• সমগ্র বাংলা

আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে ফেরি সংকট, যাত্রী ও যানবাহন শ্রমিকদের ভোগান্তি

  • সমগ্র বাংলা
  • ২১ মে, ২০২২ ১৪:১৪:১৩

ছবিঃ সিএনআই

শাহাজাহান বিশ্বাস, মানিকগঞ্জঃ নদীতে প্রবল স্রোত ও ফেরি সংকটের কারণে চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটের ফেরি সার্ভিস। ফলে দুই পারেই ফেরি পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে শত শত যানবাহন।

শনিবার সকালে আরিচা ফেরি ঘাট এলাকা থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বোয়ালী ডাক্তারখানা পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার এলাকাজুরে পণ্যবাহী ট্রকের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। দুর্ভোগে পড়েছেন এসব যানবাহনের শ্রমিকরা। কর্তৃপক্ষ দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে যে কোন সময় উক্ত নৌরুটের ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশংকা করছেন অনেকেই। 

বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা গেছে, আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে ফেরি সার্ভিস সচল রাখতে  ২টি ছোট এবং ১টি ডাম্ব মোট ৩টি ফেরি রয়েছে। এর মধ্যে ডাম্ব ফেরি রাণীক্ষেত এবং ছোট ফেরি কপোতি অনেক দিনের পুরানো হওয়ায় এমনিতেই ১৪ কিলোমিটার নৌপথ যাতায়াতে ৫/৬ ঘন্টা করে সময় লাগে। নদীতে প্রবল স্রোতের বিপরীতেও চলতে পারে না এ দুটি ফেরি। ইঞ্জিন সমস্যার কারণে  মাঝে-মধ্যে মেরামতে থাকছে এসব ফেরি। ইঞ্জিন সমস্যার কারণে শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে মেরামতের জন্য আরিচা ঘাটে নোঙর করে রাখা হয়েছে।

নদীতে পানি বৃদ্ধির কারণে কাজিরহাটে দু'টি ঘাটের মধ্যে একটি ঘাট সচল অপর একটি ঘাট বন্ধ রয়েছে।  ঘাট সংকটের কারণে ডাম্ব ফেরি রাণীক্ষেত চালানে সম্ভব হচ্ছে না। কাজিরহাট যে ঘাটটি চালু রয়েছে  ওই ঘাটের কাছাকাছি লঞ্চ ঘাট হওয়ায় অনেক লম্বা আকৃতির ডাম্ব ডাম্ব ফেরি ওই ঘাটে ভীড়ানো সম্ভব হচ্ছে না।  ভীড়াতে গেলে দুর্ঘটনার আশংকা রয়েছে। বিধায় এ ফেরিটি সার্ভিসে না রেখে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে  আরিচা ঘাটে নোঙর করে রাখা হয়েছে। কদম নামের একটি মাত্র ফেরি দিয়ে আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটের ফেরি সার্ভিস চালু রাখ  হয়েছে। ফলে এ নৌরটে ফেরি সংকট চরম আকার ধারণ করছে।

এদিকে নদীতে অব্যাহত পানি বৃদ্ধির করণে ফেরিগুলোর  স্রোতের বিপরীতে চলতে সময় একটু বেশী লাগছে। আগে একটি মাত্র দ্রুতগামী কদম ফেরি যাতায়াতে সময় লাগতো তিন ঘন্টা এখন লাগছে চার ঘন্টা। এছাড়া রাণীক্ষেত ও কপোতির সময় লাগছে ৬/৭ ঘন্টা করে। প্রতিটি ফেরিতেই এক ঘন্টা করে সময় বেশী লাগছে। এতে যানবাহনগুলোকে ঘাটে এসে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে এক দিন পর ফেরি পারাপার হতে হচ্ছে।  এতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে যানবাহন শ্রমিকদেরকে। এ পরিস্থিতিতে ফেরি বাড়নো ছাড়া কোন উপায় নেই। 

দেশের  উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলগামী  মানুষের রাজধানী ঢাকার সাথে সহজ যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম  এবং বঙ্গবন্ধু এবং ঢাকা-টাঙ্গাইল রুটের  বিকল্প রুট হতে পারে আরিচা-কাজিরহাট নৌরুট ।বিশেষ করে পাবনা, ইশ্বরদীর মানুষ এমনিতেই এখান দিয়ে যাতায়াত করে থাকে।অনেক সময় বঙ্গবন্ধু সেতু ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানজট হলে ওই রুটের গাড়িগুলো আরিচা-কাজিরহাট নৌরুট ব্যবহার করতে দেখা গেছে।যানজট এড়াতে এবং সময় ও অর্থ সাশ্রয় হওয়াতে অনেকেই এই রুট ব্যবহার করছে বলে জানা গেছে।

ট্রাক চালক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, বঙ্গবন্ধু সেতুতে ওজনের ঝামেলাসহ নানা ধরনের ঝক্কি-ঝামেলা  এবং যানজটের বিড়ম্বনার কারণে অরিচা-কাজিরহাট নৌরুটের ফেরি সার্ভিস  চালু হওয়ার পর থেকে আমি এখান দিয়েই চলাচল করছি। এতে একদিকে ফেরিতে বিশ্রাম নেওয়া যায় অপর দিকে সহজে গন্তব্যে পৌছানো যায়। কিন্তুু  ফেরি সংকটের কারণে অনেকেই এরুটে  আসতে চাচ্ছেন না। প্রয়োজনীয় সংখ্যক ফেরি থাকলে যাত্রী ও যানবাহনের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি জানান। 

ট্রাক শ্রমিক কিয়াম উদ্দিন বলেন, পাটুরিয়া ঘাটে যানজট হলে বিকল্প রুট হিসেবে আমরা  এটি ব্যবহার করি। কিন্তুু কয়েক দিন ধরে নদীতে পানি বৃদ্ধির করণে ফেরি চলাচলে অসুবিধা হচ্ছে। আবার ফেরি সংকটতো রয়েছেই । ফলে আগের দিন আরিচা ঘাটে এসে পরের দিন  ফেরি পার হতে  হচ্ছে। এতে আমাদের অনেক কষ্ট হচ্ছে। ভোগান্তি এড়াতে এ রুটে এসে আবার সেই ভোগান্তিতেই পড়তে হচ্ছে। পর্যাপ্ত ফেরি থাকলে তাদের ভোগান্তি হতো না বলে তিনি জানান।

বিআইডব্লিউটিসি’র আরিচা ঘাটের ম্যানেজার আবু আব্দুল্লাহ  বলেন, ঘাট সম্যার কারণে ডাম্ব ফেরি চালানো সম্ভব হচ্ছে না। ইঞ্জিন সমস্যার কারণে কপোতি ফেরি মেরামতে রয়েছে। তিনটি ফেরির মধ্যে দুটি ফেরি বসা। আজ শনিবার (২১ মে) কদম নামের একটি মাত্র ফেরি দিয়ে আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটের  ফেরি সার্ভিস চালু রাখা হয়েছে। এছাড়া  বিগত কয়েকদিন ধরে নদীতে পানি বৃদ্ধিতে প্রবোল স্রোতের বিপরীতে ফেরিগুলো চলাচলে সময় একটু বেশী লাগছে বলে তিনি জানান।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo