• প্রশাসন
  • লিড নিউজ

পানি বন্দি থেকে কৃষকের জমি ও ঘরবাড়ি বাঁচালেন তেঁতুলিয়ার ইউএনও

  • প্রশাসন
  • লিড নিউজ
  • ২৯ জুন, ২০২২ ১৭:০২:২৩

ছবিঃ সিএনআই

এসকে দোয়েল,তেঁতুলিয়া: পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় রিসোর্টের ভেতর কালভার্ট নির্মাণ করে পানির গতিপথ বন্ধ করে দিয়েছিলেন ভিলেজ এগ্রোটেক নামের এক কোম্পানী। এ কারণে মাগুরমারী এলাকায় দুটি গ্রামের ঘর-বাড়ি ও কৃষি জমি জলাবদ্ধতার দূর্ভোগ তৈরি হয় দুটি গ্রামের প্রায় পাঁচ হাজার মানুষের।

স্থানীয়দের কাছ থেকে মুঠোফোনে খবর পেয়ে দেবনগর ইউনিয়নের দফাদার পাড়া ও মাগুরমারী চৌরাস্তা গ্রামে ছুটে গিয়ে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষের বাড়ি ও কৃষিজমির পানি বন্দির দশা থেকে সাময়িক মুক্তি দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সোহাগ চন্দ্র সাহা।

মঙ্গলবার বিকালে জলবদ্ধতার কারণে কৃষকের কয়েকশ একর ফসলি জমি নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা করে পুণরায় পানি নিষ্কাশনের গতিপথ অবমুক্ত করে দেন তিনি।

জানা যায়, দেবনগড় ইউনিয়নের দফাদার পাড়া ও  মাগুরমারী চৌরাস্তা এলাকায় ভিলেজ এগ্রোটেক নামে একটি কোম্পানি তাদের এড়িয়ার ভিতরে পানি নিষ্কাশনের স্বাভাবিক গতিপথ বন্ধ করে নিজস্ব কালভার্ট নির্মাণ করেন। এতে করে পানি নিষ্কাশন হতে না পারায় ওই এলাকার কয়েক একর কৃষি জমি বর্ষার পানিতে ডুবে যায়। আর বসতবাড়িতে পানি উঠতে শুরু করে। বিষয়টি কোম্পানির কর্তৃপক্ষকে জানালেও কোন পদক্ষেপ না নিলে পরে তারা মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহাগ চন্দ্র সাহাকে জানায়।

খবর পেয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান ছলেমান আলীকে সাথে নিয়ে দফাদার পাড়া গ্রামে অবস্থিত ভিলেজ এগ্রোটেকে রির্সোট পরিদর্শন করেন ইউএনও। পরে পানি নিষ্কাশনের কারণে ফসলের ক্ষতি ও বাড়িঘর ডুবে যাওয়ার আশংকা দেখে সাথে সাথে পানির স্বাভাবিক গতিপথ ফিরিয়ে দিতে কতৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। অপরিকল্পিত ভাবে নির্মিত কালভার্ট ভেঙে দিয়ে পানি নিষ্কাশনের স্বাভাবিক গতিপথের ব্যবস্থা করেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রায় পাঁচ বছর ধরে ওই দুই গ্রামের মানুষ বর্ষাকালে পানি বন্দি হয়ে থাকতে হচ্ছে।  কারণ হিসাবে ধারণা করা হতো ভিলেজ এগ্রোটেক লিমিটেডের নিজস্ব কালভার্ট। বর্ষার পানি উত্তর দিক থেকে প্রবাহিত হয়ে দক্ষিনের দিকে যেতো কিন্তু ভিলেজ এগ্রোটেে মুল ফটকের পার্শ্ববর্তী রাস্তার ব্রিজের সামনে একাধিক ছোট ছোট কালভাট নির্মাণ করে পানির স্বাভাবিক গতিপথকে বাধাগ্রস্ত করেছে। ফলে প্রতি বর্ষা মৌসুমে দুর্ভোগ পোহাতে হয় সাধারণ মানুষকে।

এলাকার বাসিন্দা আসাদুজ্জামান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কয়েকটি গ্রামের পানি নিষ্কাশনের যে ড্রেন ও কার্লভাট ছিল তা বন্ধ করে অপরিকল্পিত ভাবে ভিলেজ এগ্রোটেক  কার্লভাট নির্মাণ করে। এতে আশপাশের কৃষি ও ঘরবাড়ি ডুবে যায়। পরে ইউএনও মহাদয় বৃষ্টিতে ভিজে দাড়িয়ে থেকে সমস্যাটি সমাধান করে দেয়। এতে রক্ষা পেল আমাদের ফসলি জমি।

একই কথা বলে মাগুরমারি এলাকার বাসিন্দা সাদেকুল ইসলাম,তিনি বলেন, দুইটি গ্রামের প্রায় শতাধিক বাড়িতে পানি উঠেছে শুধু কোম্পানির কারণে। কয়েক দিনের বৃষ্টিতে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় গ্রামের রাস্তাঘাট পানি দিয়ে ভরাট হয়ে গেছে। পাশাপাশি ফসলের জমি তলিয়ে গেছে। আগাম ধানের বীজ ও চারাসহ ডুবে গেছে এতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সন্ধ্যার পর থেকে পানি কমতে শুরু করেছে।

দেবনগড় ইউপি চেয়ারম্যান ছলেমান আলী বলেন, যখন দেখলাম হাজার হাজার মানুষ পানি বন্দি তখনি আমি ইউএনও মহাদয়কে অবগত করি। পরে তিনি আসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে দেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহাগ চন্দ্র সাহা বলেন, আমরা দেখি এগ্রোটেক লিমিটেড এর কিছু স্থাপনার কারনে পানির স্বাভাবিক গতিপথ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। আমরা কোম্পানির একটি ব্রিজ ভেঙ্গে দিয়েছি, এখন পানির স্বাভাবিক প্রবাহ চলছে।  আমরা আগামীতে কোম্পানির ও স্থানীয়দের সাথে আলোচনা করে স্থায়ী সমাধানের দিকে যাবো।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo