• প্রশাসন
  • লিড নিউজ

মা‌নিকগঞ্জ পু‌লিশ সুপা‌রের ব্যাতিক্রমী উ‌দ্যোগ 'হ্যালো পু‌লিশ'

  • প্রশাসন
  • লিড নিউজ
  • ০২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩ ১০:৫০:৩৪

ছবিঃ সিএনআই

মো: সোহে‌ল রানা খান, মা‌নিকগঞ্জ: মা‌নিকগঞ্জ জেলার ঘিওর উপজেলার তরা গ্রামের খেরু মিয়া। জীবনের প্রতিটি বাঁকে বাঁকে নিরন্তর পরিশ্রম করে নুন আনতে পান্তা ফুরানোর সংসারে এক টুকরো জমি আর মাথা গোঁজার ঠিকানা করেছিল। 

খেটে খাওয়া শরীরে নানান অসুখ বিসুখ বাসা বেধে এক পর্যায়ে কর্মক্ষমতা হারিয়ে সন্তানের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পরে। কিন্তু নিজের ছেলেরা ভরণ পোষণ করবে তো দুরের কথা তারই নিজের তিল তিল করে কষ্টের গড়া তোলা বসতবাড়ি থেকে ছেলেরা তাড়িয়ে দেয়। 

স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও জনপ্রতিনিধিরা খেরু মিয়াকে নিজের আশ্রয়স্থলে ফেরানোর শেষ চেষ্টা ব্যর্থ হয়। পরে মাথা গোজার শেষ আশ্রয়টুকু হারিয়ে স্থানীয়দের দেয়া খাবার খেয়ে অন্যের বাড়ি আর রাস্তায় কাটছিল তার দিন রাত। 

এক পর্যায়ে খেরু মিয়া স্থানীয় এক প্রতিবেশীর মাধ্যমে জেলা পুলিশ সুপারের উদ্যোগে করা হ্যালো পুলিশ মানিকগঞ্জ এ স্মরণাপন্ন হন বৃদ্ধ খেরু মিয়া। 

জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের দ্বিতীয় তলায় স্থাপিত পুলিশ আছে জনতার পাশে শ্লোগানে হ্যালো পুলিশ সেবা কেন্দ্রে গি‌য়ে সেখানে হ্যালো পুলিশের নিজস্ব রেজিস্ট্রারে তার অভিযোগ লিপিবদ্ধ করে। 

অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান সরাসরি ঘিওর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অভিযোগটি অবহিত করে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে মানবিক সমস্যাটি সমাধানের নির্দেশ দেন। 

পরে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খানের ব্যক্তিগত উদ্যোগে খেরু মিয়া তার নিড়ে ফিরতে পেরেছে। খেরু মিয়ার মতো প্রায় শতাধিক বিভিন্ন পর্যায়ের  সুবিধাবঞ্চিত ও অহেতুক হয়রানীর শিকার  নারী পুলিশ পুলিশ সুপারের এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ হ্যালো পুলিশ মানিকগঞ্জের সুফল পেয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জেলার বিভিন্ন এলাকায় নানাবিধ সমস্যা নিয়ে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে যান। কিন্তু তাদের কাঙ্খিত সেবা পান না অনেক ভুক্তভোগী। 

দিনের পর দিন বিভিন্ন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের দ্বারে দ্বারে হন্ন হয়ে ঘুরেন। ভুক্তভোগীদের নানান অধিকার বঞ্চনা লাঘব করতে মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান চিন্তা করেন এর উন্নয়ন ঘটাতে হবে।

হ্যালো পুলিশের উদ্যোক্তা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান জানান, নাগরিক সভ্যতার এক অপরিহার্য অঙ্গ হলো পুলিশ সার্ভিস। সভ্য সমাজ গড়ে তুলতে হলে জনগণের সঙ্গে পুলিশের সুসম্পর্ক বা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখা জরুরি। বিশ্বাস, সহানুভূতি, যোগাযোগ ও আস্থা অর্জনের মাধ্যমে একে অপরের কাছাকাছি আসা যায়।  এ বিষয়ে পুলিশ সদস্যকেই এগিয়ে আসতে হবে। নিজেদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সর্বপ্রথম যে কাজটি করতে হবে, তা হলো নাগরিকদের ভেতর আস্থা ও বিশ্বাস স্থাপন করা। এই থিম থেকে তিনি হ্যালো পুলিশ সেবা দেয়ার কাজ শুরু করেন। 

গত বছরের নভেম্বর থেকে পরীক্ষামুলক ভাবে হ্যালো পুলিশের কার্যক্রম শুরু করেন। ইতোমধ্যে কয়েক শত নানা পেশা ও নানান ধরনের হয়রানিতে ক্ষতিগ্রস্থরা এই সেবা নিয়ে উপকৃত হয়েছেন। 

বিষয়টি পুলিশ সুপার তার ঊর্ধ্বতন মহলে এই হ্যালো পুলিশের কর্মকাণ্ডের গঠনের উদ্যোগ ও আশানুরুপ সাড়ার কথা জানালে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছ থেকে অনুমোদন পান।

পুলিশ সুপার জানালেন, হ্যালো পুলিশ মানিকগঞ্জ সেবার প্রদানের সহায়তার জন্য ইতো মধ্যে একজন এএসআইকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। অফিসার ইনচার্জকে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে নিস্পত্তি করার জন্য পাঠানো হয়। পরবর্তীতে পুলিশ সুপার নিজে উদ্যোগী হয়ে ভুক্তভোগীর সমস্যার সমাধান হয়েছে কিনা তা জানতে টেলিফোন করেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগ হ্যালো পুলিশের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করতে আসছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল। একই সময় তিনি বঙ্গবন্ধু গ্যালারিরও উদ্বোধন করবেন।

 

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo