• প্রশাসন

মাস্ক নেই তবে আছে হাজারো অজুহাত

  • প্রশাসন
  • ৩০ জুন, ২০২২ ২১:৫০:০৯

ছবিঃ সিএনআই

সঞ্জু রায়, বগুড়া: বগুড়ায় করোনা সংক্রমিত হয়ে গত ২৪ ঘন্টায় একজনের মৃত্যু হয়েছে যা প্রায় ৪ মাস পর করোনায় কোন প্রাণহানি। শুধু তাই নয় একই সময়ে জেলায় আরো নতুন ৬ জনের দেহে কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে। করোনায় প্রাণ হারানো ব্যক্তি হলেন শিবগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা ৭৫ বছর বয়সী মমতাজ উদ্দিন যিনি বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। এদিকে নতুন করে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে মাঠে নেমেছে বগুড়া জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালত। তবে শহরে মাস্ক ব্যবহারকারীর থেকে অজুহাত প্রদানকারী সাধারণ মানুষের সংখ্যায় বেশি চোখে পড়ে ভ্রাম্যমান আদালতে। 

বৃহস্পতিবার সকালে বগুড়া শহরের সাতমাথা, ইয়াকুবিয়া মোড় ও জলেশ্বরীতলা এলাকাসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সাধারণ মানুষের মাস্কের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিতে অভিযান পরিচালনা করেন বগুড়া জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালত। এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট জান্নাতুল নাইমের নেতৃত্বাধীন আদালতে কাউকে জরিমানা করা না হলেও সাধারণ পথচারী বিভিন্ন বয়সের মানুষকে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে মাস্ক পড়ার বিষয়ে সচেতন করা হয়। অভিযানে মাস্ক বিহীন মানুষদের সচেতন করার পাশাপাশি প্রত্যেককে জেলা প্রশাসনের পক্ষে প্রদান করা হয়েছে মাস্ক।

অভিযানে মাস্ক ছাড়া শহরে ঘোরাফেরা করা একাধিক মানুষের সাথে কথা বললে তারা জানান, তাদের করোনার টিকা দেওয়া আছে এবং দীর্ঘদিন তেমন করোনার প্রভাব না থাকায় তারা মাস্ক পরেননি। তবে যেহেতু আবার করোনা বাড়ছে তাই তারা আবারো মাস্ক পরবেন। অভিযানে হঠাৎ জরিমানা না করে তাদের মাস্ক দিয়ে তার সঠিক ব্যবহার নিশ্চিতে সচেতন করায় সাধারণ মানুষের অধিকাংশ জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালতের সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান।

আবার বগুড়া শহরের অনেকেই ধরে নিয়েছে যে করোনা বলে আর কিছু নেই। তাইতো মাস্ক ছাড়া স্বাস্থ্যবিধির কোন তোয়াক্কা না করেই হাজারো মানুষ শহরে বেশ সাবলীল ভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে যা চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সুশীল সমাজের। বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালতে এই গোষ্ঠীর মানুষদেরই নিজ নিজ অবস্থান থেকে কঠোরভাবে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। এদিকে গত বুধবারেও বগুড়া জেলা প্রশাসক মো: জিয়াউল হকের সার্বিক নির্দেশনায় এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এর নেতৃত্বে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অভিযান পরিচালনা করা হয়। 

বুধবার ও বৃহস্পতিবার বগুড়া শহরে পরিচালিত জেলা প্রশাসনের এই ভ্রাম্যমান আদালতের নেতৃত্বে থাকা এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট জান্নাতুল নাঈমের সাথে কথা বললে তিনি জানান, শহরে অধিকাংশ মানুষ মাস্ক ছাড়া চলাচল করছে। অনেকেই মাস্ক ছেড়ে এসেছেন কিংবা ভুল করে পড়েননি এ ধরনের নানারকম অজুহাত তুলে ধরেছেন। তবে সচেতন জনগণের একটি বড় অংশ মাস্ক কে নিত্যসঙ্গী করে নিয়েছেন কারণ শুধু এটি করোনাভাইরাস নয় ধুলা-বালি এবং এলার্জি জনিত নানা সমস্যা থেকেও তাদের মুক্তি দিয়েছে মন্তব্য করেছেন তারা। ম্যাজিস্ট্রেট নাঈম আরো বলেন,  মানুষের মধ্যে মাস্ক পরিধান নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে জেলা প্রশাসন কাজ শুরু করেছে। এটি অব্যাহত থাকবে। সবাইকে আরও বেশি সতর্ক হতে হবে। বাড়ির বাইরে বের হলে অবশ্যই মাস্ক পরিধান করতে হবে। 

উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক কালে কোভিড-১৯ আক্রান্তের হার সারাদেশে দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ জনগণের মধ্যে মাস্ক পরিধান ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের লক্ষ্যে কোভিড-১৯ জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি মাস্ক পরা, জনসমাগম যথাসম্ভব বর্জন, ধর্মীয় প্রার্থনার স্থান সমূহে সামাজিক দূরত্ব পালন ও মাস্ক পরিধান, করোনা উপসর্গ থাকলে দ্রুত টেস্ট করা এবং সর্বোপরি কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি পালনসহ ছয় দফা নির্দেশনা প্রদান করেন যা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান স্বাক্ষরিত এক আদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়নের জন্যে সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়। 

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo