• আন্তর্জাতিক

বাধ্য করলেই প্রতিবাদ করব, ইরান ইস্যুতে লিখলেন মালালা ইউসুফজাই

  • আন্তর্জাতিক
  • ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১৪:২৩:৩৯

ছবিঃ সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ হিজাব আইন লঙ্ঘনের অপরাধে পুলিশের হাতে আটক মাশা আমিনি নামে এক তরুণীর মৃত্যুর প্রতিবাদে উত্তাল ইরান। ওই ঘটনা থেকে উদ্ভূত হিজাববিরোধী বিক্ষোভের ৮ দিনে দেশটিতে অর্ধশতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। 

এদিকে পুলিশি নির্যাতনে মাশা আমিনির এই মৃত্যুর প্রতিবাদ জানিয়েছেন নোবেল বিজয়ী পাকিস্তানী বংশোদ্ভূত মালালা ইউসুফজাই। ইনস্টাগ্রামে তিনি লিখেছেন, একজন নারী যাই পরুন না কেন, তার সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে। আমি আগেই বলেছি, যদি কেউ আমাকে আমার মাথা ঢেকে রাখতে বাধ্য করে, আমি প্রতিবাদ করব। যদি কেউ আমাকে আমার স্কার্ফ খুলতে বাধ্য করে, তাহলেও আমি প্রতিবাদ করব। 

ভারতের কর্নাটকে হিজাব বিতর্কের সময় জোরপূর্বক হিজাব পরতে না দেওয়ার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন মালালা। তখনও তিনি বলেছিলেন, মেয়েদের হিজাব পরে স্কুলে যেতে দিতে অস্বীকার করা ভয়ঙ্কর। হিজাব পরা নিয়ে নারীদের মধ্যে কম-বেশি আপত্তি আছে। ভারতীয় নেতাদের অবশ্যই মুসলিম নারীদের প্রতি এই ঘটনা বন্ধ করতে হবে। 

মাথায় হিজাব না থাকায় গত ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী তেহরানে ইরানের নৈতিকতা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন মাশা আমিনি নামের ২২ বছরের এক তরুণী। গ্রেপ্তার করে হেফাজতে নিয়ে যাওয়ার দুই ঘণ্টার মধ্যে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি।

পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চারদিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় মাশার। সরকারি ভাষ্য অনুযায়ী, হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়াই তার মৃত্যুর কারণ; তবে বিক্ষোভকারী, মাশার পরিবার ও স্বজনদের অভিযোগ— হেফাজতে মাথায় গুরুতর আঘাত করার পরই জীবনসংকটে পড়েন তিনি এবং ওই আঘাতের জেরেই তার মৃত্যু হয়। 

৮ দিনে নিহত অর্ধশতাধিক

মাশা আমিনির মৃত্যুর জেরে ইরানের বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। সরকারি হিসেবে বলা হয়েছে—দু’পক্ষের সংঘাতে এ পর্যন্ত ১৭ জন নিহত হয়েছেন। তবে নিহতের প্রকৃত সংখ্যা সরকারি হিসেবের তিনগুণ; অর্থাৎ ৫১ জনেরও বেশি বলে দাবি করেছে মানবাধিকার সংস্থা ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর)।

ইতোমধ্যে তেহরানসহ বিভিন্ন শহরে একাধিক পুলিশস্টেশন ও সরকারি স্থাপনা বিক্ষোভকারীরা জ্বালিয়ে দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ফুটেজে দেখা গেছে, শুক্রবার ইরানের বাবল শহরে দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির ছবি সম্বলিত একটি বিশাল বিলবোর্ড পুড়িয়ে দিয়েছেন সরকারবিরোধীরা।

এছাড়া রাজধানী তেহরানে ইরানের আধাসামরিক বাহিনী বাসিজ মিলিশিয়ার একটি ঘাঁটি পুড়িয়ে দেওয়ার চিত্রও ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়েছে।

নিরাপত্তা বাহিনীর আঘাতে সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের রক্তাক্ত হওয়ার কয়েকটি ছবি ও ভিডিও ফুটেজও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

ইরানের সরকার অবশ্য বিক্ষোভ দমনে বেশ কঠোর মনোভাব নিয়েই এগোচ্ছে। শুক্রবার নিউইয়র্কে এক সংবাদ সম্মেলনে ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই আন্দোলন ও ধংসাত্মক কার্যক্রমের পার্থক্য বুঝতে হবে। আন্দোলনের নামে ধংসাত্মক কর্মকাণ্ড আমরা সহ্য করব না।’ 

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo