ সিএনআই

নজরুল ইসলাম রাজু, রংপুর ব্যুরোঃ স্কুল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে সঞ্চয়ের যে অভ্যেস গড়ে উঠবে, তা শিক্ষার্থীদের সারা জীবন সুফল দেবে। শিক্ষার বিপরীতে শিক্ষার্থীদের সঞ্চয় ভবিষ্যৎ বিনির্মাণের উত্তম বিনিয়োগ। সব বাণিজ্যিক ব্যাংকে স্কুল ব্যাংকিং হিসাব খোলার সুযোগ আছে, তাই শিক্ষার্থীদের এ ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করতে পারলে ভবিষ্যতে ভালো ফল পাওয়া যাবে। কারণ শিক্ষার্থীদের আজকের সঞ্চয় তাদের ভবিষ্যতের সবচেয়ে ভালো বিনিয়োগ। এক্ষেত্রে বাবা-মা, অভিভাবক, শিক্ষক-সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। আর এ অনুষ্ঠানের লীড ব্যাংক এশিয়া।শনিবার (১৮ মার্চ) দুপুরে রংপুর জেলা পরিষদ কমিউনিটি সেন্টার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত স্কুল ব্যাংকিং কনফারেন্সে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ ব্যাংক রংপুরের নির্বাহী পরিচালক আনোয়ারুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে ব্যাংক এশিয়া লিমিটেডের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট কাজী মোরতুজা আলীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংক রংপুরের পরিচালক (প্রশাসন) মুহাম্মদ জামাল উদ্দিন, বাংলাদেশ ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের যুগ্ম পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এনায়েত হোসেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্যাংক এশিয়া রংপুর শাখার প্রধান ও এফএভিপি এম. এ. হামিদ বলেন, প্রবাদ আছে-অর্থই অনর্থের মূল এবং অনেক শিক্ষার্থী অর্থের কারণে বখাটে হয়ে যায়। আর সময়মতো সঞ্চয় না করলে ভবিষ্যৎ অনেক সময় তাদের কাছে অন্ধকার মনে হয়। অর্থের অভাবে ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়া যায় না, কখনো লেখাপড়া বন্ধ হওয়ারও উপক্রম হয়। শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার পাশাপাশি তাদের সুন্দর ভবিষ্যত ও সঞ্চয়ে উদ্বুদ্ধকরণে স্কুল ব্যাংকিং একটি মাইলফলক উদ্যোগ।

তিনি আরও বলেন, স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছেলেমেয়েদের জন্য যে ব্যাংকিং ব্যবস্থা, মূলত তা-ই স্কুল ব্যাংকিং। এ হিসাব থেকে কোনো চার্জ কাটা হয় না। জমা বই, ডেবিট কার্ড, মোবাইল ব্যাংকিংসহ বিভিন্ন সুবিধা আছেই। যত খুশি লেনদেন করা যায় স্কুল ব্যাংকিংয়ের আমানত মূলত একটি দীর্ঘস্থায়ী আমানত, যা স্বল্প বা দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগযোগ্য।সভাপতির বক্তব্যে ব্যাংক এশিয়া লিমিটেডের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট কাজী মোরতুজা আলী বলেন, স্কুল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীরা ছেলেবেলা থেকেই ব্যাংক হিসাব খোলার নিয়মকানুন জানতে, হিসাব পরিচালনায় দক্ষতা ও অভ্যাস গড়ে তুলতে পারদর্শী হচ্ছে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত অর্থ ব্যাংকে জমা রেখে সঞ্চয়ের মনোভাব গড়ে উঠছে। নিয়মিত ব্যাংকে আসা-যাওয়া ও টাকা জমা-উত্তোলন করতে করতে একসময় দেখা যাবে এসব শিক্ষার্থীদের হিসাবে যথেষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা হয়েছে। একটু সঞ্চয়ী হলে যে সুফল মিলবে তার প্রমাণ স্কুল ব্যাংকিং।

অনুষ্ঠানে স্কুল ব্যাংকিংয়ে সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের কার্যক্রম তুলে ধরে বক্তব্য দেন, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক লিমিটেডের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট রাশেদ মাহবুব রব্বান, সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক রশিদুল ইসলাম, অক্সব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক মোস্তাক আহমেদ, একই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী আজমাইন আরবী, ফাহিম রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী রিফা সানজিদা প্রাপ্তি। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন ব্যাংক এশিয়া লিমিটেডের এফভিপি মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম শিকদার। কনফারেন্স অনুষ্ঠান শুরুর আগে জেলা পরিষদ কমিউনিটি সেন্টার চত্বরে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে দিনব্যাপী কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। পরে একটি বর্ণিল শোভাযাত্রা নগরীর গুরুত্ব সড়ক প্রদক্ষিণ করে। শোভাযাত্রা শেষে বেলা এগারোটায় জেলা পরিষদ কমিউনিটি সেন্টার মিলনায়তনে আলোচনা অনুষ্ঠানে মিলিত হন অংশগ্রহণকারী ৪৪টি ব্যাংকের প্রতিনিধি ও ৪৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকগণ। আলোচনা পর্ব শেষে স্কুল ব্যাংকিং বিষয়ক ভিডিও প্রদর্শন, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, কুইজ প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
 
উল্লেখ্য, ২০১০ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগে চালু হয় স্কুল ব্যাংকিং। এতে লেনদেন করার সুযোগ পায় ১১-১৭ বছর বয়সি তরুণ প্রজন্মের শিক্ষার্থী, যাদের কোনো আয়ের উৎস নেই। এখানে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য আগে ১০ টাকা লাগত, যদিও এখন তা বৃদ্ধি পেয়ে ১০০ টাকা হয়েছে। সাধারণত শিক্ষার্থীরা ঈদ, পূজা-পার্বণ কিংবা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বাবা-মা, আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে যে নগদ অর্থ পেয়ে থাকে অথবা স্কুল টিফিনের জন্য যে অর্থ পেয়ে থাকে, তা থেকে কিছু অর্থ বাঁচিয়ে রেখে তাদের নিকটস্থ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাংক শাখায় যেন জমিয়ে রাখতে পারে—এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই স্কুল ব্যাংকিংয়ের যাত্রা শুরু হয়।
 

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo