• অপরাধ ও দুর্নীতি
  • লিড নিউজ

২৫ বছর আত্মগোপনে ছিলেন আলবদর কমান্ডার আমিনুল

  • অপরাধ ও দুর্নীতি
  • লিড নিউজ
  • ০৩ জুলাই, ২০২২ ১৩:৪১:২৫

ছবিঃ সিএনআই

নিউজ ডেস্কঃ যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কেএম আমিনুল হক ওরফে রজব আলীকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

গ্রেপ্তার আমিনুল ১৯৮২ সালে জেল থেকে বের হয়ে মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে ও বিভিন্ন সময়ে বেশ কয়েকবার পাকিস্তান গমন করে। ১৯৯৭ সালে ঢাকায় চলে আসেন। ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ দায়েরের পর তিনি আত্মগোপনে যান।

তিনি রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন স্থানে দীর্ঘদিন বাসা পরিবর্তনের মাধ্যমে আত্মগোপনে ছিলেন। সর্বশেষ ২৫ বছর পর শনিবার (২ জুলাই) রাতে রাজধানীর কলাবাগান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

রোববার (৩ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ২০১৪ সালের ৫ নভেম্বর কে এম আমিনুল হকের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, গণহত্যা, অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও লুটপাটসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের সাতটি অভিযোগ আনা হয়।

২০১৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর এসব অভিযোগের তদন্ত শেষে তদন্ত সংস্থা তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। পরে ২০১৬ সালের ১৮ মে ট্রাইব্যুনাল আমিনুল হকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। গত ২০১৮ সালের ৫ নভেম্বর কে এম আমিনুল হককে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। আগে থেকেই পলাতক মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত এ আসামিকে গ্রেপ্তারে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায় র‌্যাব।

শনিবার (২ জুলাই) দিবাগত রাতে র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-২ এর একটি দল রাজধানীর কলাবাগান এলাকায় অভিযান চালিয়ে কে এম আমিনুল হক ওরফে রজব আলীকে (৬৯) গ্রেপ্তার করে। তিনি কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামের মৃত কে এইচ এম এ গনির ছেলে।

গ্রেপ্তার আমিনুলের ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাবিরোধী ভূমিকার ফিরিস্তি তুলে ধরে কমান্ডার মঈন বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের বিপক্ষে সরাসরি অবস্থান নিয়ে কিশোরগঞ্জ, ভৈরব, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জ এলাকায় বাংলাদেশের নিরীহ মুক্তিকামী মানুষকে হত্যাসহ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর হিসেবে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত গণহত্যা, নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধে অংশ নেন।

আত্মগোপনে থাকাকালে তিনি সাধারণত জনসমাগম, বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান ছাড়াও তার ব্যক্তিগত পরিচয় প্রকাশ পায় এমন স্থান এড়িয়ে চলেন।

গ্রেপ্তার আমিনুল ‘আমি আলবদর বলছি’ ও ‘দুই পলাশী দুই মীরজাফর’ নামে দুটি বই প্রকাশ করেন। যেখানে তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ১৯৭৫ সালের শোকাবহ ১৫ আগস্টের দিনসহ সামগ্রিক বিষয়গুলো নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করেন। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের আত্মস্বীকৃতি হিসেবে নিজেকে ‘আলবদর কমান্ডার’ দাবি করেন। ২০১৪ সালে তার প্রকাশিত ‘দুই পলাশী দুই মীরজাফর’ বইটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সরকার এবং তার বিরুদ্ধে রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানায় একটি মামলা হয়।

এক প্রশ্নের জবাবে র‌্যাব মুখপাত্র কমান্ডার মঈন বলেন, আমরা বাংলাদেশের রাজনৈতিক কোনো দলের সঙ্গে তার যোগাযোগের তথ্য পাইনি। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এর আগে গত ২ জুন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত পলাতক আসামি নজরুল ইসলামকে ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo