• শিক্ষা

পাবলিক ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু আগামী ১ জানুয়ারি

  • শিক্ষা
  • ১৫ নভেম্বর, ২০২২ ১৫:৪০:৪৬

ছবিঃ সংগৃহীত

নিউজ ডেস্কঃ গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া ২২ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু হবে ১ জানুয়ারি। এরমধ্যে একাধিক দফায় শিক্ষার্থীদের ভর্তি কার্যক্রম শেষ করা হবে। ইতোমধ্যে ১২ নভেম্বর প্রথম দফায় আবেদন নেওয়ার কাজ শেষ হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যমান আসনের গড়ে অর্ধেকের মতো পূর্ণ হয়েছে বলে জানা গেছে।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদউদ্দিন আহমেদ  জানান, গতবছরের অভিজ্ঞতার আলোকে এবারে আরও শিক্ষার্থীবান্ধব করে ভর্তি প্রক্রিয়া সাজানো হয়েছে। পাশাপাশি তাদের খরচ কমানোর ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। যেহেতু দীর্ঘ মেধাতালিকা থেকে একযোগে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রী ভর্তি করা হচ্ছে তাই আসন পূরণে একাধিক দফায় উদ্যোগ নিতে হচ্ছে। গত বছরও একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ কমাতে অভিন্ন ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে সরকার বিশ্ববিদ্যালয়ে এ গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তির প্রক্রিয়ার উদ্যোগ নেয়। সর্বপ্রথম গত বছর ১৯ বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছভুক্ত হয়। এবারে এতে আরও নতুন তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় যুক্ত হয়েছে। যদিও গত বছর অভিযোগ উঠেছিল, শিক্ষার্থীদের খরচ আর দুর্ভোগ কমানোর লক্ষ্যে এ পদ্ধতি প্রবর্তন করা হলেও প্রকারান্তরে তা বেড়ে গেছে। শিক্ষার্থীদের ঠিকই ভর্তি আর ভর্তির টাকা দেওয়ার জন্য এক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরেকটিতে দৌড়াতে হয়েছে। প্রথমে ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফি যা নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, পরে তার দ্বিগুণ নেওয়া হয়। এছাড়া পরীক্ষায় ভালো স্কোর করা শিক্ষার্থীরা একই সঙ্গে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে থাকে। এতে এক ব্যক্তির দখলে একাধিক আসন থাকায় অপেক্ষাকৃত কম স্কোর করা শিক্ষার্থীরা উপেক্ষিত হয়। ফলে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদেরও দুর্ভোগ সেই অনুপাতে কমেনি বলে অভিযোগ রয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ১৭ অক্টোবর গুচ্ছভুক্ত ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি আবেদন নেওয়া শুরু হয়। আবেদন প্রক্রিয়া শেষ হয় ২৭ অক্টোবর। আবেদন ফি পরিশোধ করা গেছে ২৮ অক্টোবর রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত। এবার প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন ফি ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা ছিল। একজন শিক্ষার্থী ৫০০ টাকা ফি পরিশোধ করে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি ইউনিটেই আবেদন করতে পেরেছেন, যা গত বছর ১২শ টাকা ছিল। তবে প্রথম দফায় অর্ধেকের মতো আসন পূরণ হয়েছে বলে জানা গেছে। যেমন-জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে আসন আছে দুই হাজার ৭৬৫টি। ১২ নভেম্বর পর্যন্ত প্রথম মেধাতালিকা থেকে ভর্তি হয়েছেন এক হাজার ২৮৮ জন। অপরদিকে শাবিপ্রবিতে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে আসন রয়েছে এক হাজার ৬৬৬টি। এতে প্রথম মেধাতালিকা থেকে ভর্তি হয়েছে ৫০৬ জন।

এ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা ৭ নভেম্বর থেকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত ভর্তি নিশ্চায়ন করতে পেরেছেন ঘরে বসেই, যেখানে তিনি চান্স পেয়েছেন। আর ভর্তি হওয়া প্রতিষ্ঠানে তার একাডেমিক কাগজপত্র জমা দেওয়ার শেষদিন ছিল ১২ নভেম্বর। এ ক্ষেত্রে সিলেটের ছাত্রী ঢাকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেলে তাকে ঢাকায় আসতে হয়নি। তার কাছাকাছি শাবিপ্রবিতে জমা দিতে পেরেছে।

তবে এবার এসব সমস্যা আমলে নেওয়া হয়েছে বলে জানান ভর্তি কমিটির সদস্য ও শাবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ভর্তি পরীক্ষার ফি আমরা কমাতে পারিনি, এটি সত্য। কেননা সব উপকরণের দাম বেড়ে গেছে। এ কারণে ভর্তির পরীক্ষার ব্যয় বেড়েছে। তবে ছাত্রছাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে যেতে হবে না। প্রথমে যে বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাবে সেখানে কেবল ভর্তি হবে। এজন্য কেবল তাকে একবার ক্যাম্পাসে যেতে হবে। ভর্তি সংক্রান্ত কাগজপত্র শিক্ষার্থী তার নিকটস্থ যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়েই জমা দিতে পারবে। তাকে ভর্তি হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে হবে না। আর ভর্তি ফি বাবদ প্রথমে ৫ হাজার টাকা অনলাইনে বা মোবাইল ব্যাংকিংয়ে জমা দেবে। গত বছর এক জায়গায় টাকা জমা দিলে ফেরত পেত না। কিন্তু এবার তার অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে মাইগ্রেশন (বদলি) হলে আর ৫ হাজার টাকা দিতে হবে না। এ ক্ষেত্রে ভর্তির জন্য সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অবশিষ্ট টাকা জমা দিলেই হবে। কিছু বিশ্ববিদ্যালয় কেবল আগের বছর এইচএসসি পাশ করা শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিচ্ছে। কিন্তু গুচ্ছ পদ্ধতিতে দুই নয়, তিন বছর আগে এইচএসসি পাশ করা শিক্ষার্থীরাও এবার ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একজন শিক্ষার্থীর একইসঙ্গে একাধিক আসন দখল করে রাখার কোনো সুযোগ এবারে রাখা হয়নি। একজন একবারই একটি আসনে ভর্তি হবে। সেটি বাতিল না করলে আরেক বিষয়ে ভর্তি সফটওয়্যার নেবে না। সুতরাং এ ধরনের কোনো অভিযোগ কেউ করে থাকলে তা না বুঝে করছেন। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রথম দফায় সব আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি করা যায়নি। তবে আসন পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষমাণ তালিকা হিসাবে একাধিক দফায় ভর্তি নেওয়া হবে। শিক্ষার্থীরা ওয়েবসাইট অনুসরণ করলে পরবর্তী বিজ্ঞপ্তি পাবে। এর তারিখ এখনো নির্ধারণ হয়নি।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo