• সমগ্র বাংলা

আশুগঞ্জে টানা তৃতীয়দিনের মতো চলছে ট্রাক ধর্মঘট, ধান বেচাকেনা বন্ধ

  • সমগ্র বাংলা
  • ০৮ আগস্ট, ২০২২ ১৮:৪৮:২২

ছবিঃ সিএনআই

হাসান জাবেদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়াঃ জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে টানা তৃতীয়দিনের মতো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে ট্রাক ধর্মঘট চলছে। এতে পরিবহন সংকটে আশুগঞ্জ মোকামে ধান বেচাকেনা বন্ধ হয়ে গেছে।

গত শনিবার থেকে ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে পূর্বাঞ্চলের সবচেয়ে বড় এ মোকামে ধর্মঘট পালন করছেন ট্রাক মালিকরা। সোমবার (৮ আগস্ট) পর্যন্ত নিজেদের দাবিতে অনড় রয়েছেন তারা। এতে করে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন মোকামের প্রায় এক হাজার শ্রমিক।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সম্প্রতি ভারত থেকে চাল আমদানির ফলে আশুগঞ্জ ধানের মোকামে বেচাকেনা কমেছে প্রায় ৩০ শতাংশ। এরপর জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি মোকামে নতুন সংকট তৈরি করেছে। লোকসানের কারণ দেখিয়ে মোকাম থেকে ধান পরিবহন বন্ধ করে দিয়েছেন ট্রাক মালিকরা। প্রতি বস্তা ধান পরিবহনে আরও তিন টাকা ৬৫ পয়সা থেকে ছয় টাকা ৯০ পয়সা পর্যন্ত বাড়ানোর দাবিতে ধর্মঘট করছেন তারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, ধর্মঘটের কারণে ধান পরিবহন বন্ধ থাকায় মোকামে বেচাকেনা বন্ধ রয়েছে। এতে করে দূর-দূরান্ত থেকে ধান নিয়ে আসা প্রায় দুইশতাধিক নৌকা আটকে আছে মেঘনা নদীর তীরের এই মোকামে। ধান নিয়ে আসা ব্যাপারীরা যেমন দুর্ভোগে পড়েছেন, তেমনি বেকার হয়ে পড়েছেন মোকামে খেটে খাওয়া শ্রমিকরা।

আশুগঞ্জ উপজেলা ট্রাক মালিক সমিতির জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি আশরাফ আলী জানান, বর্তমানে যে ট্রাক ভাড়া আছে তাতে এমনিতেই আমাদের লোকসান দিতে হয়। এখন জ্বালানি তেলের দর যে হারে বেড়েছে, তাতে ট্রাক চালানো দায় হয়ে পড়েছে। ট্রাক ভাড়া না বাড়ানো পর্যন্ত আমাদের ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে।
তবে মোকামের ধান-চাল ব্যবসায়ীদের দাবি, ট্রাক মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করেও কোনো সমঝোতা করা যায়নি। ট্রাক মালিকরা যে হারে ভাড়া দাবি করছেন, সেই অনুযায়ী ভাড়া বাড়ালে প্রভাব পড়বে চালের বাজারে। তখন চালের দাম অনেক বেড়ে যাবে।

আশুগঞ্জ উপজেলা অটোরাইসমিল মালিক সমিতির সদস্য হাসান ইমরান বলেন, ট্রাক মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি। কিন্তু ট্রাকের ভাড়া বাড়ালে এর প্রভাব পড়বে চালের বাজারে। কারণ পরিবহন খরচ বাড়লে ধানের দাম বেড়ে যাবে। তখন চালের বাজারে নতুন সংকট তৈরি হবে।

মেঘনা নদীর তীরে অবস্থিত আশুগঞ্জ ধানের মোকামে মৌসুমে দৈনিক অন্তত এক লাখ মণ ধান বেচাকেনা হয়। মূলত আশুগঞ্জের এ মোকামই জেলার আড়াইশো চালকলে ধানের যোগান দেয়। মোকামটিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছাড়াও কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, সিলেট, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের হাওর এলাকায় উৎপাদিত ধান আসে। এই উপজেলার চালকলগুলোতে উৎপাদিত চাল সরবরাহ হয় ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটের বিভিন্ন জেলায়। বর্তমানে এই মোকামে বিআর-২৯ ধানের মণ ১০৮০ থেকে ১১০০ টাকা। আর মোটা ধান বিক্রি হচ্ছে ৯১০-৯২০ টাকা মণ।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo