• বিশেষ প্রতিবেদন

জুমা’র নামাজ পড়তে ২০৫ কিঃ পথ সাইকেল চালিয়ে ২০১ গম্বুজ মসজিদে রাসেল 

  • বিশেষ প্রতিবেদন
  • ০৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩ ১৭:৩৩:৪০

ছবিঃ সিএনআই

মো.নুর আলম গোপালপুর(টাঙ্গাইল): কথায় আছে- ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়। সত্যি তাই, ইচ্ছে ছিল সাইকেল চালিয়ে জুমা’র নামাজ আদায় করা। যেমন ইচ্ছে, তেমন কাজও। সাইকেল চালিয়েই ২০৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে টাঙ্গাইলের গোপালপুরে ২০১ গম্বুজ মসজিদ জুমা’র নামাজ পড়ার জন্য এসেছেন ৫৮ বছর বয়সী বৃদ্ধ রাসেল বিশ্বাস লাল। তার এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে সহযোগিতা করেছেন পরিবার ও স্বজনরা।

জুমা’র নামাজ আদায় করার জন্য গত বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২ টায় গোপালপুরের পাথালিয়া গ্রামে নির্মিত ২০১ গম্বুজ মসজিদে পৌঁছান। পরে দুপুরে নামাজ আদায় করেন। সে সময় তাকে দেখতে মুসুল্লি ও স্থানীয় লোকজন ভিড় জমান। তার সাথে সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ করেন মুসুল্লিরা লোকজন। তার সাথে ছবি ও সেলফিও ওঠে উৎসুক জনতা।

শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) ২০১ গম্বুজ মসজিদে জুমা’র নামাজ আদায় করেন তিনি। এসময় শতশত মুসুল্লিদের কাছে প্রশংসায় ভাসে। বৃদ্ধ রাসেল বিশ্বাস লালের বাড়ি ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলা পৌর এলাকার পশ্চিম গারাখোলা গ্রামে। তিনি ওই এলাকার মৃত আব্দুল ছাত্তার বিশ্বাসের ছেলে। পেশায় তিনি বৈদ্যুতিক মিস্ত্রি। বুধবার (০১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৬ টায় যাত্রা শুরু করেন।

বৃদ্ধ রাসেল বিশ্বাস জানান, পত্র-পত্রিকা, টেলিভিশন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে টাঙ্গাইলের গোপালপুরের পাথালিয়া এলাকায় নির্মিত ২০১ গম্বুজের বিষয়ে জানতে পারেন। তিনি এসব মাধ্যমে জেনেছেন দৃষ্টি নন্দন এই ২০১ গম্বুজ মসজিদে প্রতি শুক্রবার দেশের বিভিন্ন এলাকার মানুষ জুমার নামাজ পড়তে আসেন। সে থেকেই ইচ্ছে জাগে ২০১ গম্বুজ মসজিদে নামাজ পড়ার।

তিনি জানান, পরে নিজে নিজে সিদ্ধান্ত নেন টাঙ্গাইলের গোপালপুরে ওই মসজিদে আসার। বাসে আসলে আশপাশে পরিবেশ দেখা যাবে না ভেবো সাইকেল নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এ বিষয়টি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করলে তার স্ত্রী ও দুই সন্তানও সাইকেল নিয়ে আসতে উৎসাহিত করেন। সেই উৎসাহ থেকে প্রায় ১৮০ কিলোমিটার পথ সাইকেল চালিয়ে মসজিদে আসতে সক্ষম হন।

রাসেল বিশ্বাসের সাথে কথা বলে জানা যায়, বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৬টার দিকে মধুখালী নিজ বাড়ি থেকে সাধারণ একটি বাই সাইকেল নিয়ে টাঙ্গাইলের গোপালপুরের ২০১ গম্বুজ মসজিদের উদ্দেশ্যে রওনা হন। কোনো বিরতি না দিয়ে ৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পৌঁছান দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে। ফেরিতে নদী পার হয়ে আরিচা ফেরিঘাটে আসেন। তারপর আবার সাইকেল চালানো শুরু করেন।

মানিকগঞ্জের শিবালয়, ঘিওর হয়ে দৌলতপুর উপজেলা সদরে আসেন বুধবার দুপুরে। সেখানে দুপুরের খাবার খেয়ে আবার যাত্রা শুরু করেন রাসেল। এরপর টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলা পার হয়ে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার অলোয়া এলাকায় একটি মসজিদে রাতযাপনের উদ্যোগ নেন। কিন্তু ওই এলাকার মতিয়ার রহমান নামের এক ব্যক্তি তাকে তার বাড়িতে রাতযাপন করার সুযোগ দেন। 

তারপর বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ৭টায় আবার যাত্রা শুরু করেন গোপালপুরের উদ্দেশ্যে। দুপুর ১২টায় তিনি গোপালপুরের পাথালিয়া গ্রামে ২০১ গম্বুজ মসজিদে পৌঁছান। পরে দুপুরের নামাজ শেষে তিনি ওই এলাকা ঘুরে দেখেছেন। দীর্ঘ এই পথ পাড়ি দেয়ার পথে নতুন নতুন অনেক জায়গা দেখার সুযোগ হয়। এতে তার খুব ভালো লেগেছে। তাই পথে কোনো ক্লান্তি বোধ হয়নি বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ জাতীয় মুফাসসির পরিষদের টাঙ্গাইল জেলা শাখা'র সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন ভূঞাপুরী জানান, সকালে জানতে পারলাম ৫৮ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ ব্যক্তি ২০৫ কিলোমিটার পথ সাইকেল চালিয়ে গোপালপুরের ২০১ গম্বুজ মসজিদে জুমা’র নামাজ পড়ার আসছে এবং নামাজ আদায়ও করেছেন। বিষয়টি খুবই প্রসংনীয়।

 

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo