• অর্থনীতি
  • লিড নিউজ

দোকান-গোডাউন-বাসায় তেল মজুত, উদ্ধার ২৬ হাজার লিটার

  • অর্থনীতি
  • লিড নিউজ
  • ১৩ মে, ২০২২ ১৬:১০:১০

ছবিঃ সংগৃহীত

নিউজ ডেস্কঃ দেশে ভোজ্যতেল নিয়ে কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছেন ব্যবসায়ীরা। অতিরিক্ত মুনাফার আশায় তেল মজুত করছেন। এ অবস্থায় মাঠে নেমেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। অভিযান চালিয়ে তেল জব্দসহ জরিমানাও করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার সারাদেশে চলেছে অভিযান। এসময় দোকান, গোডাউন, দোকান মালিকের বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমাণ তেল। পাঁচ জেলায় ২৬ হাজার লিটারের মতো তেল উদ্ধার করা হয়।

শিবচর: মাদারীপুরের শিবচরে অভিযান চালিয়ে দুই হাজার লিটার সয়াবিন তেল জব্দ করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। পরে সেই তেল ক্রেতাদের মাঝে ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করা হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে শিবচর পৌর বাজারে এই অভিযান চলে।

এসময় ‘শাকিল স্টোর’ নামে একটি দোকানের গোডাউন থেকে মজুত করা দুই হাজার ২০০ লিটার সয়াবিন তেল জব্দ করা হয়।

মাদারীপুর ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, অভিযানকালে গোডাউনে মজুত করা সিটি গ্রুপের সয়াবিন তেল পেয়েছি। ডিস্ট্রিবিউটর জানিয়েছেন এগুলো গত ৮ মে’র তেল। কিন্তু আমরা ঢাকা থেকে জানতে পেরেছি ৭শ’ ৬০ টাকার এই তেল সিটি গ্রুপ আরও আগে ছেড়েছে। পরে তেল মজুত রাখার অপরাধে তিনদিনের জন্য ওই দোকান বন্ধ করেছি।

jagonews24

সুনামগঞ্জ: এ জেলায় অভিযান চালিয়ে আট হাজার লিটার সয়াবিন তেল জব্দ করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। একই সঙ্গে তেল মজুত করায় ছয় প্রতিষ্ঠানকে এক লাখ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করে। দোয়ারাবাজার উপজেলার আমবাড়ি বাজারে চালানো হয় এ অভিযান।

অভিযানের সময় বাজারের ‘আলমগীর স্টোর’ থেকে দুই হাজার লিটার, ‘ফখরুল স্টোর’ থেকে দেড় হাজার লিটার, ‘সাগর নদী স্টোর’ থেকে ৫০০ লিটার, ‘অনকুল স্টোর’ থেকে দেড় হাজার লিটার, ‘দুর্গা ভান্ডার’ থেকে দুই হাজার লিটার ও ‘পিযুষ ট্রেডার্স’ থেকে ৫০০ লিটার তেল জব্দ করা হয়। পরে এই তেল বিক্রি করা হয় ন্যায্যমূল্যে।

সুনামগঞ্জ জেলা ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, বাজারে সয়াবিন তেলের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছিল। আমরা সেই তেল জব্দ করে নির্ধারিত দামে বিক্রি করেছি।

jagonews24

গাইবান্ধা: এ জেলায় অবৈধভাবে প্রায় ৭০০ লিটার সয়াবিন তেল মজুত করায় পাঁচ প্রতিষ্ঠানকে এক লাখ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। গাইবান্ধা শহরের পুরাতন বাজারে র‌্যাবের সহযোগিতায় এ অভিযান চালায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

এসময় খুচরা মূল্য ১৬৮ টাকা দরের প্রায় ৭০০ লিটার সয়াবিন তেল ওই প্রতিষ্ঠানগুলোতে মজুত অবস্থায় পাওয়া যায়। এ অপরাধে মেসার্স সমর সাহাকে ৫০ হাজার, মেসার্স শুভ স্টোরকে ৩০ হাজার, মেসার্স দুর্গা ভান্ডারকে ১০ হাজার, মেসার্স দীপ ভান্ডারকে ১০ হাজার ও মেসার্স মায়া স্টোরকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

গাইবান্ধা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুস সালাম বলেন, ডিসপ্লেতে প্রদর্শন না করে বোতলজাত সয়াবিন তেলগুলো মজুত করা অবস্থায় ছিল।

নওগাঁ: তিনটি গোডাউনে অভিযান চালিয়ে ৭৫৩ লিটার মজুত রাখা বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বোতলজাত সয়াবিন তেল জব্দ করে অধিদপ্তর। এসময় ওই তিন গোডাউনের মালিককে মোট ৬৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। শহরের গোস্তহাটি ও আটা পট্টির এলাকায় চালানো হয় এ অভিযান।

ভোক্তা অধিকারের নওগাঁ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শামীম হোসেন বলেন, আজাদ স্টোরের গোডাউন থেকে ৩০ লিটার, রনজিত পালের গোডাউন থেকে ২৫২ লিটার ও কিরন ট্রেডার্সের গোডাউন থেকে ৪৭১ লিটার সয়াবিন তেল জব্দ করা হয়।

jagonews24

তিনি আরও বলেন, আগের দামে কেনা এসব তেল বর্তমান বাজার দরে বিক্রির অপচেষ্টা করেছিলেন দোকানের মালিকরা। আমরা অভিযান চালিয়ে ওই তিন গোডাউন থেকে সব তেল জব্দ করেছি। তেল মজুদ রাখার অপরাধে আজাদ স্টোরের মালিক আবুল কালাম আজাদকে ১০ হাজার টাকা, রণজিৎ পাল স্টোরের মালিক রণজিৎ পালকে ২৫ হাজার টাকা ও কিরন ট্রেডার্সের মালিক সৈকত পালকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া জব্দ করা তেল উপস্থিত ভোক্তাদের মাঝে বোতলের গায়ের দামে বিক্রি করা হয়।

শেরপুর: সারাদেশের ন্যায় শেরপুরেও অভিযান চালিয়েছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এসময় জেলার বিভিন্ন দোকান, গোডাউন থেকে অবৈধভাবে মজুত করা ১৫ হাজার লিটার তেল জব্দ করা হয়।

এরমধ্যে শেরপুর সদরের গাজীরখামার বাজারের সাথী স্টোর নামে একটি খুচরা বিক্রেতার দুইটি গোডাউন ও বাসা থেকে পাঁচ হাজার লিটার, ঝিনাইগাতীর তিনানী বাজারের সততা স্টোর ও নাজমুল অ্যান্ড ব্রাদারস থেকে প্রায় চার হাজার লিটার, শ্রীবরদী পৌর এলাকার হাজী ট্রেডার্স থেকে এক হাজার লিটার, নালিতাবাড়ীর রাজনগর টেংরাখালি এলাকার দুই সহোদর ব্যবসায়ীর কাছ থেকে প্রায় পাঁচ হাজার লিটার ভোজ্যতেল জব্দ করা হয়। পরে এসব তেল ন্যায্য দামে খোলাবাজারে বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়। একই সঙ্গে এসব দোকান মালিককে জরিমানা করা হয় প্রায় দুই লাখ টাকা।

শেরপুর ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা রুবেল আহমেদ জানান, মজুত করা তেলের বোতলগুলোতে তিন মাসে আগের মূল্য লেখা রয়েছে। তবে মূল্যের সিল কৌশলে উঠিয়ে নতুন মূল্য নির্ধারণ করে প্রতি লিটার সয়াবিন ২০০-২১০ টাকায় বিক্রি করছেন দোকানীরা।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo