• সমগ্র বাংলা

চাঁদে সাঈদী দর্শন:নাশকতা মামলার আসামি মাদ্রাসায় সভাপতি

  • সমগ্র বাংলা
  • ০৩ জুলাই, ২০২২ ২৩:১১:৩১

ফাইল ছবি

বগুড়া প্রতিনিধিঃ বগুড়ার নন্দীগ্রামে যুদ্ধাপরাধে দন্ডিত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে চাঁদে দেখার গুজব ছড়িয়ে নাশকতা, থানায় অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুরের মামলাসহ একাধিক মামলার আসামী ফজলে রাব্বী তোহা কে বানানো হয়েছে উপজেলার নুন্দহ ফাযিল মাদ্রাসার এডহক কমিটির সভাপতি। যা নিয়ে এখন বগুড়ায় তুমুল বিতর্ক ও সমালোচনার ঝড় বইছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নাশকতা মামলার আসামী গভর্নিং বডির সভাপতি হয় কিভাবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন উপজেলার অনেকেই!

জানা যায়, গত ২৮ জুন ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোঃ রেজাউল হক স্বাক্ষরিত নথির মাধ্যমে নন্দীগ্রামের নুন্দহ ফাযিল মাদ্রাসার এডহক কমিটির সভাপতি হিসেবে জেলা বিএনপির সাবেক ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মো: তোহা আহমাদ ওরফে ফজলে রাব্বী তোহা পিতা— মোঃ ময়েজ উদ্দিন আহমাদ কে মনোনয়ন দেয়া হয়। আর এই খবর নন্দীগ্রামসহ বগুড়ার চারিদিকে ছড়িয়ে গেলে তা নিয়ে জনমনে বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। 

এ প্রসঙ্গে নন্দীগ্রাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল আশরাফ জিন্নাহ এর সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি জানান, একজন নাশকতা ও ভাংচুর মামলার আসামী মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সভাপতি হয়েছে এ বিষয়ে তিনি ব্যক্তিগতভাবে অত্যন্ত ব্যথিত। তবে তার প্রতিবাদের কোন ভাষা নেই মর্মে দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ কোনকিছু যাচাই বাছাই না করে সাঈদীকে চাঁদে দেখার গুজব ছড়িয়ে যারা অসহায়দের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছিল, থানায় অগ্নিসংযোগ করেছিল তারা এমন পদে কিভাবে আসে? এর ব্যর্থতা জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগসহ সংশ্লিষ্ট সকলের যা সংশোধন হওয়া প্রয়োজন। 

নাশকতা মামলাসহ একাধিক মামলার আসামী তোহাকে তাদের মাদ্রাসার এডহক কমিটির সভাপতি করা প্রসঙ্গে নুন্দহ ফাযিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোস্তাফিজার রহমানের সাথে কথা বললে বিরক্তির কণ্ঠে তিনি জানান, একজন ব্যক্তির নামে একাধিক মামলা থাকতেই পারে কিন্তু মামলার বিচারে তিনি দোষী প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত সে আসামী হয়না। এই জিনিসটা নিয়ে আপনারা সাংবাদিকরা এত বাড়াবাড়ি করছেন কেন? পরবর্তীতে আর কোন প্রশ্নের উত্তরই তার থেকে পাওয়া যায়নি।

এদিকে বগুড়া জেলা পুলিশ ও আদালতের বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ফজলে রাব্বী তোহার বিরুদ্ধে বর্তমানে সন্ত্রাস বিরোধী আইন, বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলাসহ হত্যা চেষ্টা, ভাংচুর, নাশকতাসহ একাধিক মামলা বিচারাধীন রয়েছে। নন্দীগ্রাম থানা সূত্রে জানা যায়, সাইদীর ফাঁসির রায়ের কয়েকদিন পর ২০১৩ সালের ৩ মার্চ চাঁদে সাইদীকে দেখার গুজবে বগুড়ার নন্দীগ্রামে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও অবরোধসহ ব্যাপক তাণ্ডব চালানো হয়। ওই সময় একটি গোষ্ঠী উপজেলা পরিষদসহ ১৯টি সরকারি অফিসে অগ্নিসংযোগ করে এবং বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়। এ ঘটনায় চারটি মামলা হয়। যে মামলায় অন্যতম আসামী হলেন ফজলে রাব্বী তোহা।

এদিকে রবিবার সন্ধ্যায় মুঠোফোনে তোহার সাথে উক্ত প্রসঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার মুঠোফোন অনেকবার ব্যস্ত এবং শেষে বন্ধ পাওয়া যায়। যার দরুণ তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।  

সার্বিক প্রসঙ্গে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো: রেজাউল হকের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি জানান, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ উক্ত এডহক কমিটি গঠনের জন্যে সভাপতি হিসেবে তোহার নাম প্রস্তাব করেছিলেন। প্রস্তাবকৃত ব্যক্তি আসামী কি না এটি তো উক্ত মাদ্রাসার অধ্যক্ষই ভাল বলতে পারবেন। তবে তাদের কাছে কেউ যদি উপযুক্ত প্রমাণসহ লিখিত অভিযোগ করেন তাহলে তারা অবশ্যই এই বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিবেন। তিনি বলেন যেহেতু মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এই নাম প্রস্তাব করেন তাই তারা প্রাথমিকভাবে এটি জানতে পারেননি। তবে তদন্তে উক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ পেলে অবশ্যই এডহক কমিটির সভাপতি পরিবর্তন করা হবে।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo