• আন্তর্জাতিক
  • লিড নিউজ

পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় বুড়ো আঙুল রাশিয়ার

  • আন্তর্জাতিক
  • লিড নিউজ
  • ২০ জুন, ২০২২ ১৬:০৩:২৯

ছবিঃ সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ বেইজিংয়ের কাছে বিশেষ ছাড়ে অপরিশোধিত তেল বিক্রির মাধ্যমে চীনে বৃহত্তম তেল সরবরাহকারী হয়ে উঠেছে রাশিয়া। ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে পশ্চিমাদের উপর্যুপরি নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অতীতের তুলনায় দ্বিপাক্ষিক তেল বাণিজ্য বৃদ্ধি করেছে রাশিয়া এবং চীন।

এক বছর আগের তুলনায় চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত চীনে রাশিয়ার তেলের আমদানি ৫৫ শতাংশ বেড়েছে। এর ফলে চীনের বৃহত্তম তেল সরবরাহকারীর তকমা হারিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের তেল জায়ান্ট সৌদি আরব।

অর্থনীতির ধীরগতি এবং কোভিড বিধি-নিষেধে তেলের চাহিদা কমে যাওয়া সত্ত্বেও রাশিয়ার তেল ক্রয় ব্যাপক বৃদ্ধি করেছে চীন। গত ফেব্রুয়ারিতে প্রতিবেশী এ দুই দেশ ‘তাদের বন্ধুত্বের কোনও সীমা নেই’ বলে ঘোষণা দেয়।

চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত পরিশোধন জায়ান্ট প্রতিষ্ঠান সিনোপেক এবং রাষ্ট্র-পরিচালিত ঝেংহুয়া অয়েলসহ চীনা বিভিন্ন কোম্পানি সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেলের ক্রয় বাড়িয়েছে।

ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে নিষেধাজ্ঞার কারণে ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতারা মুখ ফিরিয়ে নেওয়ায় রাশিয়া ব্যাপক ছাড়ের ঘোষণা দেয়। মস্কোর এই ঘোষণার পর অভ্যন্তরীণ বাজারে বিশেষ চাহিদা না থাকা সত্ত্বেও রাশিয়ার তেল আগের তুলনায় বেশি পরিমাণে আমদানি করছে চীন।

চীনের জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব কাস্টমসের তথ্য অনুযায়ী, ইস্ট সাইবেরিয়া পেসিফিক ওশান পাইপলাইন এবং সমুদ্রপথে পরিবহনের মাধ্যমে গত মাসে রাশিয়া থেকে চীন মোট প্রায় ৮০ লাখ ৪২ হাজার মেট্রিক টন তেল আমদানি করেছে। একই মাসে চীনে সৌদি আরবের তেল রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৭০ লাখ ৮২ হাজার মেট্রিক টন। এর ফলে চীনে অপরিশোধিত তেলের বৃহত্তম সরবরাহকারীর জায়গা হারিয়েছে সৌদি আরব।

গত মার্চে যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য জানায়, তারা রাশিয়ান তেল নিষিদ্ধ করবে। অন্যদিকে, রাশিয়ার গ্যাসের ওপর নির্ভরতার অবসানে কাজ করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ইউক্রেন আগ্রাসনের জেরে রাশিয়ার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক প্রতিক্রিয়া জোরদার করেছে পশ্চিমা বিশ্ব। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, রাশিয়ার অর্থনীতির প্রধান ধমনী লক্ষ্য করে এসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

রাশিয়ার রাজস্ব আয়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উৎস জ্বালানি রপ্তানি। তবে রাশিয়ার জ্বালানির ওপর নিষেধাজ্ঞায় পশ্চিমা ভোক্তারাই বেশি ভুগছে।

গত সপ্তাহে থিঙ্ক ট্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিনের (সিআরইএ) এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর প্রথম ১০০ দিনে জীবাশ্ম জ্বালানি রপ্তানি থেকে রাশিয়ার প্রায় ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রাজস্ব আয় হয়েছে। যদিও গত মে মাসে এই আয়ে কিছুটা ভাটা পড়েছে। আর এই আমদানির প্রায় ৬১ শতাংশই করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন; যার পরিমাণ প্রায় ৫৯ বিলিয়ন ডলার।  

তবে মোটাদাগে রাশিয়ার তেল এবং গ্যাস রপ্তানি কমছে। মস্কোর জ্বালানি বিক্রি থেকে রাজস্ব আয় গত মার্চের একদিনে সর্বোচ্চ ১ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় বর্তমানে কমে গেছে। কিন্তু রাজস্ব আয়ের এই পরিমাণ এখনও প্রথম ১০০ দিনের ইউক্রেন যুদ্ধের ব্যয়ের তুলনায় বেশি। ইউক্রেন আক্রমণে রাশিয়া প্রতিদিন প্রায় ৮৭৬ মিলিয়ন ডলার খরচ করছে বলে ধারণা করছে সিআরইএ।

সোমবারের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত মাসে ইরান থেকে চীনের অপরিশোধিত তেলের আমদানির পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৬০ হাজার টন। গত ডিসেম্বরের পর এটি চীনে তৃতীয় চালান ছিল ইরানের। তেহরানের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ইরানি তেল ক্রয় অব্যাহত রেখেছে চীন।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo