• জাতীয়
  • লিড নিউজ

কোথায় দুর্নীতি হচ্ছে তথ্য দিন ব্যবস্থা নেবঃ শেখ হাসিনা

  • জাতীয়
  • লিড নিউজ
  • ১৫ জানুয়ারী, ২০২৩ ১৫:৪৩:৩৭

ছবিঃ সংগৃহীত

নিউজ ডেস্কঃ আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোথায় দুর্নীতি হচ্ছে-তথ্য দিন, আমি ব্যবস্থা নেব। তিনি বলেন, পার্লামেন্টে দাঁড়িয়েই এ কথা বলেছি। দুর্নীতির কথা শুধু মুখে মুখে বললে হবে না। তিনি আরও বলেন, এখন এমন লোকজনের কাছ থেকে আমাকে দুর্নীতির কথা শুনতে হচ্ছে, যারা নিজেরাই দুর্নীতিগ্রস্ত। যাদের আমলে দুর্নীতিতে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। অথবা বলতে গেলে, কেউ ক্ষুদ্রঋণের ব্যবসা করতে গিয়ে গরিব মানুষের ওপর এমন চাপ দিয়েছে যে সুদ দিতে দিতে তাদের অনেক সময় বাড়িঘর ছেড়ে যেতে হয়েছে। অথবা আত্মহত্যা করতে হয়েছে।

শনিবার গণভবনে আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদ, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ এবং উপদেষ্টা পরিষদের যৌথ সভার মুলতুবি বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। এর আগে ৭ জানুয়ারি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে যৌথ সভা হয়। পরে তা মুলতুবি করা হয়। মুলতুবি সভায় প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এই গরিব মানুষের টাকা দিয়েই কিন্তু দেশে নামধাম করে বেশ ভালোই আছে এবং প্রচুর অর্থসম্পদের মালিক। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিনিয়োগও করে ফেলেছেন। এই টাকাগুলো কোথা থেকে এলো, এগুলো গরিবের রক্তচোষা টাকা। এটা তো বাস্তব কথা।

শেখ হাসিনা দৃঢ়কণ্ঠে বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণকে যে কথা দেয়, সেকথা রাখে। যে ওয়াদা জাতিকে দেই, সেটা আমরা রক্ষা করি। জনগণকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, আওয়ামী লীগ সব সময় জাতির কল্যাণে কাজ করে। দেশের মানুষ এর সুফল পাচ্ছে। বিগত সময়ে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নকাজের ফিরিস্তি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা যা যা চেয়েছিলেন, আমরা সেগুলো কিন্তু একে একে করে দিচ্ছি। তার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করাই আমাদের লক্ষ্য। এত কাজ করার পরও কিছু লোক আছে তাদের কিছু ভালো লাগে না।

সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চিন্তা করতে হবে। দেশের মানুষ যেন মাথা তুলে চলতে পারে। তিনি বলেন, গত ১৪ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাংলাদেশের যে পরিবর্তন ঘটেছে, আমি জানি এটা অনেকেই নিতে পারে না। নানা ধরনের কথা রটায়। কিন্তু মানুষের জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এসেছে। এছাড়া রাস্তাঘাটসহ যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন করেছি। এটাকেও অনেকেই স্বীকার করতে চায় না। করতে চাইবেও না।

যাদের নির্দিষ্ট বেতনে চলতে হয়, তাদের কষ্ট হচ্ছে : সরকারপ্রধান বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের অসুবিধা হচ্ছে। আমাদের দেশেও যাদের একেবারে নির্দিষ্ট বেতনে চলতে হয়, তাদের জন্য কষ্ট হচ্ছে। সেটা আমরা বুঝি। সেজন্য বিদেশ থেকে অনেক টাকা খরচ করে খাবার কিনে আনছি। ভর্তুকি মূল্যে সেটা দিচ্ছি। টিসিবির কার্ডের মাধ্যমে ৩০ টাকা কেজি দরে চাল সরবরাহ করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে আপৎকালীন মানুষ যাতে নায্যমূল্যে ভোজ্যতেল, চিনি, ডালসহ নিত্যপণ্য ক্রয় করতে পারে, সেব্যবস্থাও করা হয়েছে। পাশাপাশি খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোয় সরকার কৃষিতেও ভর্তুকি অব্যাহত রেখেছে। আমি জানি না, বাংলাদেশে আর কোনো সরকার এভাবে জনগণের কল্যাণে কাজ করেছে কি না।

অনবাদি জমিতে আবাদ করার পরামর্শ : সরকারপ্রধান বলেন, আমার এলাকায় (টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়া) খুঁজে দেখলাম প্রায় ১০ হাজার বিঘা জমি আছে অনাবাদি। কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে আনাবাদি জমিতে আবাদ করার একটা প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রকল্পের বাইরেও অনেক জমি রয়ে গেছে। আমি উদ্যোগ নিয়েছি আমার ওখানে যত অনাবাদি জমি রয়েছে সেখানে আধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে আবাদ করার। সেখানে শ্রমিকের পাশাপাশি যন্ত্রের ব্যবহারও হচ্ছে। এভাবে সবাই শুরু করলে বাংলাদেশের মানুষের খাদ্যের অভাব হবে না। উৎপাদন করে বাইরেও রপ্তানি করতে পারব।

শরীয়তপুরের সবজি সুইজারল্যান্ডে যাচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের তরকারি এখন ৭০টির মতো দেশে রপ্তানি হচ্ছে। শরীয়তপুরে যে সবজি হচ্ছে, তা সুইজারল্যান্ডে যাচ্ছে। এভাবে উদ্যোগ নিয়ে আমরা করতে পারি। আমাদের নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চিন্তা করতে হবে। কৃষকদের গুরুত্ব দিয়ে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ এবং কৃষি সমবায়ের মাধ্যমে উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বানের পাশাপাশি ‘ভূমি সংহতিসাধনে উদ্বুদ্ধ করা’ এবং ‘প্রাকৃতিক সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য বৈজ্ঞানিক তৎপরতা চালানোর’ কথা জাতির পিতা বলে গেছেন।

ক্ষুদ্র ঋণে সুদের বোঝা টানা থেকে তাদের মুক্ত করেছি : সরকারপ্রধান বলেন, সরকারের দুই বছরের সহযোগিতায় একসময় বিনিয়োগকারী ব্যক্তির হাতে মূলধন হবে, সেসময় প্রকল্পে সংশ্লিষ্ট না থাকলেও সে ব্যাংকে জমাকৃত টাকা দিয়ে তার ক্ষুদ্র ব্যবসা চালাতে পারে। অর্থাৎ ক্ষুদ্র ঋণে যে উচ্চহারে সুদের বোঝা টানতে হয়, সেই সুদের বোঝা টানা থেকে তাদের মুক্ত করেছি। ক্ষুদ্র সঞ্চয়ে তারা যেন নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে, সরকার সেই ব্যবস্থা করেছে। পাশাপাশি যুবসমাজের জন্য সরকার কর্মসংস্থান ব্যাংক করে দিয়েছে। যেখান থেকে বিনা জামানতে তারা দুই লাখ পর্যন্ত টাকা নিয়ে ব্যবসা করার সুযোগ পাচ্ছে। বিদেশগামীদের জন্য প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকও করে দিয়েছে।

দেশে বেকার থাকার সুযোগ নেই : প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেউ ইচ্ছা করলে বেকার থাকতে পারে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে বেকার থাকার কোনো সুযোগ নেই। কারণ, আমরা অনেক সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছি। ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে অনেক ছেলেমেয়ে এখন গ্রামে বসে টাকা উপার্জন করছে। এভাবে যত সুযোগ আছে করে দিয়েছি। তিনি আরও বলেন, জাতির পিতার স্বপ্নের কথা মাথায় রেখেই আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতাহার তৈরি করা হয়। ভূমিহীনদের নিয়ে সরকার জরিপ করছে বলেও জানান তিনি। তাদের ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় দলীয় নেতাকর্মীদের সত্তরের নির্বাচনে দেওয়া বঙ্গবন্ধুর বক্তব্য পড়ার নির্দেশনাও দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।

‘ভেঙেছে দুয়ার এসেছে জ্যোতির্ময়’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন: যৌথ সভা শেষে জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে প্রকাশ হওয়া ‘ভেঙেছে দুয়ার এসেছ জ্যোতির্ময়’ বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বইটি সম্পাদনা করেছেন এসএসএফ-এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মজিবুর রহমান। বইটি প্রকাশ করেছে জয়িতা প্রকাশনী। বইটি পাওয়া যাবে জয়িতা প্রকাশনীর ২০/২১ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের কার্যালয়ে এবং ফেব্রুয়ারিতে অমর একুশে বইমেলায় জয়িতা প্রকাশনীর স্টলে।

১০০ পৃষ্ঠার আর্ট পেপারে ছাপা ও শক্ত মলাটে বাঁধাই করা বইয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন এবং ১৯৬৬ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত সংবাদপত্র ও গণমাধ্যমে যেসব রিপোর্ট, বিশেষ প্রতিবেদন, ছবি ছাপা হয়েছিল, সেই পত্রিকাগুলোর প্রথম পাতা বাছাই করে সংকলিত করা হয়েছে। এতে সেই সময়ের দৈনিক আজাদ, দৈনিক ইত্তেফাক, দৈনিক সংবাদ, দৈনিক পূর্বদেশ, দৈনিক পাকিস্তান এবং পরবর্তী দৈনিক বাংলা, দৈনিক সমাজ, দ্য মর্নিং নিউজ, দ্য পিপলস, পাকিস্তান, বাংলাদেশ অবজারভার প্রভৃতি পত্রিকার ৯৫টি প্রথম পাতা সন্নিবেশিত করা হয়েছে।

 

 

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo